আমাদের বাঙ্গালী জাতির, বিশেষ করে বাংলাদেশী বাঙ্গালীদের আসলে চুলকানীর বিষয়ের কোন অভাব হয়না। আমাদের সবার যে নানা কারনে, নানা ধরনের চুলকানী হয়, এটা কমবেশী সবাই বুঝে। এখন কোরবানীর ঈদের মৌসুম চলছে। আপাতত কোরবানী সংক্রান্ত কিছু চুলকানীর ব্যাপারে নিজের মত প্রকাশের চুলকানী আমারও একটু উঠেছে আরকি।
তো, এই আকাশে-বাতাসে কোরবানীর হাওয়া বইতে শুরু করার পরই আমাদের সবারই আলোচনার মুখ্য বিষয় থাকে কোরবানীর গরু। এই কোরবানীর গরু নিয়ে নানা মানুষের নানা মত, ঢং-ঢাং, আদিখ্যেতা এবং বিশেষজ্ঞ মতামত সব কিছুরই একটা ঢল নামে আমাদের সমাজে। ১০ বছরের বাচ্চা থেকে শুরু ফোকলা দাঁতের বুড়ো দাদুরা, সবাই বনে যান একেকজন গরু-ছাগল বিশেষজ্ঞ। ছোটবেলা থেকেই আমরা এ বিষয়গুলো দেখতে দেখতে খুব ভালোভাবেই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি।
তবে গত বছরখানেক ধরে এই গরু-ছাগলের সাথে হালের সেলফি মিলে তেরি হয়েছে এক ধরনের রেসিপি। যার নাম দেয় হয়েছে কাউফি।
আসলে আমাদের দেশে বিনোদনের এতোই অভাব যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় এসব জিনিস খুব একটা খারাপ এখন আর লাগেনা। ছুটির দিনের বিনোদন হিসেবে বেশ ভালো আইটেমই বলা যায়।
কোরবানী আসার পর মানুষের গরুর সাথে কাউফেস করে কাউফি, গরুর হাটের চেকইন বা কোপাকুপি স্ট্যাটাস; ঈদের দিনের কাজের ফাঁকে বিনোদন হিসেবে খুব একটা যে খারাপ লাগে তা কিন্তু নয়। আমি বেশ হলফ করেই বলতে পারি, সবাই এতে বেশ ভালোই আনন্দভোগ করেন। যাকে বলে একেবারে নিখাদ বিনোদন(ভ্যাটমুক্ত)।
এরপর দেখতে পেলাম এসবের বিরোধীতা করে নানাজনের নানামত, নানাধরনের চুলকানী। মানুষের এত এত চুলকানী দেখে সিরিয়াসলি বলছি মাইরি, আমারো চুলকানী উঠে গেছে।
আরে ভাই ফেসবুক স্ট্যাটাসবক্সে লেখাইতো থাকে "Whats on your mind"। এখন লোকজনের মাইন্ডে যদি এসবই থাকে, তাতে দোষেরকি আছে?
সবার চিন্তুা-ভাবনা যে উচ্চমার্গীয় ভাবুক পর্যায়ের হতে হবে, এটা কোন সংবিধানে লেখা আছে?
আর মানুষ এসব যে কারনেই দিয়ে থাকুকনা কেনো, এতেতো ভার্চুয়ালী হলেও একে অন্যের খোজটাতো পাচ্ছে। আজকাল যেখানে আমরা পাশের ফ্ল্যাটে থাকা মানুষটাকেও ঠিকমতোন চিনিনা, সেখানে এই ধরনের পোস্টে আর যাই হোক, মেকি হলেও একধরনের সামাজিকতা রক্ষাতো হচ্ছে। এতে এতো চুলকানীর কি আছে?
আর উচ্চমার্গীয় চিন্তা-ভাবনা ব্যাপারটা না হয় আলাদাই থাকুক, সামাজিকতাও না হয় চুলোয় গেলো। কিন্তু মানুষ যে নিজেদের এতো এতো সমস্যার মাঝেও রসিকতা, হাস্যরস ভুলে যায়নি, সেটাও বা কম কিসের? দিনকাল এখন এমন হয়েচে, মানুষের চুলকানীর জ্বালায় ইদানীং হাসিঠাট্টা করাটাও দায় হয়ে হয়ে পড়েছে।
কেন রে ভাই? থাকতে দিন না একটু শান্তিতে। এসব উচ্চমার্গীয় কথার মারপ্যাচের মাঝে দিন না একটু আমাদের প্রাণখুলে হাঁসতে, মনের ভাবগুলো প্রকাশ করতে।
আমি জানি, এটা পড়ে অনেকেরই হযতো এখানে-ওখানে চুলকানী হবে। সত্যিকথা বলতে কি আমার নিজেরও চুলকানী আছে বিধায় এতসব লিখেছি।
এর প্রেক্ষিতে আমি আমার ডাক্তার-ফার্মাসিস্ট ভাই এবং বন্ধুদের অনুরোধ করবো, তারা যেনো এসকল চুলকানী নিয়ে আরো বিস্তর গবেষণা করেন এবং এর জন্য সঠিক চিকিৎসা এবং ওষুধ আবিস্কারে একটু মনোযোগী হন। আর আপাতত সাময়িকভাবে চুলকানী বন্ধ করার জন্য যদি পারেন কোন মলম বা ওষুধ প্রেসক্রাইব করে দেন, তাহলে জাতি অশেষ উপকৃত বোধ করবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২৯