জন্ম থেকেই আমরা ঋণী শুধু বাংলাদেশী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে আমরা জন্মগত ভাবেই ঋণী । আমরা কেউ কথা দিয়ে ঋণ শোধ করী , কেউ নগদ টাকায়, কেউ কেউ জীবন দিয়ে ঋণ শোধ করী আবার কেউ কখনও ঋন শোধ করার কথাও ভাবেন ও না , সেটা যদি আত্মীয় স্বজনের ঋণ হয় তা হলে তো কথাই নেই । কিন্তু পৃথিবীতে প্রায় সব কিছুরই ব্যতিক্রম আছে । যেমন আমার বন্ধু রাব্বি । ওকে দেখেছি ঢিমেতালে চলা একজন ধীরস্থীর মানুষ হিসেবে, কিন্তু দ্বয়িত্বশীল একজন বিচক্ষণ ব্যক্তি । ও যে কাজের নিয়ত করে সেটা করেই ছাড়ে যদি না বড় কোন ঐশ্বরিক কোন বাধা না আসে । যা হোক ও নিয়ত করেছিল ওর দেনমোহরের টাকা টা সে নগদে পরিশোধ করবে । এবং করেছেও তাই । যদিও ওর দেনমোহরের টাকার পরিমান এযুগের তুলনায় অত্যান্ত কম তবু্ও সে তার কথা রেখেছে । এবং আমাদের যুবকদের জন্য সে উদাহরণও হয়েছে । রাব্বি ঋণভিতী একজন সহজ মানদন্ডের মানুষ । ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক দেন মোহরের টাকা স্ত্রীকে নাকি বিয়ের প্রথম রাতেই পরিশোধ করে নব বধুকে স্পর্শ করতে হয় তা না হলে স্ত্রী'র সাথে শারিরীক সম্পর্ক নাকি অবৈধ বলে গন্য হয় । রাব্বি খুব ধর্ম সচেতন হওয়ায় সে আগে আগেই স্ত্রীর দেন মোহর পরিশোধ করেছে । ও দেনমোহরের টাকা পরিশোধের জন্য অনেক কষ্ট করে টাকা জুগিয়েছিল । কিন্ত কখনই সে তার পরিবারের কাছে টাকার জন্য ধরনা দেয়নি । তাই ভাবতে হয়ে , আজকাল যুবকেরা যেখানে নেশার টাকা অথবা জুয়ার আড্ডায় কিংবা পতিতালয়ে যাওয়ার জন্য নানা ভাবে টাকা যোগাতে গিয়ে যে ভাবে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে তাতে করে তার ঋণ কি পরিশোধ করবে ঋণের জ্বালে তারা আমৃত্যু বন্দী হয়ে থাকে । তাই বলতে চাই এ ক্ষেত্রে আমার বন্ধু রাব্বি এযুগের সকল বিবাহযোগ্য তরুণদের কাছে রোলমডেল । আপনারা হয়ত ভাবতে পারেন , রাব্বি যৌতুক না নিয়ে বরং দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করেছে নিশ্চয় মেয়ের বাবার অনেক সম্পত্তি আছে কিংবা মেয়েটি অনেক রূপবতি । না, বন্ধুগন আমার দোস্ত রাব্বি এসব কোন কিছুই দেখেনি । হ্যাঁ সে যেটা দেখেছে সেটা হল সে একটা মন দেখেছে । আর আল্লাহ/ঈশ্বর/ ভগবান ওকে তাই মিলিয়ে দিয়েছে । বিয়ে করতে গিয়ে সে শুধু এই স্বর্থটুকুই খুজেছে ।
পরিশেষে বলতে চাই, রাব্বি দেনমোহরের ঋণ পরিশোধ করে খুব ভাল ভাবেই আত্বতৃপ্তি নিয়ে সে তার সংসার নামের সাম্পান মহা আনন্দে বেয়ে চলছে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১:২৪