কথিত হাকীমুল উম্মত খারেজী গুরু মাওলানা আশরাফ আলী থানভী ছিল ব্রিটিশ এজেন্ট। ব্রিটিশদের থেকে ঐ সময় সে মাসিক ৬০০ রুপি ভাতা গ্রহণ করত। উদ্দেশ্য এ অঞ্চলের সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলমানদের ব্রিটিশবিরোধী ক্ষোভ উপশমের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করা। উল্লেখ্য, ব্রিটিশদের হাত থেকে নিজ মাতৃভূমি মুক্ত করার জন্য ইংরেজদের সাথে বহু যুদ্ধে লিপ্ত হয় এ অঞ্চলের জনগণ। বিশেষ করে হযরত সাইয়্যিদ আহমেদ শহীদ বেরেলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং উনার খলিফা হযরত তীতুমীর (সাইয়্যিদ মীর নেসার আলী) রহমতুল্লাহি আলাইহি ইংরেজদের সাথে ব্যাপক জিহাদ করেন। দুইজনই পৃথক যুদ্ধে ১৮৩১ সালে শহীদ হন। এরপর থেকে এ অঞ্চলের অধিবাসীদের মধ্যে ইংরেজ বিরোধী ক্ষোভ ক্রমেই বাড়তে থাকে। ১৮৫৭ সালে হয় সিপাহী বিদ্রোহ। ইংরেজরা সিপাহী বিদ্রোহ দমন করতে পারলেও তাদের দিন যে ফুরিয়ে এসেছে তা স্পষ্ট হয়ে যায়। আর তাই এ অঞ্চলের জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করতে ইংরেজরা বেছে নেয় ভিন্ন কৌশল। যেহেতু এ অঞ্চলের অধিকাংশ জনগণ মুসলমান, সেহেতু ১৮৬৬ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের দেওবন্দ এলাকায় কিছু মাওলানাকে একত্র মাদ্রাসার জায়গা দিয়ে দেয় ব্রিটিশরা। (এ মাদ্রাসার প্রথম প্রিন্সিপাল ছিল মাওলানা কাসিম নানুতুবী, যে প্রথম জীবনে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকলেও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। এই মাদ্রাসাই বর্তমানে দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিত, ভারতে এরা কংগ্রেসের সাথে জোট বেঁধে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ নামে রাজনীতি করে)। উদ্দেশ্য ছিল সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কিছু মাওলানাকে পোষা, যারা বিভ্রান্তিকর ফতওয়ার মাধ্যমে মুসলমান সমাজকে নিষ্ক্রিয় করে যাবে। এক্ষেত্রে দেওবন্দ ও তাদের সমগোত্রীয় মাওলানাদের নিয়মিত ভাতা প্রদান করত ব্রিটিশরা, এ ধর্মব্যবসায়ীরাই ব্রিটিশপক্ষ নিয়ে ফতওয়া দিয়ে মুসলমানদের ব্রিটিশদের সাথে যুদ্ধ থেকে ফিরিয়ে রাখত। আর এই এজেন্ট তৈরীতে ব্রিটিশদের পছন্দের শীর্ষ তালিকায় ছিল মাওলানা আশরাফ আলী থানভী। যার কারণে দেখা যায়, এই ক্ষূদ্র রেসালা লেখকই পরবর্তীতে প্রচার পায় বেশি, যদিও তার থেকে ঐ সময় আরো অনেক বড় বড় আলেম ভারতবর্ষে ছিল।
************
দেওবন্দী নিজস্ব ডকুমেন্ট “মুকালামুতুচ্ছাদারিয়ান” নামক বইয়ের ১০-১১ নং পাতায় আশরাফ আলী থানভীর ভাতা গ্রহণের বিষয়টি উঠে আসে। যেখানে দেখা যায়, মাওলানা সাব্বির আহমেদ আল দেওবন্দী (সভাপতি জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ, কলকাতা) মাওলানা হাফিজুর রহমানকে থানভীর ব্রিটিশ ভাতা গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
বইয়ের স্ক্যান (বইয়ের নামসহ):
_____________________
সৌজন্যে: ব্লগার@নুরুল হুদা(শান্ত)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:১১