বাঁধাহীন ভয় নয় অথবা ভয়হীন বাঁধা নয়--আসুক বিপদসঙ্কুলে ভরা বাঁধা, ভয়। প্রাণসম্পদে পরিপূর্ন এ সময়ের যুবকরা মানবে না কোন বাঁধা, ভয়, কোন অজুহাত; আপস করবে না কোন অসত্যের সাথে। পূর্বপুরুষের মত সত্যের কঠিন আঁকা-বাঁকা পথ বেয়ে সমকালের শ্যাঁওলা পথের শত বাঁধা ডিঙিয়ে মহাকালের নতুন প্রাণে জাগাবে নতুন আলোর স্রোতধারা।
সময়ের বর্তমান ধারা বড়ই পীড়াদায়ক। আলোকিত অন্ধকারের মানুষেরা ছুটছে উত্তরবিহীন অন্ধকার জীবনে। বুর্জোয়া গণতন্ত্রের এ দেশের পথে পথে লোভ-লালসার ছড়াছড়ি। দুধ বিক্রেতা দুধে নদীর পানি মিশিয়ে, কলা বিক্রেতা কার্বাইড নামক ক্যামিকেল বিষ দিয়ে কলা পাকিয়ে বেশী লাভবান হয়ে আরাম করে খাচ্ছে তার মত লাভবান ভেজাল খাবার বিক্রেতার হোটেলে। মুরগী বিক্রেতা পাথর মিশানো খাবার মুরগীকে জোর করে খাইয়ে ওজন বাড়িয়ে অথবা মরা মুরগী বিক্রি করে কোন অসৎ বিক্রেতার কাছে। ডাব বিক্রেতা কচি ডাবের পানি সিরিঞ্জ দিয়ে বের করে গ্লাসে ভরে রিকসা অথবা ভ্যানওয়ালার কাছে বিক্রি করে আবার খাবার স্যালাইন ভরে বিক্রি করছে বেশী লাভের আশায়। ঔষধ বিক্রেতা প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ঔষধ বিক্রি করছে অথবা বেশী লাভের জন্য প্যাথিডিন এ্যাম্পল, নেশার বড়ি বিক্রি করছে তার ছেলের সমবয়সী কোন সন্তানের কাছে। আবার কোন নেশাখোর ছিনতাইকারী কালোবাজারী ব্যবসায়ীকে খুন করে সব ছিনিয়ে নিচ্ছে।
এ দেশের প্রতিটি মানুষ প্রতিটি মানুষকে ঠকাচ্ছে। কেউ বুঝতে চাইছে না--এ লোভ লালসার স্বর্গ শুধু ক্ষনিকের। অন্যায়, জুলুম, ফাঁকিবাজি সাময়িক লাভের অর্থ বেশীদিন থাকে না। এ অর্থ চলে যায় নিজের অথবা পরিবারের চিকিৎসার খরচে অথবা অন্য কোন চতুর ব্যবসায়ীর পকেটে। এ যেন, জলজ প্রানীর খাদ্যচক্র। এ অন্ধকার জগত থেকে এ দেশের সৎ যুবকরাই পারে এ চোখ থাকা অন্ধ মানুষদের পথ দেখাতে। এ অন্যায়ের প্রতিবাদে কোন আপোষ নয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিষাক্ত সময়ের রাহুগ্রাস থেকে বাঁচাতে যুবকদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। ভেজাল দুধ বিক্রেতাকে চাক্ষুষ দেখাতে হবে কিভাকে সে ভেজাল খাচ্ছে। খাদ্য বিক্রেতাকে বুঝাতে হবে এ লাভ, লাভ নয়; এ অসৎ টাকায় তার সন্তান চলে নেশায়। বুঝাতে হবে সব অসৎ মানুষদের--এ লাভ তার জীবন থেকে কেড়ে নেবে ইহকালের শান্তি আর মৃত্যুর পর পরকালের শান্তি ।
ঘুষখোর পুলিশ অথবা চিহিৃত দুর্নীতিবাজদের বুঝাতে হবে তার অসততা কিভাবে সমাজে বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে; কিভাবে তার দুর্নীতির অর্থে সন্তান বিপথে যাচ্ছে। এ দেশ, এ জাতির কাছে, নিজের বিবেকের কাছে প্রতিটি মানুষের দায়বদ্ধতা আছে; যুবকদের আছে কঠিন দায়িত্ব। এ মহৎ কাজের পথে যুবকরা কোন বাঁধাই মানবে না। সত্যের পথে যত বাঁধা আসুক নজরুলের মত করে বলতে হবে, নব নবীনের গাহিয়া গান--সজীব করিব মহাশ্মশান--আমরা দানিব নুতন প্রাণ--বাহুতে নবীন বল--চল চল চল...।