মেঘালয়া রাজ্যের খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে বর্ষাকালে ঢল নামে। ধলাই নদীতে ঢলের সাথে নেমে আসে পাথর। পরবর্তী বর্ষার আগমন পর্যন্ত চলে পাথর আহরণ। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে দেশের এই সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারীর অবস্হান।
এছাড়াও রয়েছে ১৯৬৪-১৯৬৯ সালে সোয়া দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে প্রকল্প- যার দৈর্ঘ্য ১১ মাইল ও টাওয়ার এক্সক্যাভেশন প্ল্যান্টের সংখ্যা ১২০টি। উত্তোলিত পাথর ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরীতে পাঠানো হতো। ১৯৯৪ সালের পর এই পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে।
এখান থেকে ২০ মিনিটের ইঞ্জিন নৌকা দূরত্বে রয়েছে বিশেষ কোয়ারী’র অবস্হান। মূলত সীমান্তের অতি নিকটবর্তী হওয়ায় এই জায়গাকে বিশেষ কোয়ারী বলা হয়। সেখানে থেকে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য প্রাণভরে উপভোগ করা যায়। চলুন কিছু ছবি দেখি।
ধলাই নদীর তীর
পাথর উত্তোলন
রোপওয়ে
বিশেষ কোয়ারীতে যাওয়ার পথে
পাথরশ্রমিক পানিতে নেমেই কাজ করছে
রোপওয়ে সাবস্টেশন
পাথর উত্তোলেনর কাজে জড়িত পুরো পরিবার
স্বচ্ছ পানি
সীমান্তের বিশেষ কোয়ারী
ঐপারে বিএসএফ'এর পোস্ট
আটককৃত অবৈধ নৌকা
নীল
নীল-সবুজ আর রুক্ষতার কনট্রাস্ট
দূর পাহাড়ে ভারতীয় বাজারের অবয়ব
যেভাবে যাবেন: সিলেট থেকে ৩৩ কিমি দূরত্বে ভোলাগঞ্জের অবস্হান। সরাসরি যাতায়াত ব্যবস্হা নেই। সিলেট থেকে পাবলিক বাস বা সিএনজি বেবীট্যাক্সি করে টুকের বাজার পর্যন্ত যেতে হবে। টুকের বাজার থেকে আবার বেবীট্যাক্সি করে ভোলাগঞ্জ যেতে হবে। বিশেষ কোয়ারীতে যেতে হলে নদী তীরে অবস্হিত পোস্টের বিডিআর’এর অনুমতি নিতে হবে। ইঞ্জিন নৌকার ভাড়া ১৫০০- ২০০০/- পর্যন্ত। এতো ভাড়া কেন জানতে চাইলে জানা গেল- পাথর উত্তোলনের জন্য এই নৌকাগুলো ব্যবহৃত হয়। এতে মাঝিদের প্রচুর আয় হয়। ফলে মানুষ পরিবহন করতে হলে পাথর পরিবহনের সমান ভাড়া না পেলে তারা ভাড়া খাটতে রাজী হয় না। বিশেষ কোয়ারীতেও বিডিআর পোস্ট রয়েছে। তাদের নলেজে রেখে সীমান্ত এলাকা ঘোরাফেরা করা শ্রেয়।
সিলেট- ভোলাগঞ্জ সড়কের অবস্হ খু্বই শোচনীয়। নিজের বাহন না থাকলে নারী/শিশুকে নিয়ে ভ্রমন কষ্টকর হয়ে যাবে। সিলেট শহর থেকে সড়ক দূরত্ব কম হলেও রাস্তার কারণে সময় লাগবে প্রায় দেড় ঘন্টা। ভোলাগঞ্জে আপনি সর্বোচ্চ দেড় ঘন্টা সময় কাটালে সবকিছু কাভার হয়ে যাবে। অর্থাৎ এই ভ্রমণে আপনাকে সময় বরাদ্দ করতে হবে মোট সাড়ে চার ঘন্টা।
সড়ক যাত্রাপথের দৃশ্য। প্রায় ৩০টির মতো এধরনের কালভার্ট রয়েছে।
টিপস: যখন কোন জেলায় বেড়াতে যাবেন সে জেলার অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে একটু চোখ বুলিয়ে নিন। ওয়েবসাইটে সে জেলার ঐতিহ্যবাহী/ দর্শনীয় স্হানের সচিত্র বর্ণনা রয়েছে। এ থেকে আপনি জায়গা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা গ্রহণের পাশাপাশি কোন জায়গা দেখবেন সেটা সহজে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১২ রাত ৮:০১