ইমরান এইচ সরকার
ব্যক্তিগতভাবে ইমরান এইচ সরকারের প্রতি আমার কোন ক্ষোভ বা বিদ্বেষ নেই। শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ নিয়ে মন্তব্য করার সময় এখনও আসেনি। কিন্তু আজকে আমার দেশ পত্রিকায় ইমরানের দাদা সম্পর্কে যে কথাগুলো এসেছে এবং তার প্রেক্ষিতে ব্লগে মূলত আওয়ামীলীগ সমর্থক ব্লগারদের ইমরানকে ডিফেন্ড করার যুক্তিগুলো দেখে কিছু না বলে পারছি না।
আমার দেশ পত্রিকার রিপোর্ট অনুসারে ইমরানের দাদা ছিলেন রাজাকার। আওয়ামীলীগ সমর্থকদের কথা হল, দাদা রাজাকার হলে নাতিকে কেন সেটার দায়ভার নিতে হবে?
ভাল কথা। কিন্তু যখন কোন বীর মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগের বিপক্ষে কোন বক্তব্য দেন তখন ঐ ব্লগাররাই আবার এক ঘৃণ্য জ্ঞানপাপীর একটা ফালতু যুক্তি উপস্থাপন করে- একবারের রাজাকার চিরকাল রাজাকার, কিন্তু একবারের মুক্তিযোদ্ধা চিরকাল মুক্তিযোদ্ধা নয়।
আবার, এই ইমরান এইচ সরকার যদি বিএনপিপন্থী হতেন এবং শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ সরকার বিরোধী অবস্থান নিত তখন এই আওয়ামীলীগ সরকারই ইমরানের পিঠের চামড়া তুলে নিত আর আওয়ামী ব্লগাররা তখন ঐ জ্ঞানপাপীর বক্তব্য তুলে লিখত- রাজাকারের বংশ রাজাকারই হয়, যেমন সাপের বাচ্চা সাপ হয়।
সহজ কথা হল- আওয়ামীলীগের পক্ষে থাকলে রাজাকারও মুক্তিযোদ্ধা, আর বিপক্ষে গেলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাও রাজাকার!
বিএনপি না আওয়ামীলীগ- কার আমলে জঙ্গীবাদ বেশি ভয়ঙ্কর?
বর্তমান মহাজোট সরকারের শীর্ষনেতা থেকে শুরু করে পাতি নেতা পর্যন্ত গলা ফাটিয়ে যে শব্দগুলো চর্বিতচর্বণ করে ফেলেছে সেগুলো হল- বিএনপি জঙ্গিবাদের প্রশয়দাতা, বিএনপির সময় দেশে একযোগে ৬৪ জেলায় বোমা হামলা হয়েছিল ইত্যাদি।
জেএমবির সেই আকস্মিক হামলায় ২ জন নিহত হন। পরবর্তীতে জেএমবি আরও কিছুস্থানে হামলা চালায়। অনলাইনের বিভিন্ন সাইটের তথ্য অনুসারে সেই সময় সর্বমোট ৩৩ জন নিহত হন। আহত হন চার শতাধিক ব্যক্তি।
অথচ বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে গত এক সপ্তাহে জামায়াত-শিবিরের তান্ডবে শতাধিক ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার। এবং আওয়ামী লীগের বাকী সময়ে আরও কত মৃত্যু দেখতে হবে একমাত্র আল্লাহই জানেন...
তার চেয়ে বড় কথা হল- জামাত-শিবির প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েই এই তান্ডব শুরু করেছে। অথচ বর্তমান সরকার শুধু পুলিশবাহিনীকে গুলি করার নির্দেশ দেয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারে নি।
ভেবে দেখুন- এর চেয়ে ভয়াবহ জঙ্গীবাদ কি বিএনপির সময় ছিল?
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৩৪