
দন্তে, পেত্রার্চ, লিওনার্দো-দা-ভিঞ্চি, মাইকেলেঞ্জেলো বা ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলের মতো এতো বেশি সংখ্যক বিখ্যাত মানুষের জন্ম যে শহরে তা হলো ফ্লোরেন্স বা ইটালীয়ান ভাষায় ফিরেনজে। আরনো নদীর তীরে অবস্থিত ইতালীয়ান রেনেসাঁর জন্মদাত্রী এ শহরটি মধ্য যুগের এথেন্স নামে খ্যাত ছিল। ফ্লোরেন্সের মেডিসি পরিবারটিই সম্ভবতঃ পৃথিবীর ইতিহাসে সবচাইতে প্রভাবশালী পরিবার। মেডিসিরা শুধু ফ্লোরেন্সেই ৩০০ বছর রাজত্ব করেনি, এই পরিবারেই জন্মনিয়েছে ফ্রান্সের রানী ক্যাথেরিন ডি মেডিসি, স্কটিস রানী মেরী ডি মেডিসি সহ ৩ জন পোপ। স্পেনের রাজা ফিলিপ ২ ছিলেন এই পরিবারেরই জামাতা। তাই স্পেন, ফ্রান্স বা স্কটল্যান্ডের রাজাদের সাথে এই পরিবারের ছিল রক্তের সম্পর্ক। এই সেই ফ্লোরেন্স - যা না দেখলে ইতালীর অনেক কিছুই দেখা বাকি থেকে যায়।
রোম থেকে ইউরোষ্টারে ১ ঘন্টা ২১ মিনিটের পথ। তাই ভোর বেলা রওয়ানা দিয়ে সকাল সকাল পৌঁছে যাওয়া যায়। পরিকল্পনা হলো সারাদিন ফ্লোরেন্স দেখে রাতটাও ওখানেই কাটানো, পরদিন কাছের শহর পিসা দেখে রোমে ফেরা। সবকিছুই পরিকল্পনা মাফিক হলেও পরে বুঝলাম মাত্র একদিন ফ্লোরেন্স দেখার জন্য একেবারেই অকিঞ্চিৎকর। আমার মনে হয়, ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে রোমানটিক শহর এটি। অনাবিল সৌন্দর্যের মাঝে মৌনতাকে শান্তিই বলা যায় - হাজারো পর্যটকের ভীড়ে সে শান্তি বোধকরি কখনো ম্লান হয় না।
এখানে আছে ৮০টির বেশি যাদুঘর, আগেথেকে বুকিং দেয়া না থাকলে এর কোন বিখ্যাত একটাতে ঢুকতেই দিন পার হয়ে যায়। তবে খোলা শহরের এখানে সেখানে স্থাপত্য আর ভাস্কর্যের যে ঐশ্বর্য ছড়িয়ে আছে তাতে পুরো শহরটাকেই একটা মিউজিয়াম বলে মনে হবে আপনার।
রাতের ফ্লোরেন্সঃ ***

পিয়েৎসা মাইকেলেঞ্জেলো থেকে ফ্লোরেন্সঃ

অরনো নদী, ফ্লোরেন্সঃ ***

পন্টে ভিচ্চিও, অরনো নদীর উপর প্রায় ৮০০ বছরের পুরাতন ব্রীজ। এই ব্রীজটি এখন ঐতিহ্যবাহী অভিজাত স্বর্নালঙ্কারের বাজার হিসাবে ব্যবহৃত হয়ঃ

সান্তা মারিয়া নভেল্লা ক্যাথেড্রালঃ

ডুমো ক্যাথেড্রাল ও ব্যাপটিস্ট্রীঃ ***

হারকিউলিসের মূর্তিঃ

হাইড্রার মূর্তিঃ (যে ডেভিলকে হারকিউলিস ধ্বংশ করেছিল)
নেপচুন ফাউন্টেনঃ
সাবিনা'স এবডাকসানঃ ( রোমে নারীদের সংখ্যা আনুপাতিক হারে কমে গেলে সাবিনা গোত্রের নারীদেরকে তারা অপহরণ করে এনেছিলো, তারই স্মৃতিতে কিছু ভাষ্কর্য)
মাইকেলেঞ্জেলোর মূর্তিঃ

দন্তের মূর্তিঃ
লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মূর্তিঃ

ষ্টার কাবাব, ফ্লোরেন্সঃ (ঢাকা নয়)
ফ্লোরেন্সের কাছেই অরনো নদীর তীরে গ্যালিলিওর জন্মভূমি পিসা। পিসার খ্যাতি মূলতঃ হেলানো টাওয়ারের জন্য। শ্বেত পাথরের ক্যথেড্রাল, ব্যাপটিস্ট্রি আর হেলানো বেল টাওয়ার কলোসিয়ামের পর ইতালীর দ্বিতীয় বিখ্যাত ঐতিহাসিক স্থাপনা। ১১৭৩ সালে টাওয়ারের নির্মন কাজ শুরু হলেও শেষ হয় ১৩১৯ সালে। নির্মান কালীন সময়েই বেকে যেতে থাকে টাওয়ারটি, তবে এখন পর্যন্ত তা দাঁড়িয়েই আছে ৫ ডিগ্রী হেলানো অবস্থায়। দুটি ভিন্ন ভরের ভারী বস্তু উপর থেকে ফেলে দিলে যে একই সাথে মাটিতে পরে তা গ্যালিলিও প্রমান করেছিলেন পিসা টাওয়ারের উপর থেকে পরীক্ষা করে।


অরনো নদী, পিসাঃ
***


পুরাতন পোষ্টঃ
পম্পেই থেকে ভিসুভিয়াস - কিছু ছবি, কিছু স্মৃতি Click This Link
ঐতিহাসিক শহর রোম - অল্প কয়েকটা দিনে যেমনটা দেখেছি। সাথে কিছু ছবি থাকছে বোনাস হিসাবে। Click This Link
মন ভালো করা কিছু ছবি - ক্যামেরার চোখে কায়রো Click This Link
মজার ছবি - জিব্রাল্টার এয়ার পোর্ট(???) Click This Link
ছবিতে প্যারিস Click This Link
***এই চিহ্নযুক্ত ছবিগুলো আমার নিজের তোলা নয়।