মুহাম্মদ নূরে আলম বরষণ ( সূফি বরষণ )
লেখক: সাংবাদিক ও গবেষক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রজ আলমগীর কবির মুসলিম কমিউনিস্ট আমার খুবই ঘনিষ্ঠ বড় ভাই। তিনি আমাকে অনুরোধ করেন বিপ্লবী সত্যেন সেন সম্পর্কে কিছু লেখার জন্য, কিন্তু আমি তো এই মহান বিপ্লবীর সম্পর্কে কিছুই জানিনা বলার পরও তার চাপাচাপিতেই এই লেখার প্রয়াস ।
আজ সকাল থেকেই ভাবছিলাম আত্মপক্ষ সমর্থন করে লিখবো আমি কেন পাকিস্তান,পাকিস্তানী ও উর্দ্দু ভাষা কে ঘৃণা করি॥ কারণ নিজে শতভাগ বিশুদ্ধ ভাবে উর্দ্দু পড়তে ও লিখতে পারি এবং বলতেও পারি॥ তারপরও কেন আমি উর্দ্দু ভাষায় কোনো পাকিস্তানীর সাথে কথা বলি না!?? সেই কথাই আজ আমি আপনাদেরকে বলবো।
কিন্তু আমি ইচ্ছে করেই এক প্রকার ঘৃণা থেকে কোনো পাকিস্তানীর সাথে উর্দ্দুতে কথা বলি না॥ কারণ সেটা মায়ের ভাষা বাংলার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও অনেক বেশি আবেগ জড়িত বলে এবং অনেক বেশি বাংলাকে ভালোবাসি বলে, বুকের মধ্যে লালন করি বলে।
কোনো পাকিস্তানী যদি আমাকে বলতো উর্দ্দু আতা হে তখন আমি বুঝে ও বলতাম বুঝি নাই !? তখন কষ্ট করে সে বলতো ইউ স্পিক উর্দ্দু ? তখন আমি বলতাম না !? এবং উল্টো আমি তাদের মুখের উপরে বলতাম ইউ স্পিক বেঙ্গলি? প্রত্যেক বারই আলাপের সময় আমি পাকিস্তানীকে বলতাম বাংলা শিখে ফেল অনেক সহজ॥ আর তখন অনেক পাকিস্তানীই বলতো বাঙালীকে তো উর্দ্দু আতা হে ?! কিন্তু আমি বলতাম না আমি পারিনা উর্দ্দু বলতে যেমন তুমি পারনা বাংলা বলতে॥ লন্ডনে যখন একজন বাঙালীকে কোনো পাকিস্তানীর সাথে উর্দ্দুতে কথা বলতে দেখতাম তখন আমার অনেক বেশি রাগ হতো ॥ সামান্য পরিচয় থাকলেই প্রতিবাদ করতাম এবং এখনও করি, কেন উর্দ্দুতে কথা বলছেন বাংলাদেশী হয়ে আর বুঝিয়ে দিতাম যে, আর কোনো সময় কোনো পাকিস্তানীর সাথে উর্দ্দুতে কথা বলবেন না॥ আর এটা এখনও করছি কড়া ভাষায় প্রতিবাদের মাধ্যমে যে কোনো দিন কোনো পাকিস্তানীর সাথে উর্দ্দুতে কথা বলবেন না প্লীজ। বুকের মধ্যে রক্তের দামে কেনা মায়ের ভাষা বাংলাকে ভালোবাসতে শিখুন।
এবার আমার লন্ডনের বাসার কথা বলি, আমি যে বাসায় থাকি সেই বাসায় একজন পাকিস্তানী থাকে॥ সে শতবার চেষ্টা করেছে আমার সাথে উর্দ্দুতে কথা বলতে কিন্তু আমি বলি নাই ?! সাফ বলে নিয়েছি আমার সাথে যদি কথা বলতে চাও তবে ইংরেজি বা বাংলাতে বলতে পার॥ আমি উর্দ্দু বলতে পারিনা !? ঐ পাকিস্তানী কিভাবে যেন জেনেছে যে আমি অনেক বিশুদ্ধ ভাবে উর্দ্দু বলতে পারি॥ তাই সে বেচারা পাকিস্তানী আমার সাথে কথা বলায় বন্ধ করে দিয়েছে ॥বন্ধ করার আরও একটি বড় কারণ সে আমার মতো পরিস্কার ভাবে ভালো ইংরেজি বলতে পারে না?
আর আমি এই সবই করছি বিলেতের মাটিতে মায়ের ভাষা বাংলার প্রতি অনেক বেশি ভালোবাসা শ্রদ্ধা ও গভীর আবেগ থেকে এবং পাকিস্তানের প্রতি অনেক বেশি ঘৃণা থেকে। এবার আসি বিপ্লবী সত্যেন সেনের ভাষা আন্দোলনের প্রথম সংগ্রামী’ গল্পের সম্পর্কে। যে গল্প আমাকে প্রতিদিন বিলেতের মাটিতে বাংলা ভাষার প্রতি অনুপ্রেরণা জোগায়। আর আবেগে শ্রদ্ধায় চোখ দিয়ে মায়ের ভাষার জন্য অশ্রু গড়িয়ে পড়ে ।
বিপ্লবী সত্যেন সেনের ‘ভাষা আন্দোলনের প্রথম সংগ্রামী’ গল্প অবলম্বনে একটি নাটক প্রচারিত হয়েছে বাংলাদেশের টিভিতে । নাটকটিতে অভিনয় করছেন রওনক হাসান, তিশা ও ইশরাত নিশাত। নাটকের গল্পে ফুটে উঠেছে ভাষা আন্দোলনের পূর্ব প্রেক্ষাপট।
বাঙালিদের বাঙালি হওয়ার পেছনে অনেক আন্দোলনের জোরালো ভূমিকা অনস্বীকার্য। সেটা শুরু হয়েছে ব্রিটিশ বিরোধী আর উচ্চ বর্ণের নব্য হিন্দু জমিদারদের অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে শুরু হয়। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ হওয়ার পেছনে ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে ’৬৯-এর গণআন্দোলন এবং একই পথে ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাকেই প্রধান হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে মাতৃভাষার জন্য সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারের মতো অকুতোভয় ভাষাসৈনিকের প্রাণ উৎসর্গ না হলে আমরা স্বাধীনতা পেতাম কিনা সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। বাংলায় স্বাধীনতার বীজ রোপণ হয়েছিল ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতেই। পৃথিবীতে ভাষার জন্য জীবন দেয়ার ইতিহাস একমাত্র বাঙালিরাই সৃষ্টি করেছে। তাই তো একুশে ফেব্রুয়ারি আজ সারা বিশ্বে মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।এ মহান ভাষা দিবসের তাৎপর্য, ভাষাসৈনিকদের আত্মত্যাগ আমাদের বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে খুব একটা না ফুটে উঠলেও নাটক এবং সঙ্গীতে সেটি ভালোভাবেই ফুঠে উঠেছে।
তারমধ্যে বিপ্লবী সত্যেন সেনের ‘ভাষা আন্দোলনের প্রথম সংগ্রামী’ গল্প অবলম্বনে ভাষার সন্তান নাটকটি অন্যতম।
বিপ্লবী সত্যেন সেন:
বাড়ির নাম ‘শান্তি কুটির’। ছোটবেলায় তার ডাক নাম ছিল লস্কর। তার পিতা ধরনীমোহন সেন এবং মা মৃণালিনি সেন। চার সন্তানের মধ্যে সত্যেন কনিষ্ঠ। ইন্দুবালা সেন, প্রতিভা সেন, জিতেন্দ্র মোহন সেন (শঙ্কর) ও সত্যেন সেন (লঙ্কর)। শিল্প-সাহিত্যে আগ্রসর এই পরিবারে ছিল কয়েকজন খ্যাতিমান সাহিত্যিক। সত্যেনের পিতৃব্য ক্ষিতিমোহন সেন ছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তাঁর কাকা মদনমোহন সেন ছিলেন খ্যাতিমান শিশুসাহিত্যিক। খুড়তুতো ভাই মুরারীমোহন সেন ও সত্যেনের দুই বোন ইন্দুবালা এবং প্রতিভা সেন সাহিত্যচর্চায় নিবিড়ভাবে জড়িত ছিলেন।
১৯২৪ সালে সত্যেন সেন মাধ্যমিক পাস করেন সোনারঙ স্কুল থেকে। উচ্চমাধ্যমিক পড়ার জন্য চলে যান কলকাতায়। সেখানে যাওয়ার পর তিনি যুক্ত হয়েছিলেন বিপ্লবী দল যুগান্তরের সঙ্গে। ওই দলের সংগঠক ছিলেন জীবন চ্যাটার্জি। ছাত্রাবস্থায় বোনের উৎসাহে নিজেকে যুক্ত করেছিলেন স্বদেশী বিপ্লবী কাজে। তখন থেকে সত্যেনের সাহিত্য চর্চার শুরু। তাঁর কবিতা ছাপা হতো ‘নবশক্তি’ পত্রিকায়। কলেজের ছাত্রাবস্থায় সন্ত্রাসবাদী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার জন্য ১৯৩১ সালে গ্রেফতার হয়ে বহরামপুর কারাগারে একটানা পাঁচ বছর বন্দী থাকেন। জেলে বসেই তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। ১৯৩৮-এ বহরামপুর কারাগার থেকে মুক্তির পর গবেষণা বৃত্তি লাভ করেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর গবেষণার জন্য। তিনি গবেষণায় প্রবেশ না করে মার্কসবাদী রাজনীতি চর্চায় মগ্ন থাকেন। আসলে জেল জীবনই তাঁর রাজনৈতিক ভাবনা আমূল পাল্টে দিয়েছিল।
তিনি তারুণ্যের শক্তিকে উদ্বুদ্ধ করতে চাইতেন সমাজ পরিবর্তনের কাজে। কখনও সাহিত্যসংগঠন গড়ে, কখনও গানের দল গড়ে। আর এজন্য তিনি কৃষক আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিলেন। এছাড়া ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৪৭ সালে স্বাধীন ভারত সৃষ্টি হওয়া পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। ১৯৪৮ সালে মিলের শ্রমিকদের নিয়ে কবিগানের দল গঠন করেছিলেন।
১৯৪৮ সালে তাঁর বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হলে কিছুদিন শান্তিনিকেতনে আত্মগোপনে ছিলেন প্রতিভা সেনের বাড়িতে। তারপর সমাজতন্ত্রের পক্ষে মেহনতি মানুষকে সংগঠিত করার জন্য ফিরে আসেন সোনারঙ গ্রামে। পুনরায় কৃষক আন্দোলনে যোগদান। প্রখ্যাত কৃষক নেতা জীতেন ঘোষের সাথে কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলেন। এরমধ্যে সত্যেনের মা বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হন। মায়ের অসুখের চিঠি গিয়ে পড়ে পুলিশের হাতে। পুলিশ তাকে বিপ্লবী কর্মকা- পরিচালনা করার দায়ে দ্বিতীয়বারের মতো গ্রেফতার করে। ১৯৪৯ সালে জেলে থাকাকালে তাঁর মা মারা যান। সত্যেন বন্দী ছিলেন ঢাকা ও রাজশাহী জেলে। ওই সময় কারাগারে বসে তিনি অনশন করেন একাধারে ৪০ দিন। দীর্ঘ কারাভোগ ও নির্যাতনে তাঁর স্বাস্থ্য ভেঙ্গে যায়। প্রায় চার বছর কারানির্যাতন ভোগের পর ১৯৫৩-তে মুক্তি লাভ। আবারও ফিরে আসেন সোনারঙ গ্রামে। তখন নানা প্রতিকূল পরিবেশের জন্য তাঁদের পরিবার কলকাতায় চলে যায়।
১৯৫৪ সালের ৩০ মে পূর্ব বাংলায় ৯২-ক ধারা জারি হলে আবার গ্রেফতার হন তিনি। কিছুকাল পর জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ‘দৈনিক সংবাদ’-এ সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন। শুরু হয় সাংবাদিকতা জীবনের নতুন পথচলা। ১৯৫৮-এর ৭ আগস্ট দেশে সামরিক আইন জারি হলে পুনরায় গ্রেফতার। দীর্ঘ পাঁচ বছর জেলে থাকার পর ১৯৬৩-এর শেষ দিকে মুক্তিলাভ। পুনরায় দৈনিক সংবাদে যোগদান। ১৯৬৫-র আগস্ট থেকে ১৯৬৮ পর্যন্ত ফের কারাবাস। মুক্তি পাওয়ার পর আবার যুক্ত হন ‘দৈনিক সংবাদ’-এ। তাঁর জীবনের একটি বড় অংশ কেটেছে সাংবাদিকতায়। সেখানে তিনি নিয়মিত কলাম ও অনুসন্ধানী নিবন্ধ লিখতেন। এ পত্রিকায় যুক্ত থাকাকালেই তিনি বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ঘুরে কৃষক আন্দোলনের অনেক তথ্য সমৃদ্ধ কাহিনী জানতে পারেন। যা পরে তার বিভিন্ন বইতে স্থান পেয়েছে।
সত্যেন সেন রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধঘোষিত তৎকালীন কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি কৃষক সংগঠন গড়লেও সে পরিচয় তার মুখ্য হয়ে ওঠেনি। ১৯৬৮ সালের ২৯ আগস্ট তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী’। শিল্পী সাইদুল ইসলামের নারিন্দার বাসায় সত্যেন সেন, রণেশ দাশগুপ্ত, শহীদুল্লা কায়সার, কামরুল আহসান, মোস্তফা ওয়াহিদ খানকে নিয়ে গঠিত হয় উদীচী। সত্যেন সেন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এ সংগঠনের উদ্দেশ্য মেহনতি মানুষকে গানের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে উদ্ধুদ্ধ করা। ১৯৭১ সালে বাঙালীর সার্বিক মুক্তির চেতনাকে ধারণ করে উদীচী গড়ে তোলে এক সাংস্কৃতিক সংগ্রাম। এ সংগ্রাম বাংলার পথে-ঘাটে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সত্যেন সেনের নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের পর থেকে উদীচী স্বয়ং দেশব্যাপী এক দুর্বার আন্দোলন হিসেবে দেখা দেয়। ’৭২-এর আগে উদীচী তার একটি গণসঙ্গীতের স্কোয়াড নিয়ে গর্ব করত। বর্তমানে ৩১৫টি শাখা সংগঠন এবং দেশের বাইরে ৫টি শাখা রয়েছে। প্রতিটি শাখায় গানের দল রয়েছে। রয়েছে সঙ্গীত, নাটক, নৃত্য, আবৃত্তি, চারুকলা, পাঠাগার ও সাহিত্য বিভাগ। ২০১৩ সালে ‘বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী’ সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘একুশে পদক’ লাভ করেছে।
সত্যেন সেন সাহিত্যচর্চা শুরু করেন পরিণত বয়সে। তখন তিনি পঞ্চাশ অতিক্রান্ত। তাঁর কাছে সাহিত্যই ছিল সংস্কৃতির প্রাণ। তাঁর ভাষায় ‘মানুষের কাছে যে কথা বলতে চাই, সে কথা অন্যভাবে বলতে পারব না, সে জন্যই সাহিত্যের আশ্রয়।’ বাংলা কথাসাহিত্যের জনজীবনমুখী, সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতার সাহিত্য নির্মাণের পথিকৃৎ লেখক তিনি। তাঁর লেখায় স্থান পেয়েছে সমাজ, রাজনীতি, সমকালীন ও অতীত ইতিহাস। সত্যেন সেন রচিত গ্রন্থসংখ্যা প্রায় চল্লিশ। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : উপন্যাস : ভোরের বিহঙ্গী (১৯৫৯), রুদ্ধদ্বার মুক্তপ্রাণ (১৯৬৩), অভিশপ্ত নগরী (১৯৬৯), পাপের সন্তান (১৯৬৯), সেয়ান (১৯৬৯), পদচিহ্ন (১৯৬৯), পুরুষমেধ (১৯৬৯), আলবেরুনী (১৯৭০), সাত নম্বর ওয়ার্ড (১৯৭০), বিদ্রোহী কৈবর্ত্য (১৯৭০), বাংলাদেশের কৃষকের সংগ্রাম (১৯৭৬), জীববিজ্ঞানের নানা কথা (১৯৭৭), ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানদের ভূমিকা (১৯৮৬) ইত্যাদি। ছোটদের জন্য লিখিত গল্প : পাতাবাহার (১৯৬৮), অভিযাত্রী (১৯৬৯) অন্যতম। তার সাহিত্য সাধনার উৎস প্রগতিশীল ও গণমুখী চেতনা। ১৯৬৯ সালে ‘পাপের সন্তান’ উপন্যাসের জন্য তিনি ‘আদমজী সাহিত্য পুরস্কার’ ও ১৯৭০-এ ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার’ পান। ১৯৮৬-তে তাকে ‘একুশে পদক’ (মরণোত্তর) দেয়া হয়। চিরকুমার সত্যেন সেন আজীবন জড়িত ছিলেন বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে। জন্ম শতবর্ষ পার করার পরও কীর্তিমান এই মানুষটিকে আমরা যথার্থ খুঁজে পাইনি। যুগে যুগে সত্যেন সেনরা আসে জাতিকে জাগানোর জন্যে কিন্তু জাতি জাগে না আর সত্যেন সেনরা নিরবে হাসে জাতির বোকামী আর নির্বুদ্ধিতা দেখে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১৬ ভোর ৫:৩৪