পল্লী কবির নকশী কাঁথার মাঠটি ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছি---- তারই ধারাবাহিকতায় আজ ৪র্থ কিস্তির প্রথম পর্ব দিলাম আপনাদের ভাল লাগলে পরের কিস্তি গুলো লিখবো--
চার
কানা দেযারে, তই না আমার ভাই,
আরো ফুটিক ডলক(বৃষ্টি) দে, চিনার ভাত খাই।
----- মেঘরাজার গান।
চৈত্র গেল ভীষণ খরায়, বোশেখ রোদ ফাটে,
এক ফোঁটা জল মেঘ চোঁয়ায়ে নামল না গাঁর বাটে।
ডোলের বেছন(বীজ) ডোলে চাষীর, বয় না গরু হালে,
লাঙল জোয়াল ধুলায় লুটায় মরজা ধরে ফালে।
কাঠ-ফাটা রোদ মাঠ বাটা বাট আগুন লযে খেলে,
বাউকুড়াণী(ঘূর্ণিবায়ু) উড়ছে তারি ঘূর্ণী ধূলি মেলে।
মাঠখানি আজ শূনো খাঁ খাঁ, পথ যেতে দম আঁটে,
জন্ মানবের নাইক সাড়া কোথাও মাঠের বাটে;
শুকনো চেলা কাঠের মত শুকনো জাহান্নামের খোলা।
দরগা তলা দুগ্ধে ভাসে, সিন্নী আসে ভারে;
নৈলা গানের ঝষ্কারে গাঁ কানছে বারে বারে
তবুও গাঁয়ে নামলা না জল গগলখা ফাঁকা;
নিঠুর ণীলের বক্ষে আগুন করছে যেন খাঁ খাঁ।
উচ্চে ডাকে বাজপক্ষি আজরাইলে’র ডাক.
খর-দরজাল আসছে বুঝি শিঙায় দিযে হাঁক
নৈলা গান= বৃষ্টি নামাইবার জন্য আগে গ্রামে এক ধরণের গানের প্রচলন ছিল, যে গান শুধু যারা মা বাবার এক মাত্র সন্তান তারা গাইতে পারতো।
ডলক= বৃষ্টি, বেছন= বীজ,
বাউকুড়াণী = ঘূর্ণিবায়ু,
খর-দরজাল = প্রলয়ের দিনে ইনি বেহেস্ত ও দোযখ মাথায় করিয়া আসিবেন ( খাড়া দর্জাল )
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৭:৪২