আমি একটু দেরীতে সভায় ঢুকেছিলাম। টুপ করে বসে পড়লাম এক সহকর্মীর পাশে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধবগতির বাজারে বাড়িভাড়া, সন্তানের লেখাপড়ার খরচ, চিকিৎসা, যাতায়াত খরচ যে হারে বেড়েছে তাতে অনাগত ভবিষ্যতের কথা ভেবে আঁতকে উঠছে সবাই।পাল ছেঁড়া নৌকার নাবিকের মত অথৈ সাগরে পরে যেন স্তব্ধ হয়ে গেছে।নীরবতা এমনভাবে বিরাজ করছে যেন বড় কোন ঝড়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে অথবা গভীর প্রার্থনায় মগ্ন সবাই।
'হ্যালো'- সাউন্ড চেক, 'হ্যালো', 'হ্যালো'-অধ্যক্ষের মাইক্রোফোন টেস্ট করার শব্দে সবার সম্বিত ফিরে আসে। মুহূর্তে পুরো অডিটোরিয়াম ক্লাসরুমে পরিণত হয়ে যায়। অধ্যক্ষ একে একে নীতিমালা পড়ে শোনাচ্ছেন আর শ্রেণিকক্ষে পাঠে অমনোযোগী ছাত্রদের মত শিক্ষকরা কথা বলতে থাকেন। প্রত্যেই বলে যাচ্ছে নিজের মত করে। আজ যেন কথার অর্গল খুলে গেছে সবার। কে কাকে কী বলছে, দিশা নাই কারো।
মাইক্রোফোন হাতে সামনে উপবিষ্ট পুরোহিত মন্ত্র পড়ে যাচ্ছেন একই লয়ে। আমি শুনছি পুরোহিত বলছেন-
'হে শিক্ষক জাতি! টাকা হাতের ময়লা। এই ময়লার পেছনে তোমরা ছোটাছুটি কর না ! পরকালে তোমাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত শান্তি।' তিনি বলেই চলেছেন। আবার নীরবতা। নিঃশব্দ এমনভাবে বিরাজ করছে যেন বড় কোন ঝড়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে অথবা গভীর প্রার্থনায় মগ্ন সবাই।
শান্তি বিরাজ করুক ঘরে ঘরে। শুধু সাদা চকে বন্দী আমাদের ভুবন।।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০১২ রাত ১:২১