ভাষা নিয়ে কিছু বলাই বাহুল্য।। কারন প্রতিটি জাতির কাছেই তাদের মাতৃভাষাই পৃথিবীর সেরা ভাষা।। যদিও আমাদের মত এত প্রান আর রক্তের বিনিময়ে আর কোন জাতি মায়ের ভাষাকে এমন করে পেয়েছে কি না।।
কিন্ত বর্তমান বিশ্বের চলমান অবস্থায় নিজের মাতৃভাষার সাথে আরেকটি আন্তর্জাতিক ভাষা শেখাটা অতীব গুরুত্বপূর্ন হয়ে দাড়িয়েছে।। এবং এতে নিজের ভাষাকেও অসন্মান না করে শুধু যুগের চাহিদাকে মেটাতে আমাদের সবারই উচিৎ মাতৃভাষার পাশাপাশি আরেকটি আন্তর্জাতিক ভাষাকে রপ্ত করা।।
বিশ্বের অনেক দেশেই আজ শিশুরা মাতৃভাষার পাশাপাশি একটি/দুটি আন্তর্জাতিক ভাষা শিখছে।। কারন দেশ এখন আর শুধুমাত্র মাতৃভূমির মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকছে না।। উপার্জন,চাকুরী,শিক্ষা, নাগরিকত্ব ইত্যাদির কারনে মানুষ আজ দেশে-বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে।। তাই পূর্বের যেকোন সময়ের তুলনায় আজ দ্বিতীয় ভাষাটার গুরুত্বও স্বভাবতঃই বেড়ে গেছে।।।
দেশে বোঝাই যায় না, কিন্ত দেশের বাইরে যারা বিভিন্ন সুত্রে অবস্থান করছেন, তারাই এর গুরুত্ব বুঝতে পারছেন।। কাউকে ছোট না করেও বলতে হচ্ছে, আমাদের অনেকে মাষ্টার্স/অনার্স করেও এই মধ্যপ্রাচ্য শুধুমাত্র পিছিয়ে আছে দ্বিতীয় ভাষায় দক্ষতার অভাবে।।কিন্ত দেশের বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই চলছে মাতৃভাষাকে কেন্দ্র করে!! এবং অনেক ক্ষেত্রে আমরাও ভাষা ভাষা করে নিজেদের পায়ে তো কুড়াল মেরেছিই, ভবিষ্যৎ জেনারেশনকেও ছাড়ছি না।।
তবে এটাও ঠিক যে, দ্বিতীয়ভাষা শিক্ষায়, ব্যয়বহুল হওয়াতে অনেক পিতামাতার পক্ষেও সম্ভব হয় না দ্বিতীয় ভাষা শেখাতে।। সেক্ষেত্রে সরকারী উদ্যোগেই স্কুল-কলেজগুলিতে প্রথম থেকেই পদক্ষেপ নিতে হবে।।
[sbএকটু ফিরে যাই বিলিংগুয়ার শিক্ষার দিকে।।/sb]
এটা শিশুদের কনফিউজ করে না: বেশীরভাগ পিতা/মাতারই দুঃশ্চিন্তা শিশুদের জন্য দুটি ভাষা, তাদের মানসিকভাবে বোঝা হয়ে যায়।।কিন্তু গবেষনা প্রমান করেছে যে,শিশু/ছাত্ররা অনায়াসেই একসাথে দুটি ভষায় পরঙ্গম হতে পারে।। এবং একই সাথে দুটি/তিনটি ভষার মাঝে “স্যুইচ্ড”ও করতে পারে।। এমন কি মনের ভাব প্রকাশে দুটি ভাষার অনয়াস মিশ্রনের ব্যাবহারও করে চলে।।
দুটি ভাষা একই সাথে ভিন্নতায় রাখা স্বার্থক হয় না[/sb
:সাধারনতঃ যে সব প্যারেন্টস্ ভাবছেন সন্তানদের একটি ভাষাই তাদের মানসিক চাপের জন্য যথেষ্ট কিন্ত এরও কোন বাস্তব প্রমান পাওয়া যায় নি।। যারা সন্তানদের বিলিংগুয়াল ভাষায় দক্ষতা বাড়াতে চান, তারা সাধারনতঃ ঘরের সবাই একটি ভাষার দিকেই বিশেষ জোর দেন একই কারনে।। কিন্তু এর সমর্থনেও গুরুত্বপূর্ন কিছু পাওয়া যায় না।।বরং দেখখা যায় শিশুরা মাতৃভাষার সাথে অনায়াসেই দ্বিতীয় ভাষাটাতে দক্ষতা অর্জন করে।। এখানে অহরহ দেখা যায়, সন্তানরা স্কুলে ইংরেজী ভাষায় পড়াশুনা করে বাসায় এসে তাদর মাতৃভাষায় কথা বলে।। ফলে অনায়াস দক্ষতায় তারা দুটি এমনকি তিনটি ভাষায়ও রপ্ত করতে পারছে।।
বিলিংগুয়ালিজম ভায়ায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে না:
একটা ভ্রান্ত ধারনা আছে যে, দুটিভাষা শিক্ষা শিশুদের মানসিক চাপ বৃদ্ধি করে তাদের শিক্ষার গগতি শ্লো করে দেয়।। এটা পুরোটা না হলেও কিঞ্চিত সত্যি।। কিন্ত সময়ের সাথে সাথে তারা একটি ভাষর ছাত্রদের খুব সহজেই সবদিক দিয়েই পিছনে ফেলে দেয়। এবং এটা প্রমানিতও।।
বিলিংগুয়ালিজম মনের ভাব প্রকাশেও মনোলিংগুয়ালদের চেয়ে এগিয়ে: দুটি ভাষার দক্ষতা স্বভাবতঃই তাদের লেখা-পড়ার এবং মনের ভাব প্রকাশের এ্যাবিলিটিও বাড়িয়ে দেয় অনেকখানি।। যা একটি ভাষার ছাত্রদের মাঝে দেখখা যায় না।। যেমন অনেকে বাংলায় কথা বলতে বলতে হঠাৎ করে সঠিক বাক্যেটি খুজে না পেয়ে তার ইংরেজীটি অনায়াস দক্ষতায় ব্যাবহার করতে পারে যা কিন্তু একটি ভাষার ছাত্রদের মাঝে খুব কমই দেখা যায়।।
পরিশেষে বলবো, শুধু শিশুদেরই নয় আসুন আমরা সবাই জোর দেই এই দ্বিতীয় ভাষা শিক্ষার দিকে।।আমাদের বেশির ভাগের ধারনা যে, প্রাথমিক বয়সটাই গুরুত্বপূর্ন দ্বিতীয়ভাষা শিক্ষার জন্য। আবার অনেকে মাতৃভাষাকে গুরুত্ব দিতে যেয়ে ভবিষ্যত নাগরিকদের ভবিষ্যতটাই ঠেলে দিচ্ছেন এক অনিশ্চয়তার দিকে।।
কারন বর্তমানের বিশ্ববানিজ্যের যুগে কাকে কখন নিজের উন্নতির জন্য কোথায় না যেতে হচ্ছে!! যেখানেই যান দেশ থেকে বেড়োলেই আপনার প্রয়োজন পড়বে দ্বিতীয় ভাষার।। তখন শত যোগ্যতা থাকা সত্বেও শুধুমাত্র একটি আন্তর্জাতিক ভাষার জন্য আপনি প্রতিযোগীতায় পিছিয়ে থাকবেন!! এই ব্লগেও প্রবাসী অনেকেই এই ভাষা নিয়ে সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন।। (যদিও কয়েকটিই আন্তর্জাতিক ভাষা আছে।। কিন্ত আমি আলোচনা করছি শুধু ইংরেজীকে সাথে নিয়ে)।।
পরিশেষে বলবো, যদিও শিশুকালে না শিখেছেন, কিন্ত আর যেন দেরী না হয়।। শিশুকে শেখান সম্ভব হলে, নিজেও শিখুন।।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১:০২