"একান্তই নিজের অভিমত থেকে লিখাটা!"
২০১১ সালের সকাল ৭-৮টা হবে; আমি ও আমার দুই বন্ধু লিয়ন এবং শামীম একসাথে "বিশ্ব-ইজতেমা"-তে যাবার জন্য কমলাপুর রেলষ্টেশনের কাছে একটু রেস্তোরায় সকালের নাস্তা খেতে বসেছিলাম।
এমন সময় একজন দুঃস্থ, ক্ষুধার্ত মানসিক ভারসাম্যহীন লোক রেস্তোরায় ঢুকে খাবারের জন্য চিল্লাচিল্লি করতে লাগলো। মালিক বেয়ারাকে বলল, "ওকে বের কর!"
প্রায়ই নাকি এসে এমন করে ক্ষুধায়।
তখন আমি বললাম, "ওকে বসাইয়া খাবার দাও, বিল আমি দেবো।" আমরা ডাল ভাজির সাথে ডিমও নিয়েছিলাম। বেয়ারাকে বললাম, "মামা, ওকেও ডিম দাও। অন্য কিছু চাইলে তাও দাও!"
লোকটা খুব আরাম করে খাচ্ছিলো।
আমরা যখন খেয়ে বিল দিতে গেলাম, তখন বরাবরের মত আমাদের শামীম দোস্ত আমারে বিল দিতেই দিবোনা (এটা আমাদের বন্ধুদের ব্যাপার। কখনো কখনো সবাই শেয়ার করি, আবার কখনো কেউ একাই ট্রিট দেয়)।
কিন্তু যখন কত বিল হইছে জিজ্ঞেস করলাম তখন মালিক শুধু আমাদের বিলের কথাই বলল, ঐ লোকের বিল নিলোনা। আমরা অনেক বলার পরও না। এবং বেয়ারা খুব যত্নেই তাকে খাওয়াচ্ছে।
ভাবলাম যেই লোকগুলো একটু আগেই ঐ লোকটির সাথে অমন করছিল, আমাদের একটু ব্যবহারে তারা এখন সম্পূর্ণ অন্য কেউ।
*** লিখাটি লিখার উদ্দেশ্য হলো; দুইদিন ধরে ফেসবুকে একটি লিখা দেখছি বিভিন্ন পেজে।
একটি ছেলে একজন বৃদ্ধা মহিলাকে পহেলা বৈশাখে খাইয়েছে। ছেলেটির কাজ সত্যিই অনেক অনেক প্রশংসার দাবী রাখে। আমিও তার কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে চাই যে, আমরাও কি পারিনা এমন করে একজনকে খাওয়াতে?
হা! আমরা পারি।
লিখা পর্যন্ত ঠিকই ছিল, কিন্তু ঐ মহিলার পাশে বসে ছবি তুলে এবং ৪০ জন মানুষকে TAG করে লিখাটা কি খুব দরকার ছিল?
আমার কাছে বিষয়টা কেমন যেন রাজনৈতিক নেতাদের মত লোক দেখানো মনে হলো।
(আগেই বলেছি আমার নিজের অভিমত। আমি ভুলও হইতে পারি।)
### কেউ আবার এখানে ধর্মকে নিয়ে আসবেননা। বলবেননা যে, ইজতেমায় যাচ্ছিলাম বলে অমনটা করেছিলাম। আমরা যেমন শুধু তাই লিখেছি, সেটার জন্য কোন উপলক্ষ খুঁজিনা।
>>> ঐ পোষ্টে দেখেছিলাম অনেক LIKE, COMMENTS & SHARE!
আমি আমার লিখা থেকে শুধু এটুকুই বলবো যে, আমার এই লিখাতে কোন LIKE, COMMENTS & SHARE দরকার নাই। শুধু ঐ মালিক এবং ঐ বেয়ারা ছেলেটাকে একবার মনে মনে ধন্যবাদ দিন (যদি মন চায়)। হয়তো তারা এমনটা প্রায়ই করে যেটা আমি আজও জানিনা।
০০০ জানি এই লিখাকে অনেকেই সমালোচনা করবেন। অনেকে ফালতুও বলবেন। আবারো বলছি যে, এটা শুধুই আমার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল।