আজ বাবা দিবস। সমস্ত বাবাদের আজ একচ্ছত্র আধিপত্য। খুব আশা নিয়ে বাবা মহাশয়গণ আজ দিনের শুরু করেছেন। ছেলেপুলেরা আজ ভালোবাসায় ভাসিয়ে দিবে তাদের। সাথে বোনাস হিসেবে পাবে উপহার। অবশ্য যারা বাবা দিবস সম্পর্কে জানে!! আর যারা জানেনা আবার জানলেও এ দিবস উপলক্ষে বাড়তি কিছু করার সুযোগ নেই, তাদের কাছে কোন বারতাই গিয়ে ঠেকলো না। আমি আসলে বাংলাদেশের বাবাদের নিয়েই লিখছি। পুরো বিশ্বের যত বাবা আছেন তাদের নিয়ে লেখার মতো জ্ঞান এখনও আমার হয়নি।
কিন্তু আমি ভাবছি সেসব সন্তানদের কথা যাদের পিতা আমাদের জাতির কাছে নিকৃষ্ট রূপে পরিচিত। আমরা যাদেরকে "রাজাকার" বলি। আজ এই বাবা দিবসে তাদের সন্তানরাও নিশ্চয় বাবা দিবস সম্পর্কে জানে। এমনই এক রাজাকার পিতার সন্তানের সাথে আমার পরিচয় আছে। আজ সকালে তার সাথে আমার দেখা। আমি তখন ব্লগে বাবা দিবস নিয়ে ব্লগারদের লেখা পড়ছিলাম। তখনই তার মুখটা কালো হয়ে গেল। আমি বললাম আজ বাবা দিবস। ভাবছি বাবাকে ফোন করবো। ছেলেটার নাম সোহেল। বললাম কিরে সোহেল তোর বাবাতো রংপুর থাকে, বাবাকে ফোন করবিনা? সোহেলের কোন উত্তর নাই। এবার আমার মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। কেন যে তাকে প্রশ্নটা করতে গেলাম? আমি সোহেলকে খুবই ভালো জানি, কারণ সে আর তার মা বাবা থেকে আলাদা হয়ে গেছে বছর ১০ হলো। সোহেল যখন বুঝতে পারলো "রাজাকার" মানে কি? তখনই সোহেল মাকে নিয়ে আলাদা হয়ে গেল। ঠাঁই মিললো নানর বাড়ীতে। সেই ছোটকাল থেকে অন্যের বাড়িতে জায়গীর থেকে পড়া শুনা চালিয়ে সোহেল আজ একটি বেসরকারী কোম্পানীর মার্কেটিং ম্যানেজার।
এরকম "সোহেলদের" কষ্ট'র কোন সীমা থাকে না। তবুও তারা বেঁচে থাকে। এসব ঘৃনিত ব্যক্তির ঘরে জন্ম নেয়া দেশপ্রেমিক সন্তানেরা আজ বড় গর্বিত কষ্টে আছে।
কিন্তু সেইসব কুলাঙ্গার সন্তানদের জন্য খুবই কষ্ট হয়, যারা ঘৃনিত(রাজাকার) ব্যক্তির ঘরে জন্ম না নিয়েও রাজাকারদের জন্য সাফাই গেয়ে যায়। স্রষ্টার কাছে আমার আর্জি- "তুমি তাদেরকে আলোর সন্ধান দাও"
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:২৮