
চড়ুই-ডাকা ভোর-পর্ব...
ভোরে ঘুম ভেঙ্গেছে একগাদা শহুরে চড়ুইয়ের কিচির-মিচিরে। রাতে একটা এসাইনমেন্টের কাজ শেষ করার চেষ্টা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমুতে গেছি দুটোর দিকে। চোখ খুলে দেখি মনিটরটা ড্যাবড্যাব করে এখনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
বারান্দার দরজা খোলা ছিল, তাই এই শব্দ বিপত্তি। চোখে ঘুম আর একগাদা ক্লান্তি নিয়ে বারান্দায় এসে দেখি ...চড়ুইয়ের মেলা বসেছে। বারান্দার গ্রিল, টব, মেঝেতে বসে একমনে কিচির-মিচির করছে। আমাকে দেখে কয়েকটা পালালেও বাকিদের কোন বিকার নেই। মনে মনে একটা ঝাড়ি তৈরি করেও, আকাশ দেখে থেমে গেলাম। ...আজকে যে ফাল্গুনের প্রথম দিন.. ভোরের আকাশের ক্যানভাস সেটা মনে করিয়ে দিল।
থাক বাবারা... ছানা-পোনা নিয়ে মনের সুখে ক্যাচক্যাচ কর।
অলস-দুপুর পর্ব...
মেইলবক্সে কয়েকটা শুভেচ্ছা জমে আছে দেখলাম। ...তার মধ্যে জনৈকা ডিজুস আমাকে হেপ্পি বসন্ত ২০০৯ জানিয়েছেন, আর তাদের বসন্ত ফেস্টিভ্যালের আমন্ত্রণ...।


আমার সাথে এখানে আমার এক কাজিনও থাকে। উনি মৈনাক পর্বত বিশেষ। প্রতি শুক্রবারে উনি গোসলের পর উদোম গায়ে ওজন মাপা মেশিনে চাপেন। আর তারপর পাশে রাখা খাতায় রিডিং লিখে রাখেন। ...তবে ৮৫ কেজির ভুক্তির পরের সব ভুক্তিতে লেখা "আফসোস"!! যতদিন পর্যন্ত বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে ততদিন এটা লেখা হবে।
...দুপুরে দেখি হেভি মান্জা দিয়ে হলুদ হয়ে বেরুচ্ছে। আজকে শুক্রবার হওয়ায় একটা সুবিধা হয়েছে। অফিসওয়ালারাও আজকে মুডে আছে।
তবে এই বেচারা বছরের বেশিরভাগ সময়েই হৃদয়জনিত সমস্যায় জেরবার থাকেন।
আমি এখনও ওনার বালিকা সখীদের মধ্যে কে শুধু বন্ধু আর কে বিশেষ বন্ধু বের করতে পারিনি।
উদাস বিকাল পর্ব...

মাঝে আমি-তুমি মার্কা গানশোনা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কি দরকার দুঃখ্য বিলাস করে। সব রকম দুঃখ্য-দুঃখ্য-ভাব পাশ কাটিয়ে যাবার চেষ্টা করি অকারণ ব্যস্ততার খোলসের মাঝে থেকে।
তারপরও আজকাল ব্লগের জন্য কিছু চমৎকার গান শোনা হচ্ছে।
সম্ভবত প্রকৃতি চায় ...আমরা কিছুটা দুঃখ্য, কিছুটা উদাসী আমেজ জীবণের গল্পে মিশিয়ে নেই।
...তাই সবকিছু ভুলে থাকতে চাইলেও স্নিগ্ধ ভোরের রংছুট আকাশ, আলতো করে ছুয়ে যাওয়া বাতাস, ঘুমধরানো দুপুর, নতুন পয়সার মত ঝকঝকে চাঁদ... সবাই যেন কারো রেখে যাওয়া একটা শূণ্যস্থানের কথা বার বার মনে করিয়ে দিতে চায়।
বসন্ত এবং গোধূলী পর্ব...
আজকের শেষ বিকেলের আকাশটা সেইরকম ছিল। সম্ভবত আকাশ দেবতার রঙছিটানোতে আজকের স্পন্সর ছিল "বার্জার বা এশিয়ান পেইন্টস"। ....অনেকদিন পর ছাদে দাড়িয়ে সূর্য্যটাকে ঘুমুতে যেতে দেখলাম। ...ভূগোলের ব্যাখ্যা যাই হোক না কেন... পিচ্চিকালে আমার এটা ভাবতে খুব ভাল লাগত... সূর্য্যটা সারাদিনের কাজ শেষে ঘুমুতে যাচ্ছে। ...নিজে ঘুমুতে যাবার আগে মনে মনে ভাবতাম কাল সকালে সূর্য্যেরও আগে উঠতে হবে।
শেষ বিকেলের হালকা ঠান্ডা মেশানো বাতাসে বুঝলাম ...ভেতরে কোথাও কোন বরফে বসন্তের আঁচ লেগেছে। হৃদয়ের কোন মেরু থেকে বরফ গলে আসা পানিটা অকারণেই চোখ ভিজিয়ে আকাশটা ঝাপসা করে দিচ্ছিল।
চোখ তুলে উপরে চেয়েছিলাম এই আশায়... হয়ত কোন বাতাস করুণা করে চোখের ভেজাটুকু শুকিয়ে দিয়ে যাবে। ....ঝাপসা চোখে আকাশের প্রায় মুছে যাওয়া রঙগুলোর মাঝে হটাৎ করেই একটা চেনা রঙ চোখে পড়ল... যেটাকে ভালবাসার ...অথবা ...কষ্টের রঙ বলা যায়।
বুঝলাম... আমার মত আকাশেও কারো বুকে ক্ষরণ হয়ে চলেছে...।
ফেনায়িত আজাইরা প্যাঁচালের জন্য ...দুস্কিত,আফসোসিত...।
