ক'দিন আগেও তিন বেলা ভাত খেতাম।
আব্বার মজুরি বাড়ে নাই-
রাজার শাইলের দাম বাড়ে, বাড়ে আমার ক্ষুধা-
এখন একবেলা খাই।
সেদিনও মা' কেবল আমার থালা চেটে খেয়েছিলো;
আব্বা তখন দূয়ারে বসে বিড়ি ফুঁকতেছিলো-
আর ক্ষুধা তাড়াতে ছিলো।
গোলাঘরের দক্ষিনের বেড়াটা ভেঙ্গে পড়েছে
আব্বার মাথার উপর।
রসুইঘরের চুলার মাটিতে ফাটল ধরেছে-
মা'র বুকও ভাঙ্গে অলুক্ষনের ছুতায়।
আর মাও বিকেলের উঁকুন বাছার আড্ডা ছেড়ে
শাড়ীর তালি গুনে নিবিড় মনে-
দূর থেকে আব্বার গেঞ্জির ফুটাও।
কুত্তাটা এখন আর উঠোনে ঘুমোয় না
মিয়া বাড়ির বারান্দায় সংসার পেতেছে।
বিড়াল পালিয়েছে ক'দিন আগে।
এখন আর মুরগীর ডিম চুরি করতে পারি না।
একটাকার কুটকুটি, দুইটাকার চলকেট
বাদাম গুড়ের টকি... কিচ্চু পাইনা খেতে;
ইশকুল থেকে শুকনো মুখে ফিরে দেখি
মাও শুকনো মুখে চুলার পাড়ে-
আব্বারও খোঁচা দাঁড়ির শুকনো মুখ,
পাতিলের তলাও শুকনো;
মা'র পানের বাটার তলা শুকালো মাসের মতো হলো।
পুরো জীবনাটাই শুকিয়ে গেলো !
সূর্য্য দেশের মাটির মতো...
মা'কে কততোবার বলেছি-
চলো মা, আমরা জলে ডুবে যাই-
আর শুকিয়ে যাবার ভয় নেই
জলেই ভিজে রবো।
মা তখন চোখের জলে গাল ভিজিয়ে নেয়
আর ফ্যাল ফ্যাল করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে।
১১.০৭.০৮
রাত ১২.১০ মি:
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ ভোর ৪:০৪