somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার প্রিয় কবি সাহিত্যিকরা ........পছন্দের চার্জশীট।

৩১ শে আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সরল স্বীকারোক্তিতে আমার আজন্ম বিশ্বাস। (আবদুল লতিফ সিদ্দীকির ভাষায়, সত্য কথা বলতে আমি লজ্জা পাইনা মাননীয় স্পীকার)

কখনও কখনও এমনও হয় যে একটা কবিতা পড়েই কোন কবির প্রেমে পড়ে গেছি। স্কুলের বইয়ে কবি পরিচিতি খুব আগ্রহের সাথে পড়তাম। বইয়ের নাম ভাল লাগলে কবিকে মার্ক করতাম।
কবি সাহিত্যিকদের মধ্যে যাদের ভালো লাগে তাদের সাথে আমার পরিচয়ের বিবরণ নিম্নে আলোচিত হল।

১। শামসুর রাহমান
কবির অনেক কবিতাই ভালো লাগে। মুক্তিযুদ্ধের কবিতা তো আছেই। এছাড়া 'টুকরো কিছু সংলাপের সাঁকো' বইটা একদিন কলেজ লাইব্রেরীতে বসে পড়লাম। বেশ ভালো লাগল। বৃদ্ধ বয়সের নস্টালজিয়াকে কবি চমৎকারভাবে চিত্রায়িত করেছেন এ বইটাতে। কান্না এসে যায় পড়লে। মধ্যবিত্ত নাগরিক জীবনের হতাশা প্রকাশে শামসুর রাহমান অতুলনীয়।

২। নুরুন্নাহার শিরীন
কবির সাথে প্রথম পরিচয় জনকন্ঠে ধারাবাহিকভাবে প্রকাম হও বাংলার ২৫০ বছরের ইতিহাসের কাব্যরূপ 'জনমনোকালকাহিনী'র মাধ্যমে। এখনও পর্যন্ত এটি আমার সবচেয়ে প্রিয় কবিতার একটি । কবিতাটি তখনই আমি পেপার কাটিং হিসাবে রেখে দেই। পত্রিকায় বই পরিচিতিতে পড়া তার একটা কবিতার লাইন এখনও মাথায় আছে, 'যখন মনে হয় যাকে ভালবাসি, সে আমার দেশ'। বাকি কবিতাটা আর পাইনি। কবির লেখনীর ধরণ সম্পূর্ণ আলাদা।

৩। রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ
তসলিমা নাসরিনের স্বামী, ৩৩ বছরে মৃত্যু ইত্যাদি পরিচয়ের সূত্র ধরে আমি লক্ষ্য করি যে অসাধারণ বেশ কিছু কবিতার রচয়িতা তিনি। তার নাম লিখে ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে বিনা পয়সায় কবিতা আহরণের পিছনে ব্যান্ডউইথ খরচ করতে থাকি। তার কবিতার একটি সংগ্রহ পাবেন এ সাইটটিতে
http://www.rashal.com/blog/?p=662

৪। আল মাহমুদ
আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় এই নিভৃতচারী প্রতিভাবান কবির প্রতি আমার আকর্ষণের প্রধান কারণ তার কাব্যগ্রন্থের নাম। মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো, বখতিয়ারের ঘোড়া, সোনালী কাবিন নামগুলো শুনলেই বইগুলো পড়তে ইচ্ছা করে। তবুও কবির খুব কম কবিতাই আমার পড়া। সার্চ দিতে দিতে আঙ্গুল ব্যাথা করার পর সোনালী কাবিনের একটা খন্ডিতাংশ পেলাম। ওই rashal.com এ। প্রিন্ট আউট করে মুখস্থ করলাম। একদিন লাইব্রেরীতে গেলাম বইটা খুঁজতে কিন্তু নিরাশ হতে হল। জেলা শহরে কবিতার বই পাওয়া দুরূহ। আমার বাজেট আবার কাব্যসমগ্রকে সাপোর্ট করেনা।

৫। কবিগুরু
ইনি বাংলা কাব্যের পুরোধা। অভিসার, দুই বিঘা জমি, সোনার তরী, নীল নবঘনে, সামান্য ক্ষতি ইত্যাদি কাব্যের ব্যাপারে আমার আগ্রহ ছিল। সঞ্চয়িতা উপহার পাবার পর তাকে আরও ভালো করে চিনলাম। তবে তার খ্যাতির বাইরে আমি নতুন করে কিছু আবিষ্কার করিনি। হয়তো তা আমার ব্যর্থতা।

৬। কাজী নজরুল ইসলাম
বিদ্রোহী কবিতার প্রতি শৈশব থেকেই আমার দুর্নিবার আকর্ষণ। ছোটবেলায় আমার বাবার মুখে 'মসজিদে কাল শিরনি আছিল অঢেল গোশত রুটি' শুনতে খুব ভাল লাগত। রচনার বইয়েও তার সম্বন্ধ অনেক পড়েছি।

৭। পল্লকিবি জসীমউদ্দীন
কবিকে আমি বিশেষভাবে কখনও লক্ষ্য করিনি। ৮ম শ্রেনীতে বৃত্তি পরীক্ষার সময় আমার গৃহশিক্ষক আমাকে একটি রচনার শিট দেয়। সেখানকার রচনাগুলো আমার কাছে এক একটি শিল্পমাধ্যম বলে মনে হয়। সেখানেই আমার প্রিয় লেখক(বিস্মিত হবেন না)/কবি রচনায় জসীমউদ্দিনকে আমার স্যার এত সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন যে আমি কবির প্রেমে পড়ে গেলাম। একদিন পত্রিকায় দেখলাম 'আগুনে জ্বলুক তারা, শেষ হোক তাদের বেঁচে থাকার দিন/ যারা অবেলায় জাতিকে করেছে পিতৃহীন' কবির মাজারে গিয়ে কবির কিছু অসাধারণ পঙক্তি চোখে পড়ল। কবির প্রতিভা আজও মূল্যায়িত হয়নি ।

৮। নির্মুলেন্দু গুণ
তিনি যেন একটু কেমন। বড় নগ্নভাবে সবকিছু খুলে বলেন। তার ৭ই মার্চের কবিতাটি আমার বেশ পছন্দের।

৯। সৈয়দ শামসুল হক
বাংলা সাহিত্যে রংপুর অঞ্চলের একমাত্র বিখ্যাত ব্যক্তি সম্ভবত তিনিই। তাঁর ব্যাপক মিডিয়া কাভারেজ, স্ত্রীর বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী খ্যাতি, তসলিমা নাসরিনের সাথে প্রেম, রংপুরের আঞ্চলিক ভাষাকে সাহিত্যে ব্যবহার ও নুরুলদিনের সারাজীবন আমাকে কবির প্রতি আকৃষ্ট করে।
তার কোন কবিতার বই আমার কাছে নেই। নুরুলদিনের সারাজীবন বইটা খুঁজছি।

১০। আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ।
নোটন নোটন পায়রা কবিতাটি কি তার লেখা? কবির বিখ্যাত কবিতা কিংবদন্তীর কথা পাওয়ার সাথে প্রিন্ট আউট করে বহুবার পড়লাম। বৃষ্টি ও সাহনী পুরুষের জন্য প্রার্থনা, সাত নারীর হার বইয়ের নামগুলো খুব সুন্দর কিন্তু পড়ার সৌভাগ্য হয়নি।

১১। সিকানদার আবু জাফর
তার সাথে প্রথম পরিচয় ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে মহাকবি আলাওল নাটকের মধ্য দিয়ে। সেদিন পড়লাম কবির বাংলা ছাড়ো কবিতাটি। ভাল লাগল।

১২। জীবনানন্দ দাশ
এনার নাম এত পড়ে দেখে অনেকেই হয়তো রাগ হবেন। বড়বোনের রচনা বইয়ে তার একটি কবিতার লাইন পড়ে ভাল লেগেছিল (পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে/ পৃথিবীর সব প্রেমে আমাদের দুজনার মনে)
আরও বেশ কিছু নাম আছে। আরেকদিন বলব

৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×