উহ...
-- কিরে কিভাবে পড়ালা?
আরে সেন্ডেলটা সিলিপ কেটে গেছে।
-- দেখতো কত খানি কেটেছে!
-- (চোখ বড় বড় করে) একটু হুস করে কাজ করা যায় না। বলেই জানাকে চেয়ারে বসিয়ে ওর রুমালটি দিয়ে কাঁটা জায়গায় চেপে ধরল সাফিন।
নাহ, অনেক খানি কেটেছে, রক্ত ঝরছে।
এক ঝাটাকায় ড্রয়ের থেকে ফার্স্ট এইড বক্সটা বের করলো সাফিন। তড়িঘড়ি করে রক্ত বন্ধ করার জেলটা ডলে দিলো পায়ে। আসতে আসতে কাঁটা জায়গার চারপাশ স্যাভলন দিয়ে পরিষ্কার করলো। ব্যেন্ডেজ করতে লাগলো আস্তে আস্তে সে।
... সাময়িকের জন্য পুরো ঘরে নিরবতা।
জানার কষ্ট হচ্ছে, বুঝতে পেয়ে ওর চোখের দিকে তাকাতে সাহস করছে না সাফিন।
খুব ইমোশনাল ছেলে সাফিন। কারো কষ্ট পাওয়া দেখলেই চোখে জল এসে যায়। আর জানা ত আপন মানুষ, ওর জীবন। ওকে কষ্ট পেতে দেখতে ওর সহ্য হয় কি করে!
... এই ত মাস খানেক হোল ওদের বিয়ে হয়েছে।
৬ বছরের প্রেম ছিলো ওদের, অনেক ঝড় ঝাঁপটা পেড়িয়ে, শেষে দুইজনের প্রবল আগ্রহ আর সবার সম্মতি ক্রমেই ফ্যামিলি গত ভাবে বিয়ে হয় ওদের। বেশ সুখেই কাটছে তাদের দিন গুলো, টোনাটুনির ছোট্ট সংসার।
কি যে মিল ওদের বলে বুঝানো যাবে না। না দেখে মোবাইলে পরিচয়, কিছু দিনের মাঝেই বন্ধুত্ব। প্রায় টানা ১ বছর কথা বলার পর সাফিন প্রথম বুঝতে পারে, সে জানাকে ভালোবেসে ফেলেছে... এখন আর পিছনে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নাই, যে কোন মূল্যে তাকে পেতে হবে।
কিন্তু জানাও সাথে সাথে সাড়া দেয়নি, বাবা না থাকায় কিছুটা ফ্যামিলির জন্য পিছু টান ছিলো, অনেক বাধা বিপত্তি ছিলো। আস্তে আস্তে সাফিনের ভালোবাসার জোরেই সেও ভালোবাসতে শুরু করে সাফিনকে। পরবর্তিতে আল্লাহ ই সব কিছু ঠিক করে দিয়েছিলো।
রক্ত পরা কমে গেছে। সাফিন ব্যান্ডেজ করতে লাগলো।
জানাঃ জানো! তুমি ছুঁয়ে দিলে কেন জানি ব্যথা গুলো আর থাকেনা।
-- সাফিন না, থাক অনেক হয়েছে... আর ব্যথা পাওনি ভাব করতে হবে না। আমি তুমাকে কষ্ট পেতে দেখতে চাইনা বলে, এভাবে বলার প্রয়োজন কি! যোগ করলো সাফিন।
জানা হুহ... যাও তুমার সাথে কথা নাই।
-- সাফিনঃ কই ও না কথা, আমার কি! মুচকি হাসি।
হুম, কষ্টের মাঝেও রোমান্টিকতা। ভালোবাসার মানুষটি যদি হয় সারাজীবনের সঙ্গী, তাহলে ত কথা ই নাই প্রতিটা দিনকেই আলাদা আলাদা করে ভাবুন। সত্যি বলছি, বোরিং ফিল আসবে না, ভালবাসার মানুষকে পাবেন নতুনরুপে।
জীবন হবে সুন্দর।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:০১