পল্লী কবির নক্সী কাঁথার মাঠটি ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছি---- নেটে অনেক খুজে না পেয়ে নিজেই বই কিনে আপনাদের জন্য কম্পোজ করছি------
আজ ২য় কিস্তি দিলাম----
আপনাদের ভাল লাগলে পরের কিস্তি লিখবো-----
দুই
এক কালা দাতের কালি দ্যা কলম লেখি,
আর এক কালা চক্ষেও মণি, যা দ্যা দৈনা দেখি,
---- ও কালা, ঘরে রইতে দিলি না আমারে।
---- মুর্শিদা গান
এই গাঁযের এক চাষার ছেলে লম্বা মাথার চুল,
কালো মুখেই কালো ভ্রমর, কিসের রঙিন ফুল !
কাঁচা ধানের পাতার মত কচি-মুখের মায়া,
তার সাথে কে মাখিয়ে দেছে নবীন তৃণের ছায়া।
জালি লাউয়ের ডসার মত বাহু দুখার সরু,
গা খানি তার শাঙন মাসের যেমন তামাল তরু।
ঊদল-ধোয়া মেঘে কেগো মাখিয়ে দেছে তেল,
বিজলী মেয়ে পিছলে পড়ে ছড়িয়ে আলোর খেল।
কচি ধানের তুলতে চারা হয়ত কোনো চাষী,
মুখে তাহার জড়িয়ে গেছে কতকটা তার হাসি।
কালো চোখের তারা দিয়েই সকল থরা দেখি,
কালো দাতের কালি দিয়েই কতোব কোরাণ লেখি।
জনম কালো, মরণ কালো, কলো ভুবনময়;
চাষীদেও ওই কালো ছেলে সব করছে জয়।
সোনায় যে-জন সোনা বানায়, কিসের গরব তার,
রঙ পেলে ভাই গড়তে পারি রামধণুকের হার।
কালোয় যে-জন আলো বানায়, ভুলায় সবার মন,
তারির পদ-রজের লাগি লুটায় বুন্দাবন।
সোনা নহে, পিতল নহে, নহে সোনার মুখ,
কালো-বরণ চাষীর ছেলে জুড়ায় যেন বুক।
যে কালো তার মাঠেরি ধান, যে কালো তার গাঁও !
সেই কালোতে সিনান করি উজল তাহার গাও।
আখড়াতে তার বাঁশের লাঠি অনেক মানে মানী,
খোলার দলে তার নিয়েই সবার টানাটানি।
জারীর গানে তাহার গলা উঠে সবার আগে,
শাল – সুনদঅ - বেত ” য়েন ও, সকল কাজেই লাগে।
বুড়োরা কয়, ছেলে নয় ও, পাগল ( ইস্পাত ) লোহা যেন,
রূপাই যমেন বাপের বেটা কেউ দেখেছে হেন ?
যদিও রূপা নয়কো রূপাই, রূপার চেয়ে দামী,
এক কালেতে ওরই নামে সব গাঁ হবে নামী।