ফেসবুকে দেখলাম ইসরাইলি পন্য বয়কটের ডাক দেয়া হচ্ছে।
ব্যাপারটি বুঝলাম না। কারণ আমাদের সাথে তো ইসরাইলের সম্পর্ক নাই। তাহলে ওদের প্রোডাক্ট আসলো কোথা থেকে??
বিভিন্ন মানুষের পোস্টে যেসব ইসরাইলি প্রোডাক্টের লিস্ট দেয়া হচ্ছে, সেটা দেখে আমি আরো অবাক হলাম।
Pepsi, Coca Cola,7up,Mirinda, KitKat, Loreal, Apex,Kodak, Gillette, Nike, Intel, Disney,এছাড়া Nestle এর সকল পণ্যঃ Nescafe,Maggi Noodles,Nedo, ইত্যাদি৷
আমি আরো অবাক হলাম।
maggi noodles মালয়েশিয়ার, intel, pepsi, coca cola disney, Gillette আমেরিকার, Loreal ফ্রান্সের, Nestle সুইজারল্যান্ডের।
in fact, উপরের একটাও ইসরাইলি পন্য না।
দয়া করে বিভ্রান্ত হবেন না এইসবে। এই লিংকে যান। যেগুলো জেনুইন ইসরাইলি brands .. সেগুলো দেখুন।
Click This Link
হয়ত বলতে পারেন যে উপরের কিছু প্রোডাক্টের মালিক বা পরিচালনা পরিষদের কেউ কেউ ইহুদি। যেহেতু দুনিয়ার যে প্রান্তেই ইহুদি জন্ম নিক, সে by default ইসরাইলের নাগরিকও বা হবার ক্ষমতা রাখে, সেহেতু এরা ইসরাইলকে সাহায্য করে।
সুতরাং এদের বর্জন করুন।
ভাই, সেই হিসাব করলে তো এই ফেসবুকও বাদ দিতে হবে।
চেলসির খেলা দেখা যাবে না। কারণ মালিক রুশ ইহুদি আব্রামোভিচ। Google ব্যবহার করা যাবে না, কারণ Sergey Brin রুশ বংশোদ্ভূত ইহুদি। and guess what?? ল্যারি পেজও ইহুদি।
Dell ল্যাপটপ কম্পিউটার কেনা যাবে না, কারণ মাইকেল ডেল একজন ইহুদি।
Microsoft এর Co-founder পল এলেন ও ইহুদি।
আমেরিকার অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তি Michael Bloomberg একজন ইহুদি।
oracle এর মালিক Larry Ellison একজন ইহুদি।
পারবেন এসব ছাড়া থাকতে??
আর পারসোনালি আমি এইভাবে মানুষকে ধর্মীয় পরিচয়ে generalize করা, stereotype দৃষ্টিতে দেখা পছন্দ করি না। দুনিয়াতে সব সময় কিছু মানুষ খারাপ থাকে, সবাই না। কিছু মানুষের খারাপ কর্মের দায়ভার দুনিয়ার সবাইকে নিতে হয়।
যেমন আমেরিকা সহ সারা ইউরোপে এখন চলছে ইসলামোফোবিয়া। 9/11 এর পর থেকে।
অনেকটা গত শতাব্দীর অ্যান্টি সিমেটিজমের মত। অর্থাৎ ইহুদি বিদ্বেষবাদের মত। এখন মুসলিম দেখলেই আল কায়দা, জেহাদি বা সন্ত্রাসী বা জঙ্গি বলে তারা ট্যাগ দেয়। এই সুযোগ করে দিয়েছে তাদের লাদেনের মত অল্প কিছু উগ্রবাদি ফ্যান্যাটিক।
হয়ত একদিন এইসব কিছু মানুষের জন্য ১.৬ বিলিয়ন মুসলিমদের মাসুল দিতে হবে।
ফিলিস্তিনিতে যা হচ্ছে সেটা গনহত্যা। আমরা এতো হাজার মাইল দূরে বসে কষ্ট পাচ্ছি, আর জর্ডান, লেবানন, সৌদিরা কী করতেছে??
যত মানুষ ফিলিস্তিনি ভুখণ্ডে আছে, তারচেয়ে বেশি মানুষ আছে লেবানন আর জর্ডানের রিফিউজি ক্যাম্পে শরণার্থী হিসেবে। আজ এতোকাল এই সমস্যা চলছে। ৪ বার সমগ্র আরব বিশ্ব এক হয়ে ইসরাইলের সাথে যুদ্ধে গেছে, এবং নিজেদের ভুলে চারবারই শোচনীয়ে পরাজয় বরণ করেছে নিজেদের ভুলে।
কই?? একবারও তো শুনি নি ফিলিস্তিনিদের অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে তাদের মুক্তিযুদ্ধ করার জন্য আরব বিশ্ব এগিয়ে আসছে !! কেন এমন হয় না জানেন??
ISIS বা আল কায়দার তো অস্ত্রের অভাব হয় না। তাহলে ফিলিস্তিনিরা কেন পাথর মারে??
এসব প্রশ্ন কেউ করে না। কারো মনে আসে না। যে সৌদি সরকার সারাদিন ধর্মের ছবক দেয়, তাদের পাশেই ২০০২ সালে সুদানে লাখ লাখ মুসলিম না খেয়ে দুর্ভিক্ষে মরেছিলো। কই? তাদের খাবার জোটে নি কেন??
তারা কালো বলে তাদের মরা লাশ দেখলে অনেকের হয়ত মনে দাগ কাটে না। তাই না?? হায়রে মানুষ।
ক্রেডিটঃ Faisal Shovon