যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের চেয়ে দেশের সঙ্কট কাটানো জরুরি
মধুদার স্মরণসভায় বক্তারা
এক কঠিন অবস্থার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। এভাবে লাগাতার জরুরি অবস্থা কোনো দেশে চলতে পারে না। মানুষ দিশেহারা অথচ কথা বলার অধিকার নেই। এটি দেশের মানুষের সাথে তামাশা ছাড়া অন্য কিছু নয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়া দরকার। তবে এ মুহূর্তে এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো দেশকে সঙ্কটের হাত থেকে উদ্ধার করা। আর এ ক্ষেত্রে ছাত্রদের ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।
গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর কেন্টিনে মধুদার স্মরণসভা উপলক্ষে বক্তারা এ কথা বলেন। ভিসি অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব নজরুল ইসলাম খান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ডাকসু’র সাবেক ভিপি তোফায়েল আহমেদ, মাহমুদুর রহমান মান্না, মাহফুজা খানম, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি সামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, সাবেক রাকসু ভিপি রাগিব হাসান মুন্না, সাবেক ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান নূর, খায়রুল কবির খোকন, রুহুল কুদ্দুস বাবু, নাজমুল হক প্রধান, নাজমা আক্তার, অপু উকিল, জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, এ দেশের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে। প্রতিদিনই মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। ৩৭ বছরেও এ দেশ বিশ্বের কোনো একটি পর্যায়ে পৌঁছতে পারেনি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে বলেন, আমরা সবাই তাদের বিচার চাই। কিন্তু এ মুহূর্তে তাদের বিচারের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো দেশকে সঙ্কটের হাত থেকে উদ্ধার করা। তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, এখন কাদের মুখ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি উঠছে? যাদের মুখ থেকে এ দাবি উঠছে তারা অতি দুর্বল। সবলদের মুখ থেকে এখনো এ দাবি ওঠেনি। বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, আমরা সুযোগসন্ধানী। নিজেদের প্রয়োজনে তাদের সাথে আঁতাত করি। আবার প্রয়োজন শেষ হলে তাদের বিরুদ্ধে লেগে যাই। যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি আরো অনেক আগেই সমাধান হওয়া উচিত ছিল।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, এক কঠিন অবস্থার মধ্যে বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে। এভাবে লাগাতার জরুরি অবস্থা কোনো দেশে চলতে পারে না। তিনি দ্রুত জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার ও সবার আগে জাতীয় সংসদ নিবার্চন দাবি করেন।
ডাকসুর সাবেক ভিপি আরো বলেন, তাদের সময়ে ছাত্ররা অনেক সংগঠিত ছিলেন। দলীয় সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধ্বে ছিলেন তারা। তাদের মধ্যে আদর্শগত দ্বন্দ্ব থাকলেও দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তবে আদর্শগত কারণে সঙ্ঘাত হয়নি এমনটি নয়। ১৯৬৯ সালে আগস্ট মাসে বগুড়ার এক ছাত্র তাদের হাতে নিহত হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক শফিউল বারী বাবু, ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম, সাধারণ সম্পাদক মানবেন্দ্র দেব প্রমুখ। -বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
সূত্র: দৈনিক নয়াদিগন্ত
(২৫ জুলাই, ২০০৮)
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৫:২২