একটা ঢিবির পিছনে সে লুকিয়ে আছে অনেকক্ষন ধরে, তার নজর সামনের গিরিখাতের মত জায়গাটার দিকে। ৭/৮টা হরিণ পাল থেকে আলাদা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ওখানে। তার দুই ছেলেকে সে পাঠিয়ে দিলো উল্টোদিকে, যেনো অন্যপাশ দিয়ে শিকার ছুটে পালাতে না পারে। এখন কেবল সঠিক সময়ের অপেক্ষা।
হরিণ গুলো একটু অন্যমনস্ক হতেই সে তার যুদ্ধ চিৎকার করতে করতে ঝাপিয়ে পরলো হরিনের পালের উপর, হতচকিত হরিণ গুলো কিছু বুঝে উঠার আগেই তার দুই ছেলে ও ধংসযগ্গে অংশ নিলো.... খানিকের মধ্যেই ৩টা হরিণ এর পরে রইলো শুভ্র বরফের উপর।
পেট পুজো শেষে, সে আবার ও তার পুরো পরিবারের দিকে নজর দেয়ার সময় পেলো। অনেক, অনেকদিন পর তারা এরকম শিকার পেলো, এই শীতটা খুব খারাপ যাচ্ছে তাদের। শিকারের প্রচন্ড অভাব চারপাশে, মাঝে মাঝে ২/১টা ইদুর বা বোকাসোকা কিছু পাখি ছাড়া গত কিছুদিন আর কিছুই জোটে নি তাদের।তার দুই ছেলে এখনও খেয়ে চলেছে, বাড়ন্ত শরীরে ক্ষিদে সবসময় লেগে থাকে, ওদের চেয়ে একটু দুরে বিশ্রাম নিচ্ছে তার তিন সঙ্গিনী, তাদের এখানে এক পুরুষের তিন তিনটি সঙ্গী এমন কোন অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়; তার ছোট্ট এই পরিবারে আরো দুজন রয়েছে....এই শীতেই জন্ম নেয়া ২টি শিশু।
এমন সময় হঠাৎ দূরে একটা কালো বিন্দু দেখে সে উঠে বসলো, তাদের এই যাযাবর জীবনে নতুন সবকিছুকেই সন্দেহের চোখে দেখতে হয়।সে এগিয়ে গেলো, এই নতুন আগুন্তক কে আগে থেকেই সতর্ক করে দিতে হবে যেনো কাছে না আসে। নতুন আগুন্তক তার উদ্দেশ্য বুঝতে পেরেই ইশারা করলো দুর থেকেই যে, সে কেবল আলাপ করতেই আসছে। কিন্তু সে আগুন্তকের দিকে আবারো চিৎকার করে সতর্ক করলো, আগুন্তক একটু থমকে দাড়ালো। তারপর আবার কি ভেবে এগুতে শুরু করলো, তাই দলনেতা আর দুই পুত্র একসাথে একবার চিৎকার করে দৌড় শুরু করলো.....
দৌড়ের মাঝপথেই হঠাৎ কানফাটানো শব্দ; সে একটু থমকে উঠলেও আবারো দৌড়তে শুরু করলো, অন্তত সে তাই ভেবেছিলো,হঠাৎ সে টের পেলো তার দুপায়ে কোন জোর পাচ্ছে না সে, এক একটা পা ফেলতে যেনো এক যুগ পার হয়ে যাচ্ছে, আর চোখটা বন্ধ হয়ে আসছে..............
===============
রবার্ট শিস দিতে দিতে তার তাবুর দিকে এগিয়ে গেলো, আজ দিনটা খুব ভালো গেলো। বছরে এই সময়ে তিন তিনটা নেকড়ের চামড়া পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়..........
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ৩:২৮