বিশাল হলরুমটার সামনে এসে রু দাঁড়াল। রুমটা যত না লম্বা তাঁর চেয়ে বেশি উঁচু, এতটাই উঁচু, ছাঁদে আঁকা নীলাভ ম্যুরালগুলোকে মেঘ বলে ভ্রম হয়। বিশাল এই রুমে যেকোনো হিসেবেই পুরো এক স্টেডিয়াম ভর্তি লোক আটানো যাবে, চাইলেই দুই তিনটা উদ্ভাবক সম্মেলন আয়োজন করা সম্ভব। শিশুদের কলকাকলি আর বুড়োদের গম্ভীর কণ্ঠে পুরো রুম গমগম করতে পারত। কিন্তু বিশাল এই রুমে শুধু একটি টেবিল। সেটা ঘিরে আছে মাত্র সাতটি চেয়ার।
ভাবতে ভাবতে রু ঢুকে পড়ল রুমে। সে চাইলেই বিড়ালের মতো নিঃশব্দে হাঁটতে পারে। বিজ্ঞান একাডেমিতে কাজ করতে হলে এটা শিখে নিতে হয়। কিন্তু আজ আর তার দরকার হলো না। ওর উপস্থিতি টের পেতেই ফিরে তাকাল ছয়টি চিন্তিত মুখ। বয়স আর কাজের ভারে ন্যুব্জ সে মুখগুলোতে রাজ্যের শঙ্কা। টেবিল ঘিরে থাকা একমাত্র শূন্য চেয়ারের দিকে একবার তাকিয়ে পরিবেশ বিষয়ক আচার্য জিজ্ঞেস করলেন, তবে কি...
রু মাথা উঁচু নিচু করল। বহুদিন হলো এদের সঙ্গে আছে, তবু সহজে কথা বলার সাহসটা হয়ে ওঠেনি তার। অবশ্য আজ সেটার দরকারও হলো না। তার মাথা দুলুনিতেই উত্তর পেয়ে গেছেন ছয়জন। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সাতজনের ছয়জন। না, রু চিন্তাটা ঠিক করল। দশ মিনিট হলো, এরাই এখন পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ছয়জন। বিজ্ঞান একাডেমির মহাপরিচালক স্ত্রতোভ বিদায় নেওয়ার জন্য বড় কঠিন সময়কেই বেছে নিয়েছেন।
পরিবেশ বিষয়ক আচার্য রাভান উঠে গিয়ে মাঝের শূন্য চেয়ারটিতে বসলেন। অন্যরা তাকিয়ে রইলেন কিন্তু কিছু বললেন না। নিয়মানুযায়ী রাভানই নতুন মহাপরিচালক। চেয়ারে বসেই রুর দিকে ইঙ্গিত করলেন রাভান, রিকিকে পাঠিয়ে দাও দ্রুত। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার যন্ত্রে স্ত্রতোভের মৃত্যুর খবর জানিয়ে দিতে বল। আর হ্যাঁ, একদিনের শোকের কথা যেন জানিয়ে দেয় সঙ্গে সঙ্গেই।
চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩১