গত এক দেড় বছরে দফায় দফায় দেশে লকডাউন হয়েছে।এক শ্রেণীর মানুষ আছে লকডাউন হলেই যাদের প্রাণের ভেতর ধরফর করতে থাকে।ভাল লাগছে না রোগে আক্রান্ত হয়ে তারা ঘর থেকে বের হওয়ার সুযোগ খুঁজে বেড়ায়।আজকেও দেখলাম কারা যেন পতেঙ্গা ঘুরতে গেছে।দেশে ছড়িয়ে পড়া ডেল্টা ভেরিয়েন্ট তাদের মনে কোনো ভীতি সঞ্চার করতে পারছে না।
আরেকদল আছে যারা এই সুযোগে অতি ক্রিয়েটিভ হয়ে উঠেছেন।মানুষকে সুস্থ বিনোদন (!) দেয়ার জন্য যারা উঠেপড়ে লেগেছেন।আপনারা কি ভাবছেন আমি মাহফুজুল্লা রহমানের কথা বলব।নো ব্রাদার আমি বলছি জিরো আলমের কথা।ভদ্রলোক ইংরেজি এবং হিন্দি গান যখন গেয়েছিলেন তখনো ভাবিনি চাইনিজ ও আরবি ভাষার গানও আসবে।তা যখন আসলো তখনো ভাবিনি ভদ্রলোকের ক্রিয়েটিভিটি এশিয়া ছাড়িয়ে আফ্রিকার পথে যাত্রা করবে।আজ সন্ধ্যারাতে হুক্কাহুয়া টাইপ একটা গান দেখে প্রায় কোমায় চলে যাচ্ছিলাম। জয় হোক ক্রিয়েটিভিটির!
এবার আসি আরেক শ্রেণীর বাঙালির কথায়।এদের রয়েছে ডিপ্রেশন বিলাস।বর্তমান সময়ের হাজারটা বাস্তব সমস্যা তাদের মনোজগতে নাড়া দিতে পারে না।এরা কথায় কথায় ডিপ্রেশনে চলে যায়। বান্ধবী এক বেলা কথা না বললে ডিপ্রেশন, ইন্টারনেট কানেকশন ডাউন থাকলে ডিপ্রেশন, বাবা নতুন গ্যাজেট কেনার টাকা না দিলে ডিপ্রেশন এমনকি মশা কামড়ালেও এরা ডিপ্রেশনে যায়।এরপর অনেকে ড্রাগ নেয়।আগে ভাবতাম এর ফলে জাতি অন্ধকারে পতিত হচ্ছে।ভুল ভাবতাম!
আসল সমস্যা তখন শুরু হয় যখন এরা ডিপ্রেশনে গিয়ে ক্রিয়েটিভ হয়।জাতি মনে হয় প্রকৃত অর্থেই পতিত হয় এই সময়ে।
জিরো আলমের হুক্কাহুয়া দেখে প্রায় কোমায় চলে যাওয়ার ধাক্কা সামলে যখন ঘুমানোর আয়োজন করছি।এক ভগ্নি তখন এক লিংক শেয়ার করিল।লিংকে গিয়ে শিল্পকর্মটি দেখিবার পর আমার আর বিন্দুমাত্র সন্দেহ থাকলো না যে এটি লকডাউনে আবদ্ধ তরুণ সমাজের চরম ডিপ্রেশনের বহিঃপ্রকাশ। ঘুম মাথা থেকে উধাও হইল এবং চরম হৃদয়াবেগ উপস্থিত হইল।ভাবিলাম এহেন আবেগ যদি প্রকাশ করিতে না পারি তবে ঘুম হইবে না।অতঃপর এই রাত্রিতে লিখিতে বসিলাম।
সকলের জন্য শিল্পকর্মের লিংক প্রদান করিলাম---
কলাগাছের সঙ্গীত!!
ছবিঃ ইন্টারনেট থেকে