ক্রিং ক্রিং ক্রিং---
ক্রিং ক্রিং ক্রিং---
বলো-
-কেমন আছো সুরমিতা?
--এ্যাই পাগল! আমি আবার সুরমিতা হলাম কবে?
-কেমন আছো সূর্যমূখী?
--হয়েছে বাবা হয়েছে!
-কেমন আছো শ্যামাঙ্গিনী?
--হুমম! অনেক হয়েছে। এবার ঢং বন্ধ করো। সারাদিন কোন খোঁজখবর নেই। এখন উনি উপমা বাক্স নিয়ে হাজির হয়েছেন।
-কি করোগো মধূবালা?
--কিছু করছিনা গ্যাদার বাপ।
-হাহাহা! ঐ তুমি আমারে গ্যাদার বাপ বললা কেন? সেই পার্মিয়ান আমলে আমাদের ভালবাসার যখন হাতে খড়ি, তখনই না ছেলে মেয়ের নাম ঠিক করে রেখেছি?
--পার্মিয়ান আমলের সব গাছপালা তো পঁচে গলে কয়লা হয়ে গেছে। সেই খড়ি ছাই হয়ে গেছে এখন। এতদিন আগের কথা মনে থাকে বলো!
-আমার কোন কথাই তো মনে রাখতে পারোনা!
--ঢের হয়েছে বাবা - বিদ্রোহী আর রণাঙ্গিনী!
-যাক তাহলে মনে আছে!
--তুমি বড্ড সিগারেট খাওয়া বাড়িয়েছো।
-কেমন করে বুঝলে বলোতো?
--তোমার কন্ঠ ক্রমশ কর্কশ হয়ে যাচ্ছে।
কথাটা মনে আছে তো?
-সিগারেট কমিয়ে তোমার গলার মালা?
--যাক তাহলে ভুলে যাওনি। তা কবে কমবে? কবে মালা হবে?
-আমার ঘরে ঘরোনী হয়ে আসতে আসতে একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
--এতদিন অপেক্ষা করতে পারবো না বাবা! তার আগেই আমার চাইই চাই।
-আচ্ছা! শ্রীগ্রি উপযুক্ত ব্যবস্থা হবে রুদ্রঙ্গিনী!
কিন্তু সেই মালা পড়াতে গিয়ে যদি!
--যদি?
-যদি তোমার দুর্বার চিবুক ছুঁয়ে দেই, যদি স্বর্ণকেশ নেড়ে দেই, যদি হরিনী চোখ ছুঁয়ে দেই, যদি নিটোল কপোল, যদি যদি---
--থাক আর বীরপুরুষ হতে হবে না।
-আমি তো বীরপুরুষ। কেবল তোমার কাছেই পথের ফকির। তোমার কাছেই অর্বাচীন এক কিশোর।
--থাক ফকির বীরপুরুষ কিচ্ছু হতে হবে না। তুমি আমার আমারই থেকো।
-আচ্ছাগো আচ্ছা! তাই হোক এই সবুজ আস্তিনের বসুন্ধরায়। তুমি কোথায় এখন?
--বেলকনিতে আছি। বাসার সবাই আম্মু-আব্বুর রুমে গল্প করছে।
-তাহলে তো ভালই হলো।
--ভালই হলো কি বোকা! সবাই যদি জানতে পারে আমি বেলকনিতে। আর তোমার সাথে মোবাইলে কথা বলছি!
-তার আগেই শেষ হবে!
--কি শেষ হবে বুদ্ধু?
-মনে করো তুমি আর আমি!
--তুমি আর আমি!
-তুমি আর আমি! চাঁদনী রাত। অচিন সমুদ্র সৈকত। পাশাপাশি বসে দু'জন। আমার হাতে তোমার হাত।
-তারপর-
-ধূর হলো না। রাত চাঁদ সবই ঠিক আছে। সৈকতে তুমি আমি তাও ঠিক আছে।
--তবে-
-তবে সৈকতে পাইন গাছের সারি। একটা দোলনা।
--আর দোলনায় তুমি উপবিষ্ঠ!
-না বাবা না! তুমি পা দুলিয়ে বসে আছো। আমি আস্তে আস্তে দোলাচ্ছি। মৃদুমন্দ বাতাসে তোমার স্বর্ণকেশ এলোমেলো উড়ছে।
--হুমম!
-তোমার হাতে রবীন্দ্রনাথের সঞ্চয়িতা।
তারপর--
-বইয়ের প্রতিটি কবিতা বলছে-
"শুভ জন্মদিন ঝুমকোলতা"
পোষ্ট উৎসর্গঃ শায়মা । তার জন্মদিনে সোহানুর রহমানের এই পোষ্ট।
ছবিঃ আন্তজাল।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১২ দুপুর ২:০২