somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কানাডায় জব অফার: স্বপ্ন বনাম বাস্তবতা

২০ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবি সূত্র: গুগল

জাভেদ সাহেব কানাডার টরেন্টো শহরে থাকেন। বছর দুয়েক আগে গিয়েছেন ইমিগ্র্যান্ট হয়ে। বাংলাদেশে থাকাকালীন কানাডার ইমিগ্রেশন নিয়ে ব্যবসা চালাতেন। এরপর ফেসবুকে তিনি এখন সেলিব্রিটি।

কানাডার ইমিগ্রেশন বিষয়ে যথাযথ যোগ্যতা এবং লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি তিনি কানাডা থেকে বাংলাদেশে যাবেন কানাডার ইমিগ্রেশন, জব ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট এবং স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে সেমিনার করে কিছু ক্লায়েন্ট ধরতে। কানাডা থেকে বাংলাদেশে যাচ্ছেন, ইমিগ্রেশনপ্রত্যাশী বাংলাদেশিদের কাছে বেশ একটা ভাব নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার এটাই তো সুবর্ণ সুযোগ! ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের পত্রপত্রিকায় কিংবা রাস্তার মোড়ে প্রায়ই আজকাল কিছু বিজ্ঞাপন দেখা যায়। কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সুনিশ্চিত।

কিংবা মাত্র সাত দিনের মধ্যে বিশাল সুযোগ-সুবিধাসহ কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় পাঠিয়ে দেয়া হবে। নিঃসন্দেহে বিজ্ঞাপনগুলো চটকদার।

বাংলাদেশের মানুষ কানাডায় যাওয়ার আশায় যথাযথ তথ্য যাচাই না করেই প্রতিনিয়ত এ ধরনের বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ হয়ে নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ বিসর্জন দিচ্ছেন এই ধরণের কিছুসংখ্যক দালাল এবং এজন্সিদেরকে।

একটি ভ্যালিড জব অফার নিয়ে কানাডা যেতে পারলে কেমন হতো আসলে? নিঃসন্দেহে দারুণ একটি ব্যাপার হতো এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু আসলেই কী বাংলাদেশ থেকে প্রকৃত জব অফার পাওয়া সম্ভব?

কোন কানাডিয়ান কোম্পানি যদি কানাডা সরকারের সব নিয়মকানুন মেনে চলে জব ভিসার নিশ্চয়তা দেয়, তবে সম্ভব। কিন্তু বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশ থেকে কানাডায় জব ভিসা কিংবা ওয়ার্ক পারমিট পাওয়াটা কঠিন বিষয়।

কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কোনো কানাডিয়ান কোম্পানি থেকে জব অফারের নামে প্রতিনিয়ত সাধারণ ইমিগ্রেশনপ্রত্যাশী মানুষদের ধোঁকা দিয়ে আসছে। এই জব অফারের বিষয়টি কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কানাডায় গিয়ে সশরীরে দেখে আসা সম্ভব নয়।

উপরন্তু, এজেন্সি কিংবা দালালদের বাইরের চাকচিক্য দেখে তাদের প্রলোভনের ফাঁদে পা দেয়াটাও কানাডায় যাওয়ার জন্যে উদগ্রীব মানুষের জন্য অস্বাভাবিক কিছু নয়।

আর সে জন্যেই জব অফারের সত্যতা যাচাই অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ এবং উক্ত তথ্য যাচাই ছাড়া কোনো পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া কোনোভাবেই উচিত নয়।

তাহলে ভ্যালিড জব অফার কিংবা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য করণীয় কী?

১. অনলাইন রিসার্চ:

জব অফার নিয়ে যোগাযোগকারী ব্যক্তি ও কোম্পানির ব্যাপারে অনলাইন রিসার্চ করুন। তাদের কোনো ওয়েবসাইট না থাকলে অফারটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ওয়েবসাইট থাকলে কন্ট্যাক্ট ডিটেইলস দিয়ে গুগলে সার্চ দিয়ে পৃথকভাবে তথ্য সংগ্রহ করুন। নামকরা নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি নিয়োগদানের জন্য তাদের কর্পোরেট ইমেইল আইডি ব্যবহার করে থাকেন।

তাই ফ্রি ইমেইল প্রোভাইডার যেমন জিমেইল, ইয়াহু, হটমেইল ইত্যাদি থেকে আগত জব অফারগুলো অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ।

২. আর্থিক লেনদেন:

জব ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার পূর্বেই যে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকুন। যখন কোনো নিয়োগকর্তা আপনাকে চাকরি দিতে চাইলে শুরুতেই বিশ্বস্ত কোনো কোম্পানি কখনোই কোনো ধরনের আপফ্রণ্ট ফি, ডিপোজিট, ট্রেনিং ফি, ভিসা ফি ইত্যাদি চাইবে না।

অনেক অসাধু ব্যবসায়ী ওয়ার্ক ভিসার দেয়ার নাম করে শুরুতে বেশকিছু টাকা ডিপোজিট মানি হিসেবে নিয়ে নেয়। ভিসা না হলে পরবর্তীতে পুনরায় অ্যাপ্লিকেশন করার সময় আর কোনো টাকা লাগবে না এই মর্মে আশ্বাসও দিয়ে থাকে।

কাজেই কোথাও টাকা দেয়ার আগে নিশ্চিত হতে হবে যে, সেটি প্রকৃতই কানাডিয়ান কোনো কোম্পানি কিনা।

৩. ওয়ার্ক পারমিটের সত্যতা যাচাই:

একইভাবে যে কোনো ওয়ার্ক পারমিটের সত্যতা যাচাই করাটাও গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করার অধিকার একমাত্র ইমিগ্রেশন, রিফিউজি অ্যান্ড সিটিজেনশিপ, কানাডা কর্তৃপক্ষের।

সুতরাং একমাত্র তাদের কর্তৃক ইস্যুকৃত ওয়ার্ক পারমিটের কপিটি আপনি অনলাইন থেকে অন্য যে কোনো ওয়ার্ক পারমিটের স্যাম্পল বা ফরম্যাটের সঙ্গে মিলিয়ে দেখুন।

কোনো এজেন্সি বা ব্যক্তি যদি আপনাকে জব অফার বা ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে থাকেন, তবে সেটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আপনি ’ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সেটেলমেন্ট’ ওয়েবসাইটে (http://immigrationandsettlement.org) প্রদত্ত ওয়ার্ক পারমিট স্যাম্পলটি দেখে নিতে পারেন।

৪. জব প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ:

সম্ভব হলে কানাডায় জব প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি ফোনে অথবা ইমেইলে কথা বলুন। কাজেই ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ব্যাপারে ভালোভাবে খোঁজখবর নিন। নিজে সচেতন হোন এবং সঠিক তথ্য জানুন। ইমিগ্রেশন দালাল কিংবা ফেসবুকীয় তথাকথিত কনসালট্যান্টদের লোভনীয় প্রস্তাবের দিকে পা বাড়ানোর আগে অবশ্যই একাধিকবার ভাবুন।

সূত্র: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৫২
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×