মাঝে মাঝে মনে হয় তোমার সম্পূর্ণ সত্তা আমার সতত নিয়ন্ত্রণাধীন- রয়েছে
আমার একচ্ছত্র অধিকার তোমার সর্বাঙ্গীন মন ও দেহে।
কখনো সখনো তাই বিষম বেখেয়ালে বলে ফেলি, ‘আজ সন্ধ্যায় তুমি ছাদে যেও না,
উঠোনের বাগানে করো না বিক্ষিপ্ত পায়চারি।’
বড্ড আহ্লাদে কখনো বলে ফেলি, ‘আজ তুমি কোথাও যদি যাও আমার সমস্ত দিন
মাটি করে, আমি আর একটি মুহূর্তও বাঁচবো না।’
‘কেন তুমি এই ভরদুপুরে বাইরে বেরোবে? তার চেয়ে গোসল সেরে এসে
সদ্যস্নাতা রমণী হও তুমি। ভেজা চুল তোয়ালেতে ঝেড়ে
চিরুনি হাতে দাঁড়াও আয়নায়- আমি ঠিক ছায়ার মতো তোমার পেছনে
দুধেল ঘাড় ঘেঁষে, উষ্ণ নিশ্বাসে।’
এখনো আমার অমোঘ বিশ্বাস- তোমার সারাবেলা, আহারনিদ্রা- সকল ব্যস্ততায়
আমাতেই সমর্পিতা তুমি। কবিকে করেছো বশীভূত কী এক সম্মোহনে,
কী এক দুর্ভেদ্য বেষ্টনি করেছো রচনা তোমার চারপাশে, কেন্দ্রবিন্দুতে
তুমি আর আমি। এখনো বিশ্বাস করি, আমার সান্নিধ্যের স্পর্শে ভুলে যাও
জগৎ-সংসার; এখনো বিশ্বাস করি, ভ্রু-ইশারায় ডাকলেই
বিলাসী রাজপ্রাসাদ তুচ্ছাতিতুচ্ছ হয়ে যাবে তোমার কাছে,
একরত্তি জীর্ণ পোশাকে সন্ন্যাস গ্রহণে হবে আমার সঙ্গিনী।
এখনো তীব্র বিশ্বাস করি, যদি বলি – আজ তুমি আজ কোথাও যাবে না
আজ তুমি নীল-আসমানী শাড়িখানি পরবে, হাসনাহেনার ঘ্রাণ নেবে বুকে,
ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে গুনগুন সুরে গাইতে গাইতে গান
তুমি সাজবে
তুমি সাজবে
তুমি সাজবে শুধু আমারই জন্য
তারপর সত্যিই, তুমি আজ কোথাও যাবে না
তুমি আজ কোথাও যাবে না
কোথাও যাবে না।
বিশ্বাস করো, বিশ্বাস ছাড়া আমার আর কিছুই নেই আজকাল।
২০০৬
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৪