হ্যা, প্যারিসে বর্বোরচিত হামলার ২৪ঘন্টা পার হয়েছে। এর মধ্যেই আমরা অনেকেই এই হামলার নিন্দা জানিয়ে নানাধরনের বিবৃতি দিয়েছি, আমরা প্রোফাইল পিকচারে ফ্রান্সের পতাকার শেড দিয়েছি, সেই সাথে আমাদের আরেকদলের কাউ কাউ দেখতেছি গেল গেল বলে। কথাগুলো এই গেল গেল নিয়েই আসলে। আগেই বলছিলাম, এই হামলার পর কিছু মানুষ বলেই বসবে কতগুলো ইহুদি-নাসারা মরছে, ভালোই হইছে। এইটা নিয়া নাঁকি কান্নার কি আছে? সে সাথে সিরিয়া, গাজার টপিক ও আসছে অবধারিতভাবে। এই সিরিয়া, ফিলিস্তিন থেকে মানুষগুলো ইউরোপে পালাচ্ছে, তাদের আশ্রয়টা দিচ্ছে কারা?
শালার হিপক্রেট মডারেট মুসলিম জাত।
মুসলিম নির্যাতন কি শুধু গাঁজাতে হয়? মুসলিম উম্মাহর পরম বন্ধু রাশিয়া যখন এশিয়া মাইনরের মুসলিম দেশগুলোয় নির্যাতন করেছিলো, আপনারা সেটাকেও জায়েজ বানাচ্ছেন। চীনের উইঘুরদের সম্পর্কেতো আপনাদের জ্ঞান শূন্যের কোঠায়। কিছু বলেন?
ইরাকের সাদ্দামও স্বৈরশাষক ছিলেন, হিটলার যেভাবে ইহুদি-নিধন করছিলো, সেভাবে কুর্দিদের মারছে। এই কুর্দিরাতো ইহুদি-নাসারা না, এরাও মুসলিম। কিন্তু তবুও সাদ্দাম আপনাদের চোখে হিরো। গাদ্দাফি, আসাদ এরা যেভাবে লিবিয়াতে, সিরিয়াতে তাদের বিরোধিদের নিধন করেছে, সে সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই ফ্রান্সে আশ্রয় নেয়া কোন লিবিয়ান, সিরিয়ান উদ্বাস্তুকে গিয়ে প্রশ্ন করেন, জবাব পেয়ে যাবেন। জানি তবুও এদের অপরাধগুলো আপনাদের চোখে পড়বেনা। এইযে কয়দিন আগে আপনাদের মুসলিম উম্মাহর রক্ষাকর্তা সৌদি আরব ইয়েমেনে হামলা চালালো, বলেন সেটাও জায়েয। আর তুরস্ক, সবচেয়ে শক্তিশালী মুসলিম দেশ, তারাও ইরাক-সিরিয়ার সাথে নিজেদের সীমান্তে অতিরিক্ত সেনামোতায়েন করেছে, যাতে শরনার্থী প্রবেশ করতে না পারে। ফিলিস্তিনের গাজার আজকের এই পরিনতির জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী হামাস-আল ফাত্তাহর মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ। এখন মডারেট মুসলিমের দল প্রশ্ন করবে, হামাস-আল ফাত্তাহ কি? আমি শতভাগ নিশ্চিত।
ভাইরে, এখানে যা চলতেছে নিখাদ পলিটিক্স। দয়া এটার সাথে ধর্মের জগাখিছুড়ি পাকায়েন না, বড় বিস্বাদ লাগবে।
এইবার বলি ফ্রান্সের কথা। বিশ্বাস করুন বা নাই করুন, এই ফ্রান্স আমেরিকা, ব্রিটেনের চেয়েও অনেক বড় মানের সন্ত্রাসবাদ চাষী। বিশ্বজুড়ে নিজেদের অস্ত্রব্যাবসা বৃব্ধির জন্য এরা কোনরকম বাছ-বিচার মোটামুটি সবার কাছেই অস্ত্র বিক্রি করে। এমনকি আমাদের দেশের স্বনামধন্য অস্ত্রব্যাবসায়ী মুসা ইব্রাহীম আজকের মুসা ইব্রাহীম হয়েছে এই ফ্রান্সেরই অস্ত্র ব্যাবসার দালালি করে। যাই হোক, এতো কিছুর পরও কেন ফ্রান্স? স্বীকার করুন বা না করুন, এটার জন্য দায়ী সেই ধর্মীয় সন্ত্রাস। যে সন্ত্রাস আপনার আমার মতো কিছু মডারেট মুসলিম সর্বদা বুকে ধারন করে আছি।
আজ যারা ফ্রান্সের সাথে সিরিয়া-গাজা টপিক টানতেছেন, দেখা গেলো আগামীকাল যখন আপনাদের উপর সন্ত্রাসীহামলা হবে, আমিও তখন সিরিয়া-গাজার কথা বলবো। দয়া তখনকার এক্সপ্রেশনটা আমাকে দেখাত ভুলে যাবেন না। দেড়শজন মানুষকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে, এখানেও আমরা ধর্মের বিভাজন টানছি আর সাথে "সিরিয়ান গাঁজা" টানছি।
হায়রে মডারেট মুসলিম জাতি.......
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৬