অনেকেই পেটের দায়ে কিংবা মনের আনন্দে বিনা দাওয়াতে বিয়ে খেতে যায়। কিন্তু সহজ কিছু কৌশলের অভাবে নানা রকম অস্বস্তিকর মুহূর্তের মুখোমুখি হতে হয় এঁদের অনেককেই। যাঁরা বিনা দাওয়াতে বিয়ে খেতে যান, তাঁদের জন্য কিছু সহজ কৌশল দেওয়া হলো। এগুলো প্রয়োগ করে বিনা দাওয়াতে বিয়ে খেতে গিয়ে আপনাকে কোনো অসুবিধায় পড়তে হবে না।
*কার বিয়ে, সেটা জেনে নিতে হবে সবার প্রথমে। এতে প্রাথমিক নিরাপত্তা জোরদার হয়।
* ভালো কাপড় পরে যেতে হবে। ইস্তিরি করা কাপড় হলে সবচেয়ে ভালো। নিজের না থাকলে বন্ধুর কাছ থেকে ধার করে নিন।
* পাত্র আর পাত্রীর নাম সংগ্রহ করে ফেলতে হবে। যদি আরও কিছু তথ্য সংগ্রহ করা যায়, সেটা আরও ভালো। পাত্র-পাত্রীর নাম ঠোঁটস্থ রাখতে হবে। এতে আপনি বিয়ের অনুষ্ঠানের পুরো সময়ে নানা রকম সুবিধা পাবেন।
* সাধারণত পাত্র কিংবা পাত্রী মঞ্চে রোবটের মতো বসে থাকে। খাওয়ার আগে একবার মঞ্চ থেকে ঘুরে আসতে পারেন। পাত্রীর কাছে গিয়ে নিজেকে বরের ভাইগোত্রীয় কেউ পরিচয় দিয়ে পাত্রীকে অবশ্যই ভাবি সম্বোধন করবেন। পাশাপাশি ‘ভাইয়ার জন্য পারফেক্ট বউ’, ‘ভাইয়ার সঙ্গে মানাবে’, ‘ভাবি হিসেবে যাঁকে কল্পনা করেছি একদম সে রকম’ এই টাইপের কিছু কথা শুনিয়ে আসতে হবে। একইভাবে বরের কাছে গিয়ে নিজেকে কনের ছোট ভাইস্থানীয় কেউ পরিচয় দিয়ে তাঁকে সোজা দুলাভাই সম্বোধন করতে হবে। পাশাপাশি ‘আপুর জন্য এ রকম বরই দরকার’, ‘আমার আপুর জন্য পারফেক্ট বর’, ‘হ্যান্ডসাম দুলাভাই’ ইত্যাদি কিছু কথা এখানেও শোনাতে হবে। এর ফলে আপনার নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি বাড়তি সমাদরও জুটতে পারে।
* বর ও কনের সঙ্গে এর আগের কৌশলটি প্রয়োগ করার সময় একটা সেলফিও তোলা যেতে পারে। এর ফলে মঞ্চের দিকে নজর রাখা মানুষগুলো আপনাকে সন্দেহ করার অবকাশই পাবে না।
* খেতে বসে অনেক গল্প করবেন। তবে গল্প করার আগে বর-কনের বয়স দেখে নেবেন। সেই অনুযায়ী গল্প সাজাতে হবে। যেমন ধরি, কনের নাম শিল্পী। আপনি এমন গল্প বলতে পারেন—আরে শিল্পী তো অঙ্কে দুর্বল ছিল। কত বলতাম অঙ্কটা শেখ। কিন্তু শিখত না! সেদিনই বুঝেছিলাম ওকে দিয়ে সংসার ভালো হবে। হা হা হা! আজ ওর বিয়ে খাচ্ছি। এ ছাড়া বর-কনের কাছের মানুষ পরিচয় দিয়ে আরও নানা রকম স্মৃতিচারণা করতে পারেন। এর ফলে আপনি ওয়েটারকে হালকা ঝাড়ি দিয়ে বাড়তি রোস্ট আদায় করে নিতে পারবেন। প্রয়োজনে গল্প বলবেন, ‘তৌহিদ (বর) বলেছিল, ওর বিয়েতে আমার জন্য দুইটা রোস্ট বরাদ্দ থাকবে। এখন ওকে কি স্টেজ থেকে ডেকে নিয়ে আসব?’
* মুরব্বি দেখামাত্রই সালাম দিতে হবে। প্রয়োজনে শরীর-স্বাস্থ্যের কী অবস্থা, সেটাও জিজ্ঞেস করতে হবে। তবে সেটা পরিমিতভাবে। নইলে বিয়ে খাওয়ার বদলে ধরা খাওয়ার আশঙ্কা আছে।
* কখনো কনফিডেন্স হারানো চলবে না। মনে মনে বিশ্বাস করবেন, আপনি আসলে আপনার আপন কারও বিয়ে খেতে যাচ্ছেন। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো, সেখানে আপনাকে কেউ চেনে না।
* খাবার শেষে বেশিক্ষণ অবস্থান করবেন না। অনেকেই আবেগে পড়ে, প্রেমে পড়ে খাবার শেষেও অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে। খাবার শেষে সঙ্গে সঙ্গে স্থান ত্যাগ করতে হবে।
লেখা: কাসাফাদ্দৌজা নোমান [ Prothom Alo , রস+আলো ]
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৩৪