মুনিম মনে মনে বেশ অস্থিরতা বোধ করছিল।এবারই প্রথম এর আগে সে কখনো এমন জায়গায় আসেনি।মোরশেদ ভাই ঘুঘু লোক।কৃতজ্ঞতা দেখানোর কি পন্থাই না বেছে নিয়েছেন।একেবারে পুরুষ ঘায়েল করা পন্থা।কৃতজ্ঞ হওয়ার কারনও আছে।অফিসের পদটার আসল হকদার ছিলেন জামাল সাহেব কিন্ত ডাবল প্রমোশন নিয়ে পদটিতে জাঁকিয়ে বসার পেছনে তাদের অবিরাম সাপোর্ট এর অনেক অবদান রয়েছে।তাই প্রমোশনের পর তন্ময় যখন জিগাসা করল কি মোরশেদ ভাই ফিস্ট হবে না নাকি?তিনি হে হে করে বিকট স্বরে হেসে বললেন মোগলাই চাইনিজ তো রোজই হচ্ছে,আপনাদের জন্য বন্দোবস্ত করব অন্য জিনিস।একদম খাঁটি দেশি।আমাদের ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতে দেখে গলা নামিয়ে ফিসফিস করে বলেছিলেন আরে মিয়া রেস্টুরেন্ট এর খাবার যেকোনো দিন হতে পারে কিন্ত আমি যে ফিস্ট দেব তাতে মন খুশি হয়ে যাবে।বয়সে কচি কিন্ত চরম এক্সপার্ট।একেকজন ঘরের মধ্যে স্বর্গ নামিয়ে আনতে পারে।
এমন প্রস্তাব হেলায় ঠেলে ফেলা যায় না তা পুরুষ মাত্রই বুঝতে পারবে।মোরশেদ ভাই তো ঘুঘু মাল তা আগে থেকেই জানত মুনিম কিন্ত তন্ময় আর রাজুর আগ্রহ দেখে ও বেশ অবাক হলো।ওর নিজের একটু একটু ইচ্ছা ছিল কিন্ত ভয় আর সঙ্কোচ ছিল তার চেয়ে বেশি।তবে স্রোতে গা ভাসানো ছাড়া উপায় ছিল না তার কারন পরের কয়দিন ধরে মোরশেদ ভাইয়ের সরস বর্ণনা তার মনেও আগ্রহের জোয়ার এনে দিয়েছিল।
আগে থেকেই সব ঠিক করা ছিল।বাসায় বলে এসেছে কলিগদের সাথে একদিনের পিকনিক মোরশেদ ভাইয়ের গ্রামের বাড়িতে তাই ওদিক থেকে কোনো ঝামেলা হবেনা আশা করা যায়।অফিস শেষ হতেই মোরশেদ ভাইয়ের বলে দেয়া ঠিকানায় রওনা হলো মুনিম।হালকা ব্যাগে এক রাতের মত জামা কাপড় নেয়া হয়েছে।রাস্তায় নেমে ভেবেচিন্তে একটা ক্যাব নিল মুনিম।ক্যাব একদম দোরগোড়ায় এসে থামার পর সে দেখল বেশ বড় সাইনবোর্ড এ লেখা হোটেল মুনলাইট।মুনিমের যেমন আশঙ্কা ছিল তেমন এঁদোগলির মাথায় পলেস্তারা খসা,রঙ ওঠা একতলা হোটেল নয় বরং চার তলা ঝকঝকে বিল্ডিং।রিসিপশন ও বেশ সাজানো গোছানো।দেখে মনে হলো ফ্যামিলি নিয়েও মানুষ এখানে থাকে।সবখানেই বেশ মার্জিত রুচির ছাপ।বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে এখানে অন্যরকম বিনোদনের ব্যবস্থাও রয়েছে।
মোরশেদ ভাইয়ের পাকা কাজ।উনি আগে থেকেই রুম ঠিক করে রেখেছেন সবার জন্য।রুমের সাথে সাথে কথিত অপ্সরাদেরও ঠিক করা হয়েছে পুরো একটা রাত এবং একটা দিনের জন্য।কাল সাপ্তাহিক ছুটি সন্ধ্যায় হোটেল থেকে বের হয়ে চাইনিজ ফিস্ট তারপর যার যার ঘরে ফেরা।তার নার্ভাসনেস দেখে সকলেই আশ্বাস দিয়ে বলেছিল আরে আমরা তো আশেপাশেই থাকব সমস্যা হলে ফোন দিলেই হলো।রিসিপশনে ৩২৪ নম্বর রুমের কথা বলতেই লোকটা অর্থপূর্ণ হাসি দিয়ে বেয়ারা ডেকে রুমে পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দিল।
সিঁড়িবেয়ে উঠতে উঠতে নানা কল্পনা আর উত্তেজনায় মুনিমের হৃদপিন্ড প্রায় গলার কাছে পৌঁছে যাচ্ছিল।রুমের সামনে গিয়ে বেয়ারা দরজায় নক করলে ভেতর থেকে মিষ্টি নারী কন্ঠের কেউ বলে উঠল,দরজা খোলা আছে!বেয়ারা হাতে কিছু টাকা গুঁজে তাকে বিদায় করে মুনিম কম্পিত হাতে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকল।মাঝারি আকারের ঘর,ক্রিম রঙের দেয়ালে সবুজ পর্দা বেশ সুন্দর মানিয়েছে।আসবাব বলতে ছোট একটা ওয়ারড্রব,দুই সিটের একটা সোফা ও একটা ডাবল বেড।শুভ্র সেই বেডে হালকা গোলাপী নাইটি পড়া এক নারী বসে চিরুনি দিয়ে তার দীর্ঘ চুল আঁচড়াচ্ছে।চেহারা তার চুলে ঢাকা তবে খোলামেলা নাইটিতে তার অসম্ভব ফর্সা বাহু,কাঁধ,পিঠ দেখা যাচ্ছে।পাতলা কাপড়ের ভেতর দিয়ে তার সুতন্বী দেহ আর সুগঠিত স্তনযুগলের আভাস পাওয়া যাচ্ছে যা মুনিমের মাথায় আগুন ধরিয়ে দিল।
চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে সেই নারী মায়াবী কণ্ঠে বলে উঠল আমার নাম সুমাইয়া তবে আপনি আমাকে পছন্দমত যেকোনো নামে ডাকতে পারেন।তারপর সে মুখ থেকে চুল সরিয়ে তার দিকে তাকালো,মুখে পেশাদারী মোহনীয় হাসি।হঠাত মেয়েটির ডাগর চোখে বিস্ময় ফুটল,তারপর অদম্য ক্রোধে সুন্দর মুখটি বিকৃত হয়ে গেল।মেয়েটি ঝট করে উঠে দাঁড়িয়ে হাত ব্যাগটি তুলে নিয়ে বাথরুমে ঢুকে গেল।
এদিকে মুনিম যেন পাথর হয়ে গেছে।তার সমস্ত উত্তেজনায় কে যেন বরফ গলা পানি ঢেলে দিয়েছে।লৌহকঠিন কোনো হাত যেন চেপে ধরেছে তার হৃদপিন্ড।ঠিক ১০ মিনিটের মাথায় মেয়েটি বাথরুম থেকে বের হলো।নীল তাঁতের একটি শাড়ি পরিপাটি করে পড়া,লম্বা চুল খোপা করে বাঁধা।দেখে মনে হচ্ছে ঠিক যেন কারো ঘরের বউ।মেয়েটি ব্যাগ হাতড়ে তিনটি হাজার টাকার নোট বের করে ছুড়ে ফেলে বিছানায় তারপর বেড়িয়ে যেতে উদ্যত হয়।হতভম্ভ মুনি কি করবে বুঝতে না পেরে তার হাত চেপে ধরে।মেয়েটি এবার চোখ তুলে তাকায় তার দিকে না সেখানে কোনো ক্রোধ বা অভিমান নেই,নেই কোনো কান্নার আভাষ।শুধু এক আশ্চর্য নির্লিপ্ততা আর তার মাঝে উঁকি দিচ্ছে এক ধরনের বিদ্রূপ।সেই দৃষ্টি মুনিম সহ্য করতে পারেনা,হাত ছেড়ে দেয়।মেয়েটি দরজা খুলে মিলিয়ে যায় দৃষ্টিপট থেকে।
কি ভেবে রেখেছিল আর কি হল!!হতভম্ব মুনিম দরজা বন্ধ করে বিছানায় অবশ শরীর এলিয়ে দেয়।যেখানে মেয়েটি বসেছিল সেখানে এখনও মেখে রয়েছে মিষ্টি একটা গন্ধ।মুনিম বুক ভরে টেনে নেয় খুব চেনা সেই সুবাস আর ভাবে,আশ্চর্য! এখনও সে সেই একই পারফিউম ব্যবহার করে?
বালিশের নীচে হাত যেতেই হাতে কি যেন বাধে।চোখের সামনে টেনে আনতে দেখে একটা রূপালী চেইন তাতে ঝুলন্ত ছোট ছোট চাঁদ, তারা, ফুল, প্রজাপতি।এই গহনাটাও মুনিমের খুব পরিচিত।মেয়েটিন নিটোল হাতে এই ব্রেসলেটটি একসময় শোভা পেত।মুনিমের ঘড়ির সাথে,তার শার্টের বোতামের সাথে কতবার যে এটা আটকে গিয়েছে তার হিসাব নেই।
কিন্ত সেসব তো আজ ইতিহাস। ইতিহাস একটা চমৎকার সম্পর্কের।একসাথে পড়ার সুবাদে হয়েছিল পরিচয়,সেখান থেকে পরিণয়।বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্নীল জীবন শেষে বাস্তব জীবনে আসতেই হাসি আনন্দের সময় ফুরিয়ে গেল।সময় আসল দায়িত্ব নেয়ার।চার বছরের সম্পর্ক তো একটা পরিণতি দাবী করেই।মেয়ের পরিবারও দাবী করে একটি স্বনির্ভর সক্ষম পাত্র।
সক্ষম পাত্র হওয়ার ক্ষমতা মুনিমের ছিল কিন্ত সে তখন চাওয়া না চাওয়ার দোটানায় দিশেহারা।জীবনে কি করবে বা কি হলে ভাল হবে তাই সে বুঝতে পারতনা ঠিক করতে পারত না কর্মপন্থা।তাই দিন কাটতে থাকল যতটা সবকিছু ততটাই জটিল হয়ে উঠল।
মেয়েটি ছিল খুবই অভিমানী।একবুক অভিমান নিয়ে সে মুনিমের গা ছাড়া ভাব লক্ষ্য করত কিন্ত কিছুই বলতনা।চারিদিকের চাপে মেয়েটি যখন দিশেহারা তখন সে জবাব চেয়েছিল মুনিমের কাছে।মুনিমের মনে তখন কি ছিল তা সে নিজেও জানত না।মেয়েটিকে সে চাইত কিন্ত ধরে রাখার জন্য যা করা দরকার তা সে করতে পারবে কিনা তা জানত না।বিয়ে বা কারো দায়িত্ব নেয়া তার কাছে অনেক দূরের বিষয় বলে মনে হতো।তবুও সে মেয়েটিকে আশ্বাস দেয়।তারপর হয়ত কিছুটা চেষ্টাও করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর।তবে অসময়ের চেষ্টা কতই বা ভাল ফল দিতে পারে?এভাবেই কেটে গেল বেশ কিছুদিন।
একদিন সন্ধ্যারাতে মেয়েটি মুনিমের বাসার দরজায় এসে দাঁড়ায়েছিল।সে নিজের বাড়ি আর পরিবার ছেড়ে এসেছে।মেয়েটির বয়স বাড়ছে তারা আর অপেক্ষা করতে রাজি নয়,বেকার পাত্রের হাতে কন্যাদান করতেও রাজি নয়।হয় পরিবারের কথা তাকে মেনে নিতে হবে নয়ত বাড়ি ছাড়তে হবে।কিন্ত মেয়েটি কিভাবে পরিবারের কথা মেনে নেবে?মুনিমকে নিয়ে যে সে মনেমনে স্বপ্নের সংসার সাজিয়েছে অনেক আগে।সেই সুখের ঘরকন্না ফেলে অন্য কাওকে নিয়ে ঘর বাঁধা তার পক্ষে সম্ভব না।তাই সে এক কাপড়ে সব ছেড়ে চলে এসেছিল মুনিমের কাছে।
সেই শীত শীত সন্ধ্যারাতে সব কিছু শুনে মুনিম দিশেহারা বোধ করছিল।তার যে কিছুই গুছিয়ে ওঠা হয়নি এখনও।সে যে এখনও প্রস্তুত না।মেয়েটিকে সে বোঝায়।বুঝিয়ে ফেরত পাঠাতে চায় নিজের পরিবারের কাছে।তার কথা শুনে মেয়েটির অঝোর কান্না থেমে যায়,তার চোখ জ্বলে ওঠে নতুন উপলব্ধির আভায়।কোনো কথা না বলে সে বেড়িয়ে আসে মুনিমের বাসা থেকে।সেই থেকেই মেয়েটি নিখোঁজ।
মেয়েটির পরিবার অনেক খোঁজ করেছে,খোঁজ করেছে সব বন্ধুবান্ধব।মুনিম নিজেও খুঁজেছে অনেক।কিন্ত মেয়েটি যেন বাতাসে মিলিয়ে গিয়েছিল।শহরের একটা ব্রীজের কাছে পুলিশ তার পরিচয়পত্র সহ হাতব্যাগ পেয়ে ভেবেছে সে নিশ্চয় নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে।তাকে মৃত ধরে নেবার পর আরো ছয়টা বছর কেটে গেছে।তাই এতদিন পর মুনিম তাকে দেখবে তা স্বপ্নেও কল্পনা করেনি।
মেয়েটির হারিয়ে যাওয়ার পর মুনিমের যে কষ্ট হয়নি তাও না তবে সেই সাথে কেমন একটা মুক্তির স্বাদও মুনিম পেয়েছিল।ভুলেই গিয়েছিল মায়া নামের সেই অভিমানী মেয়েটিকে।তারপর সে সময় নিয়ে সক্ষমতা অর্জন করেছে।নিজের জীবনে সে সবকিছু নিয়ে সুখেই আছে বলা যায়।শুধু আজকের রাতটা সবকিছু উল্টাপাল্টা করে দিল।নিজের গোপনতম খেয়ালে মাঝে মাঝে মেয়েটির মৃত্যুর জন্য নিজেকে দায়ী মনে হতো মুনিমের।মনে হতো সেদিন একটু সাহস করে হাতটা ধরাই উচিত ছিল অসহায় মেয়েটির।তবে এমন চিন্তা এক বা দুই সেকেন্ডের বেশি স্থায়ী হতো না।
তবে এখন যে সত্যের মুখোমুখি হয়েছে সে তা কি মুনিমের পিছু ছাড়বে?একজন পুরুষের জন্য ঘর ছেড়ে এসে সেই পুরুষের কাছেও যখন আশ্রয় পায়নি তখন মেয়েটি হারিয়ে গেছে নিষিদ্ধপল্লীর নামহীন অন্ধকার গলিতে।যে নারীর কোনো আশ্রয় থাকেনা সেই নারীরকে আশ্রয় দেয়ার মত এই একটাই তো নিরাপদ জায়গা আছে পৃথিবীতে।সমাজের চোখ থেকে,ভালবাসার ব্যার্থতা থেকে,পরিবারের জবাবদিহি থেকে একটি মেয়েকে সযত্নে আড়াল করে রাখতে পারে এই নিষিদ্ধপল্লী। তার বিনিময়ে শুধু বিকিয়ে দিতে হয় দৈহিক পবিত্রতা।
মুনিম শুয়ে শুয়ে ভাবে,যে কোনো ঘরের লক্ষী বউ হতে পারত মেয়েটি।তবুও কেন এত কঠিন পথ বেছে নিল সে?মাত্র তিন হাজার টাকার বিনিময়ে কেন এক রাতের জন্য অন্যপুরুষের স্ত্রীর অভিনয় করা?এতকিছুর পরেও কেন মেয়েটির চেহারায় কোনো গ্লানি নেই,নেই কোনো কালিমা?জ্বলজ্বলে লাবন্য নিয়ে বরং ফুটে আছে এক তাপসীর সাধনালব্ধ প্রশান্তি।ভেবে ভেবে সে কূলকিনারা পায়না।
নিজের ঘরে মেয়েটিরও আজ নির্ঘুম রাত কাটে।অনেক স্মৃতি ভীড় করে আসে তবুও চোখ দিয়ে জল নামেনা তার।অনুভুতিগুলো অবশ হয়েগেছে অনেককাল আগে।সে এই জগত বেছে নিয়েছে কারন এজগত আশ্চর্যরকম অকপট।ভণ্ডামির কোনো জায়গা নেই এখানে।এখানে কেউ সাধু হওয়ার ভান করেনা।বাইরের দুনিয়ার মত পরিবারের লোক কখনো বলবে না নিজের খুশি বাদ দিয়ে আমাদের কথা মেনে নাও নয়ত বেড়িয়ে যাও।এটা বলে আবার দাবীও করবে না যে আমরা তোমার ভাল চাই।
এখানে কোনো পুরুষ দাবী করবে না তোমায় ছাড়া বাঁঁচবনা।তারা আসবে এক রাতের ভালবাসার জন্য।সেটা পেলেই তারা খুশি হবে।বাইরের দুনিয়ার প্রেমিকের মত মুখে ভালবাসার ফেনা তুলে চরম বিপদের সময় কাপুরুষের মত সঙ্গ ত্যাগ করবে না।ভালিবাসি কথাটা সবাই সহজেই বলতে পারে কিন্ত পালন করার সদিচ্ছা থাকে কতজনের?বাইরের দুনিয়ার কপটতার প্রতি মায়ার ঘেন্না ধরে গেছে।
মায়া তাই এজগতে বাসিন্দা হয়েছে যেখানে সবাই বলবে তোমাকে চাই কিন্ত কেউ দাবী করতে আসবে না তোমাকে ভালবাসি।
ভোর হয়ে যখন চারিদিক আলো হয়ে উঠেছে তখন মুনিম হোটেল থেকে বের হয়ে আসে।চারিদিকে কেমন নির্মল হাওয়া।হাঁটতে হাঁটতে সে পকেটে হাত দিয়ে ব্রেসলেটটা অনুভব করে দেখে।যে মায়াকে সে এতকাল ভুলে ছিল কাল রাতের পরে কি তাকে আর ভুলতে পারবে?তার কৃতকর্মের জ্বলজ্বলে সাক্ষী হয়ে সে কি বারবার সামনে আসবেনা?
সামনে একটা ডিপার্টমেণ্টাল স্টোর কেবল খুলেছে সেটা দেখে মুনিমের মনে পড়ল নীলা বাবুর জন্য গুড়াদুধ নিয়ে যেতে বলেছে।স্ত্রী সন্তানের মুখ মনে পড়তেই মুনিমের মুখে হাসি ফুটে ওঠে।স্টোরে ঢুকে কেনাকাটা করতে করতে তার বুকের পাথর নেমে যেতে থাকে।সে বুঝতে পারে সে মায়াকে আবার ভুলে যেতে পারবে।
হ্যাঁ,মুনিমরা সত্যিই পারে সবকিছু দ্রুত ভুলে গিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে।প্রলয়ঙ্করী সত্যগুলো শুধু রাতের দু:স্বপ্নেই দেখা দেয় মাঝে মাঝে।তাইত তাদের জীবন হয় সার্থক,সুন্দর।আর তাদের জন্যেই মায়ারা চিরকাল থেকে যায় অন্ধকারে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৬