এবার সামার ভ্যাকেশনে আমেরিকা এসেছি বেশ কিছুদিন হলো। আমেরিকা বলতে নির্দিষ্টভাবে আমার প্রিয় জায়গা সানশাইন স্টেট খ্যাত ফ্লোরিডা রাজ্যের ট্যাম্পা বে এলাকায়। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। আজকের তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৩৬ ডিগ্রী সে.। আমি থাকি কানাডা'র ঠাণ্ডা আবহাওয়ায়। অথচ ফ্লোরিডা'র এই প্রাণ ওষ্ঠাগত গরমে মানুষ কিভাবে থাকে, আমি ভেবে পাইনা! তাই ভ্যাকেশনে এসেছি ঠিকই, কিন্তু পারত:পক্ষে দিনের বেলায় বাসার বাইরে বের হইনা।
আজ বিকেলে ভাবলাম কাছাকাছি কোথাও ড্রাইভ করে ঘুরে আসি। আমার প্রিয় ওয়েবসাইট ট্রিপঅ্যাডভাইজরকে জিজ্ঞেস করতেই জানিয়ে দিল সেন্ট পিটারর্সবার্গ এলাকার পাইনালেস পার্ক কাউন্টিতে 'জনস পাস' বলে একটা জায়গা আছে যেখানে মানুষজন মাছ ধরে, বোটিং করে আর ফাটাফাটি কিছু রেস্টুরেন্টও আছে ওই জায়গাটাতে। কাজেই দেরী না করে ফোনের জি.পি.এস-এ ঠিকানা লিখে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে দিলাম। পড়ন্ত বিকেলে চলে এলাম 'জনস পাস বোর্ড ওয়াক' এলাকায়।
গাল্ফ অব মেক্সিকোর পাশেই ম্যাডেরিয়া সমুদ্র সৈকত। আর তার পাশের ছোট্ট ভিলেটির নাম 'জনস পাস'। আজ শনিবার বন্ধের দিন। গিয়ে দেখি বেশ জমজমাট অবস্থা। ঘোরাঘুরির ফাঁকে সুযোগ বুঝে কিছু ছবি তুলে নিলাম যার কিছু অংশ আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো:
গাড়ি পার্ক করে রওনা দিলাম জনস পাসের উদ্দেশ্যে। আজ শনিবার ছিল বলে অনেক কষ্টে পার্কিং পেলাম। একঘন্টার জন্যে ২ ডলার।
এবার পায়ে হাঁটা পথে জনস পাসের উদ্দেশ্যে
আর অল্প একটু গেলেই ডেস্টিনেশন
যাবার পথে দেখি এই মহিলা কিছু পক্ষীকুলকে কি যেন একধরণের খাওয়া দিচ্ছেন।
পাখীগুলোও বেশ আগ্রহভরে ভদ্রমহিলার চারপাশে ভিড় জমিয়ে খাদ্যগ্রহণে মনোনিবেশ করেছে
এই পাখিগুলোর নাম কি সারস? আমার জানা নেই ঠিক; পাখি বিষয়ে আমি একেবারেই আনাড়ি।
ডিজিটাল ক্যামেরা হাতে থাকলে শুধু শাটার চাপতে ইচ্ছে করে।
এইবার চলে এসেছি জনস পাসে ঢোকার মুখে
জনস পাসে ঢোকার রাস্তায়
জনস পাসে ঢোকার রাস্তায়
এরপরের ছবিগুলো বোর্ড ওয়াক অর্থাৎ কাঠের পাটাতনের ওপর দিয়ে হেঁটে যাবার রাস্তায় তোলা।
এই ফেরিতে করে ডলফিন ওয়াচ এলাকায় ঘুরতে যাওয়া যায়। আজ সময় ছিলনা বলে যাওয়া হলোনা। নেক্সট টাইম মিস দেওয়া চলবেনা। কি বলেন?
এবার দেখবো গাল্ড অব মেক্সিকো আর বোটিং অর্থাৎ স্পিড বোট/ নৌকা ইত্যাদি ভাড়া পাওয়া যায় এমন কিছু দোকানের ছবি:
ম্যাডেরিয়া বিচ অথবা জনস পাসে যাবার পথে এই ড্র-ব্রিজের ওপর দিয়েই এসেছিলাম। নিচ দিয়ে কোন জাহাজ বা বড় নৌকা গেলে এই ব্রিজটি সময়মতো দু'ভাগ হয়ে যায়:
এবার দেখবো পাইরটে বা জলদস্যুর জাহাজ! সত্যি জাহাজ কিন্তু! কিন্তু আমি আপনিও চড়তে পারবো। অবশ্য টাকা খরচ করতে হবে সেজন্যে!
মাছের গন্ধ পেয়ে পাখীকূল আশে পাশেই ঘুরঘুর করছিল। এরা মানুষদেরকে খুব একটা ভয়-ডর করেনা!
এই যে দেখেন, ব্রিজের কাছেই এক ভদ্রলোক পানিতে নেমে মাছ ধরছেন! আর কিছু ছেলে-মেয়ে পানিতে দাপাদাপি করছে:
এবার চলুন, ব্রিজের নিচ দিয়ে হেঁটে যাই:
ব্রিজের আশেপাশে সবাই মাছ ধরায় চরম ব্যস্ত!
ওদেরকে ডিস্টার্ব না করে চলুন আমরা ম্যাডেরিয়া বিচের দিকে এগুই:
এবার বাসায় ফেরার পালা। পার্কিং লট থেকে গাড়ি নিতে হবে:
আজ তাহলে এ পর্যন্তই। খুব শীঘ্রই আবার ঘুরতে যাবো অন্য কোথাও। আর ব্লগে শেয়ার করার চেষ্টা করবো আমার আনাড়ি হাতের তোলা ছবিগুলো। সবাইকে শুভেচ্ছা।
সূত্র: http://www.johnspass.com/