somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাতির এই ক্লান্তিলগ্নে শহীদ জিয়ার মতো মহান রাষ্ট্রনায়কের আদর্শই অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে জাতিকে মুক্ত করতে পারে ।

২৯ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জাতির এই ক্লান্তিলগ্নে শহীদ জিয়ার মতো মহান রাষ্ট্রনায়কের আদর্শই অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে জাতিকে মুক্ত করতে পারে ।

মুহাম্মদ নূরে আলম বরষণ ( সূফি বরষণ )
লেখক: সাংবাদিক ও গবেষক।
৩০ মে সোমবার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে তিনি নিহত হন।শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন। বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতাও তিনি।

ঐতিহাসিকভাবেই তাকে সামনে রেখে তার দেখানো পথে নতুন উদ্যমে শুরু করতে হবে আগামীর উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কাজ । কারণ তিনি আমাদের অগ্রগতির আলোকবর্তিকা হয়ে রয়েছেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের ঐতিহ্য ও প্রগতির মধ্যে এক ধরনের ঐকতানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। রাষ্ট্রযন্ত্রের মাধ্যমে বর্তমান ক্ষমতাসীনরা দমন-পীড়নের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে কিছুসংখ্যক কর্মীর মধ্যে যে ভীতি এবং ক্রোধের সৃষ্টি হয়েছিল তা বিএনপির ঐতিহ্য ও আদর্শের বিপরীতে তাড়িত করেছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপির নেতৃত্বের ওপর দুটি বড় দায়িত্ব। ১. দলকে সাংগঠনিকভাবে মজবুত করে গড়ে তোলা ২. দেশের জনগণকে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে সাহায্য করা।

যার মধ্য দিয়ে এই কর্মকাণ্ড দীর্ঘমেয়াদি অব্যাহত থাকবে। ত্যাগী নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে তাদের সহযোগিতা করা, যেন তারা তাদের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি করতে সক্ষম হতে পারে। সুষম বণ্টনের মধ্য দিয়ে জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে আইনের শাসন নিশ্চিত করা। গত কয়েক বছরে বিএনপির ওপর দিয়ে একাধিক ঝড় বয়ে গেছে। আর তা এখনও অব্যাহত আছে আর চলছে নানাবিধ ষড়যন্ত্র ।। যে ঝড়ে গাছটি উপড়ে পড়ে যাওয়ার কথা কিন্তু পড়েনি, কারণ 'বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ' বিএনপির আদর্শিক জায়গাটি অনেক মজবুত কারণ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মিশে আছে এদেশের কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে । ২০০৭-এর এক-এগারোতে মইন-ফখরুদ্দীন বিএনপি এবং জিয়া পরিবারকে ধ্বংস করতে প্রচণ্ড আঘাতের মধ্য দিয়ে যে পরিকল্পনা করেছিল সেই পরিকল্পনা এখনো অব্যাহত আছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাসভবন থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আগামীর কাণ্ডারী তারেক রহমান, জননেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সারা দেশে লাখ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হাজার হাজার হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা, হত্যা করা হয়েছে অসংখ্য জিয়ার আদর্শের সৈনিককে, আজীবনের জন্যে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে ক্রমাগত নিপীড়নের মধ্যে আমরা আমাদের আদর্শের নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিখ্যাত উক্তি 'জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস' মনে করে শক্তির সঙ্গে জ্ঞানের বৃদ্ধি করি এবং যত কম শক্তি প্রয়োগ করব আমাদের শক্তি তত বৃদ্ধি পাবে।

দমনমূলক ব্যবস্থা কখনোই সৎ চিন্তাধারাকে তাড়িয়ে দিতে সফল হয় না। ক্ষমতায় থেকে নির্মমভাবে বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করবেন। জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হয়ে ক্ষমতা বজায় রাখবেন। সহিষ্ণুতা ও বোঝাপড়ার চেতনা বাদ দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারগুলোকে অসম্মান করবেন। আইনের শাসনকে ভূলুণ্ঠিত করে ভোটের অধিকার হরণ করে একতরফা প্রহসনমূলক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় না। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে, পাল্টাতে হবে গতানুগতিক চিন্তাধারা।
সর্বাধিক কাঙ্ক্ষিত সুশাসন, যা আমাদের সমাজ, পরিবার, ঐতিহ্য ও ধর্মবিশ্বাসের মধ্য দিয়ে সমাজের অগ্রগতি সাধিত হয়।

দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতো দেশগুলো তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি বজায় রেখেই অর্থনীতির প্রভূত উন্নয়ন সাধন করছে। আমরা পিছিয়ে আছি সুশাসনের অভাবে। তাই আমাদের এই শতকের স্লোগান 'পরিবর্তনের জন্য সুশাসন-সুশাসনের জন্য পরিবর্তন' সুশাসন ফিরে এলে তবেই দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, দুবাইয়ের মতো মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব, অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সুবিচার ও সমৃদ্ধির নীতি ও আদর্শ অনুসরণ করে।

তিনি কতখানি পেশাদার সৈনিক ছিলেন, তা তার সতীর্থদের দেয়া ভাষ্য থেকে জানা যায়। ২৬ মার্চ রাতে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে ঐতিহাসিক ভাষণ দেয়ার পর ব্যাটালিয়নের অস্ত্র নিয়ে চট্টগ্রামের সেনা ছাউনি ত্যাগ করে ষোলশহর দিয়ে যাওয়ার পথে মেজর জিয়ার বাসার কাছে এলে একজন সৈনিক বললেন—স্যার, ম্যাডামের সঙ্গে একটু দেখা করে যাবেন কি? জবাবে মেজর জিয়া বললেন, তোমরা কি তোমাদের স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে পারবে? আমরা এখন দেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে নেমেছি। দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত ফিরে তাকানোর কোনো সুযোগ নেই। সামনে এগিয়ে যাও। রণাঙ্গনে সম্মুখযুদ্ধে তিনি যে বীরত্ব দেখিয়েছেন তা এখনো উজ্জ্বল হয়ে আছে বেঁচে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের চোখে। স্বাধীনতা যুদ্ধে অনন্য কৃতিত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ‘বীর উত্তম’ উপাধিতে ভূষিত করেন। 

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের জুন মাসে তিনি কুমিল্লার একটি ব্রিগেডের কমান্ডার ছিলেন। সে সময় তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসে তিনি সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার লাল সূর্য দেখতে পায়। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে সঠিকভাবে দেশ চালাতে পারেনি তত্কালীন আওয়ামী লীগ সরকার। গণতন্ত্র নির্বাসন দিয়ে একদলীয় বাকশাল প্রবর্তন করে স্বাধীন বাংলাদেশের অনন্য সংবিধানে প্রথম কাটাছেঁড়া করেন তত্কালীন রাষ্ট্রপ্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অগোছালো প্রশাসন, খাদ্যাভাব, স্বাধীনতাবিরোধীদের ষড়যন্ত্র, সেনাবাহিনীর ভেতরে অসন্তোষ ইত্যাদি কারণে একদলীয় বাকশালকে স্থায়ী রূপ দিতে তিনি ব্যর্থ হন। ১৯৭৫ সালের শেষদিকে রক্তাক্ত রাজনৈতিক উত্থান-পতনের ঘটনাবলীর মধ্য দিয়ে তার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা দেশে একটি চূড়ান্ত বিপর্যয় সৃষ্টি করে। অবশেষে ৭ নভেম্বর তত্কালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণ করেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিকাশ এবং বাকস্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া সূচিত হয়েছিল এই দিনটিতে। ১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর তিনি সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত হন। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালের ৩ জুন সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হন। জাতীয় রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চেতনা সঞ্চার এবং রাজনীতিকে গণমুখী ও অর্থনৈতিক মুক্তির অভিসারী করে তোলার লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পরই ১ সেপ্টেম্বর গঠন করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছিলেন এই দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। নতুন দলের আত্মপ্রকাশের মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পৃথিবীর ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

তার নেতৃত্বে কর্মের সুযোগ সৃষ্টি ও উত্পাদনে জেগে ওঠে বাংলাদেশ। শুরু হয় স্বনির্ভর, আধুনিক এক বাংলাদেশের যাত্রা। ফিরিয়ে আনেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের নতুন ধারা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। জিয়াউর রহমানের বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করে। ড. হেনরি কিসিঞ্জার আখ্যায়িত ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’র দেশ ক্রমেই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। তিনি অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা এনেছিলেন অল্প সময়ের মধ্যে। তিনি গ্রাম সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রশাসনকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে গিয়েছিলেন। দ্রুততম সময়ে সারাদেশে তিনি একটি কর্ম ও সুশাসনের সংস্কৃতি গড়ে তোলেন। সত্যি কথা বলতে কী, দেশের ভেতর তখন কোনো বিভাজন ছিল না। এমনভাবে তিনি সাধারণ মানুষের মধ্যে চলে গিয়েছিলে যে, তাকে বলা হতো সাধারণ মানুষের নেতা।

এত অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বিপুল সফলতার পেছনে জিয়াউর রহমানের যেসব চারিত্রিক গুণাবলী ও আদর্শ গুরুত্ব পেয়েছিল তা অল্প সময়ে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ঘোষিত ১৯ দফা নীতি ও কর্মসূচির মধ্যে ফুটে উঠেছে তার চারিত্রিক গুণাবলী ও দেশপ্রেমের আদর্শ। তার মূলমন্ত্র ছিল ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়’। মোটা দাগে বলতে হলে তার ছিল— ১. সত্যোজ্জ্বল অতীত, যোগ্য নেতৃত্ব, সততা ও স্বচ্ছতা ২. অসহায়, দরিদ্র ও অধিকারবঞ্চিত মানুষের প্রতি তার ছিল অগাধ ভালোবাসা, তার নেতৃত্বে খুঁজে পায় তাদের স্বপ্নের ভবিষ্যত্ ৩. তার যোগ্য নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ-বাকশালের একনায়কতান্ত্রিক স্বেচ্ছাচারিতার হাত থেকে রক্ষা পায় দেশের মানুষ ৪. তিনি উপহার দিয়েছিলেন জাতিসত্তার নতুন এক বিনির্মাণ— বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, যা ছিল আধুনিক ও হাজার বছরের ইতিহাস নির্ভর ৫. জাতীয় জীবনে যে হতাশা ও নেতিবাচক অবস্থা তৈরি হয়েছিল তা থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে দেশবাসীকে তিনি নতুন স্বপ্নে উদ্বুদ্ধ করে জাগিয়ে তুলেছিলেন উন্নয়নের রাজনীতিতে ৬. প্রতিটি ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের মানুষ খুঁজে পেয়েছিল তাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনাবোধ। ফলে কর্ম ও উত্পাদনের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছিল ৭. তার নেতৃত্বে ফিরে আসে জনগণের গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকার ৮. সর্বোপরি শহীদ জিয়ার যোগ্যতা, দেশপ্রেম, সততা ও স্বচ্ছতায় আকৃষ্ট হয়ে দেশের মেধাসম্পন্ন গুণী মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে। তারই আদর্শ ও অনুপ্রেরণা লালন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বার বার দেশ পরিচালনা করে এসেছে। এখনো বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে তার প্রতিষ্ঠিত দল বহুদলীয় গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রাম করে যাচ্ছে। সব সম্প্রদায় এবং রাজনৈতিক চেতনার মাঝে এক অভূতপূর্ব সম্প্রীতির মেলবন্ধন তৈরি করে তিনি একদা বলেছিলেন, ‘এক দেশ নানা মত, দেশ বাঁচাতে ঐক্যমত’। 

যে ব্যক্তিটি রাজনীতিকে চারদেয়াল থেকে মুক্ত করে নিয়ে গিয়েছিলেন মাঠে-ময়দানে, যাদের জন্য তিনি হয়ে উঠেছিলেন আতঙ্ক, সেই শত্রুদের নির্মম বুলেট তার প্রাণ কেড়ে নেয় ১৯৮১ সালের ৩০ মে। মাত্র ৪৫ বছরে শাহাদত বরণ করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদের প্রাণপুরুষ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। আমাদের জন্য তিনি রেখে গেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আদর্শিক, প্রিয় দল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। 
জাতির প্রতিটি ক্রান্তিকালে বাংলাদেশের আপামর জনগণ স্মরণ করেছে এই মহামানবকে। আজ যখন মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ও গণতন্ত্র নিহত, সংবাদপত্র ও গণমাধ্যম আহত, ভোটের অধিকার ভূলুণ্ঠিত, সে সময়ে তার জীবন ও কর্ম বড় বেশি প্রাসঙ্গিক। কারণ এরকমই একটি পরিবেশ রচিত হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। বাকশক্তি রহিত একটি জাতি তখন রুদ্ধ হয়েছিল একদলীয় শাসনের রুদ্ধশ্বাসে। আজও সেই পঁচাত্তরের মতো গণতন্ত্র রুদ্ধ হয়েছে সেই একই দল আওয়ামী লীগের হাতে। টিভি চ্যানেল বন্ধ, পত্রিকা নিষিদ্ধ। মানুষ তার স্বাভাবিক মত প্রকাশ করতে পারছে না, স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারছে না। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই ক্ষমতার পালাবদল হচ্ছে। নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। হত্যা গুম ভীতি তৈরি করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুল পথে পরিচালিত করে দেশকে একটি খাদের কিনারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অসাম্প্রদায়িকতার নামে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা হচ্ছে। সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার পথে ফিরিয়ে আনতে মহান মুক্তিযুদ্ধের সেনাপতি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শই হতে পারে দেশ পরিচালনার মূলমন্ত্র।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×