গত বইমেলায়, একা শেখ সাহবের উপর ২৭টা বই বের হয়েছিলো; শেখ সাহেব অনেক বড় মানুষ ২৭টা বই কিছুই না, আরো বেশী বের হলেও পাঠক পাওয়া যাবে। কিন্তু আমি ভাবি, শেখ সাহেবকে নিয়ে লেখার মতো ২৭ জন লেখক কোথা থেকে এলো? বাংলাদেশে ২৭ জন মানুষ আছেন, যারা শেখকে নিয়ে লেখের মতো জানেন, বুঝেন! আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।
শেখকে নিয়ে লেখা ১টি বই আমার কাছে পাঠায়েছিলেন এক ক্রেতা; উনি কম বয়সী, পড়ালেখা করেছিলেন আমেরিকায়; উনার ধারণা, আমি পড়লে বুঝতে পারবো, বইয়ের শেখ ও আসল শেখের মাঝে মিল আছে কিনা? আমি বাধ্য হয়ে পড়েছি।
লেখিকার বয়স ৪১ বছর, আওয়ামী লীগের উপরের স্তরের নারী নেত্রী; ব্যবসায়ী পরিবারের নারী; নিজেদের ব্যবসায় ভালো করছেন। সাড়ে ৩ শত পৃষ্টার বই। এত বড় বই পড়বো কি করে? যাক, বাঁচা গেলো, অনেকে পৃষ্টা জুড়ে আছে ছবি; শেখের ছবি, সবাই দেখতে চায়।
আমি বই'এর ক্রেতাকে বড় ২টি ভুলের কথা জানালাম: (১) বাকশাল শব্দটা বইতে আছে, তবে লেখিকা জানেন না যে, উহা কেন বিখ্যাত ছিলো শেখের জন্য ও দরিদ্র জনতার জন্য; (২) অন্য ভুলটি ছিলো, লেখিকার ধারণা হচ্ছে, ৬ দফা পুরণের দা্যিত্ব ছিলো আইয়ুব খানের, আই্য়ুব সেই মহান কাজটি করেনি। ক্রেতা আমাকে বই দেয়ার ২ মাসের মাঝে আমাকে খেতে দাওয়াত করলো; মুল উদ্দেশ্য বই সম্পর্কে আমার মতামত জানাতে। আমি জানালাম যে, বইটা একটা গার্বেজ।
আমিও ১টি বই লিখে, আমার নিজের মনের কথাগুলো, ভাবনাগুলো অন্যদের জানাতে চাই; সমাজের কিছু অসংতি নিয়ে আলাপ করতে চাই, আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চাই, মানুষের পাঠক মনকে উল্লসিত করতে চাই, আমার নিজের আদর্শকে তুলে ধরতে চাই, সামজের মানুষের জীবনের উপর আলোকপাত করতে চাই, আমেরিকায় কি দেখলাম, ফিলিস্তিনে কি হচ্ছে, শেখ হাসিনা কেন দ্রব্যমুল্য কমাতে পারেবন না, ভারতের লোকেরা কি করে বাংলাদেশে চাকুরী করে, এসব হাবিজাবি বলতে চাই!
বেশীরভাগ শিক্ষিত বাংগালী এই ধরণের কিছু, কিংবা এর থেকেও বেশী কিছু ভাবেন; সেই জন্য, আমাদের বইমেলা সবচেয়ে বড়। ২১শে ফেব্রুয়ারী থেকেও একুশের বইমেলা এখন অনেক বড়; এক বছর সরকারীভাবে ২১শে ফেব্রুয়ারী পালন না'করলে কেহ কিছু বলবে না ; তবে, ১ বছর বইমেলা বন্ধ রাখতে চাইলে ঢাকায় আগুন লাগবে।
৭৫০'টির বেশী বুকষ্টল, ৫০০০ নতুন বই, ১১০ কোটী টাকার বিক্রয়, ১ মাস ধরে মানুষের মিলনমেলা, খাওয়াদাওয়া, লেখকদের সাথে দেখা হওয়া, সবই বিশাল বিশাল ব্যাপার।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:০৮