বালকবেলার স্মৃতিকথা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
আমার প্রথম ইস্কুল
‘কেউ যখন তোমাকে জিজ্ঞেস করবে কোন ক্লাসে পড়, তখন উত্তর দিবে ক্লাস-টু। আর যখন জানতে চাইবে কোন শ্রেণিতে পড়, তখন বলবে দ্বিতীয় শ্রেণী।’ বাবার এই কথাটা আমার সব সময় মনে থাকত। কেউ পড়াশোনার কথা জিজ্ঞেস করলেই ঠিক ঠিক বলে দিতাম, কোন ভুল হত না। বাবাকে এখানে বাবা-ই বল্লাম, যদিও চা বাগানে থাকাকালীন সময়ে আমরা যারা মুসলমান ছিলাম তারা বাবা বলাটা হিন্দুয়ানী মনে করতাম। তাই মাকে আম্মা ডাকতে হত। কিন্তু টিভি-সিনেমায় যখন দেখতাম সবাই মা-বাবা ডাকে তখন কেমন যেন লাগত। আমার প্রথম স্কুল ছিল হোসেনাবাদ বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। কেউ স্কুলের নাম জানতে চাইলে দাড়ি-কমাসহ বলে দিতাম। হোসেনাবাদ ছিল আমাদের পাশের চা বাগানের নাম। আর স্কুলটা ছিল সেখানে। তার পরের শব্দটা অর্থাৎ বেসরকারীর কোন অর্থ তখন জানতাম না। স্কুলের সবচেয়ে মজার জিনিস ছিল ঘণ্টার শব্দ! স্কুলে যারা বড় কাসে পড়তো, দেখতাম, তারাই শুধু ঘণ্টা বাজাত। তখন বড় ক্লাসের প্রতি আমার একটা আকর্ষণ তৈরী হয়। কখন বড় ক্লাসে উঠব, কখন ঘণ্টা বাজাব!
তবে, ঘণ্টার মধ্যে ছুটির সময় যে ঘণ্টাটা পড়ত, সেটাই ছিল বেশী প্রিয়। তবে, বিরতির সময় (প্রাইমারীতে বলতাম টিফিন আর হাইস্কুলে বলতাম বিরতি) খেলতে ভাল লাগতো। যখন পানির পিপাসায় পেত, তখন হাফ কিলোমিটার দৌড়ে গিয়ে টিউবওয়েলের পানি খেয়ে আসতাম। সবচেয়ে মজা হত বৃহঃস্পতিবারে। সেদিন স্কুলে গান, কুইজ, যেমন খুশি তেমন সাজো ইত্যাদি হত। আমার মনে আছে, একবার গোলাপ নামের বড় কাসের একটা ছেলে ’মা আমি বন্দি কারাগারে’ গানটা গেয়েছিল। আমার খুব ভাল লেগেছিল। সেই থেকে গোলাপকে দেখলেই আমার গায়ক হতে ইচ্ছে হত। যদিও আমার কখন তা হয়ে ওঠা হয় নি।
‘বিশুদ বারে হাফ, শুক্রবারে মাফ’! যে বৃহঃস্পতিবারে অনুষ্ঠান থাকতো না, আমরা চলে যেতাম চা বাগানের ভেতর আয়েলা (আমলকি) খেতে। আয়েলা খাওয়ার অন্য উদ্দেশ্য ছিল! আয়েলা খেয়ে তার পর পানি খেলে ভীষণ মিষ্টি লাগত। আমরা সবাই তাই করতাম। মনে আছে, একবার আয়েলা গাছের নিচে হরিণ দেখেছিলাম। ওটাই ছিল সরাসরি আমার দেখা প্রথম হরিণ! এই সুযোগটা হয়েছিল স্কুলের তিন দিকে চা বাগান এবং চা বাগানের গভীরে বাঁশ বাগান থাকার কারণে। দল বেঁধে ৬/৭ জন যেতাম। খুব মজা হত।
সময়ের স্রোতে ছিটকে গেছি সবাই। দিনাজপুরের রায়হান, নোয়াখালির জুয়েল, বরিশালের সেলিম, নন্দরাণীর নিপেন, হোসেনাবাদের ছন্দা কে কোথায় আছে জানি না।
সবাই দলছুট হয়ে গেছে। আর আমিও হয়ে গেছি অন্য কোন দলের একজন।
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?
স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?
সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী
বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=বেলা যে যায় চলে=
রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।
সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন