নৃত্যে রত ভারতীয় নটেশ্বরদের কাঁধের উপর তিন-পাখার ন্যায় ঘূর্ণায়মান নটীদের শরীর গুলোর উরু সন্ধির কালো জাঙ্গীয়ার অন্তরালের রহস্য সন্ধানে হাজার হাজার বাঙাল দর্শকের যুগলবন্দী কুতকুতে চোখ যখন উন্মুখ, বাঙালীর অন্তরের বাস্তবিক শো-ডাউন করে অন্তর শো-বিজের মহানুভবতায় দেড় ঘন্টায় একুশ কোটি টাকা তখন বিডিআর, তিনবাহিনী তথা রাষ্ট্রের নাকের ডগা দিয়ে বিনা রক্তপাতে বর্ডার পার।মূদ্রাস্ফীতীর উচ্চহারের এই দু:সময়ে অন্তর শো-বিজের এই মহানুভবতা জাতি আজীবন কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করবে সন্দেহ নাই। স্ফীত জনসংখ্যা না হোক অন্তত: স্ফীত হয়ে ওঠা মূদ্রবাজারের কিছু টাকাতো পাচার করা গেলো।ইনফ্লেশনের এই বাজারে মূদ্রা পাচারের রাষ্ট্রের এই তোড়জোড়ের বিরুদ্ধে বৃদ্ধাঙ্গূলী প্রদর্শন করে ফেলানী দোষই করেছিলো তাই ব্লাড-সাকিং-ফোর্সের গুলিতে যখন ওর ঝাঁঝরা শরীরটা কাঁটাতারে ঝুলছিলো তখন রাষ্ট্রপক্ষ থেকে কোনরকম সহানুভূতি আশা করাটা দেশদ্রোহীতার পর্যায়েই পড়ে।এই টুকুন মেয়ের এতো সাহস, ভারত সরকারের ট্যাক্স মেরে খায় !! হাতী-ঘোড়া গেলো তল আর ..ফেলানী… থাক আমি দেশদ্রোহী হতে চাইনা তবে আন্তর্জালিক খবর মারফত জানতে পেলাম যুক্ত রাষ্ট্রের বর্ডার সীমান্তে গুলিতে একজন মেক্সিকান নিহত হওয়ায় সেদেশের প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন ( লিঙ্ক ) ।হয়তো ওদের মূদ্রাস্ফীতির সমস্যা নেই সেই জন্য।তাই আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নিশ্চুপ থাকাটা ন্যায্যতা দাবী করতেই পারে।
ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ।আহা বড়দা।বড়দা থাকলে চিন্তা কি।এভাবে বাঙাল নামক মনুষ্য কীট মারতে থাকলে স্ফীত জনসংখ্যাও এক সময় কমে আসবে এটা দাদাদের কাছে আশা করাই যায়।আর হিউম্যান রাইটস-টাইটস ওই সব বুজুরুকি কিভাবে সামল দিতে হয় তা বড়দা জানেন।পেইড ব্লগার, মিডিয়া, জার্নালিষ্ট সবাই বিএসএফ কে বর্ডার-স্যালভেশন-ফোর্স আখ্যা দিতে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আন্তর্জালিক মাধ্যমে তারা ফেলানী হত্যার জায়েজী ফয়সালাও বাতলিয়ে দিয়েছে।সত্যিইতো, এই দেশেতো রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের রিজিকের অভাব হয়না, তারাতো তারকাঁটার নিষেধ অমান্য করে দাদাদের দেশে যায়না, ফেলানী যায় কেন? (!!!)।রাজনীতি না করে ফেলানী অবৈধ ভাবে সীমানা পাড়ি দিয়ে অবৈধ কাজ করেছে তাই ফেলানী হত্যা জায়েজ।আহা বড়ই অম্ল মধুর বানী।বানী চিরন্তনে ঠাঁই হওয়া উচিত। হাসিনা খালেদার পাছায় দাগ আছে কি না জানিনা, শুনিনি কখনো।ওদিকে আঠারো ঘন্টা শেলাই মেশিনে বসে থাকতে থাকতে গার্মেন্টস কর্মীদের পাছায় নাকি দাগ হয়ে যায়।ওরাও যে কেনো হাসিনা-খালেদা হবার চেষ্টা করেনা।আগুনে পুড়ে কাবাব হয় ভালোই হয়।হাসিনা-খালেদা হতে না পারার প্রাপ্তি।
ইউএসএআইডির সোশ্যাল মার্কেটিং এর প্রস্তুতকৃত কনডম ব্র্যাক এর মাধ্যমে দোড়গোড়ায় ফ্রি পাবার পরও রহমানদা আর সুশীলদার কেন চারটি করে মেয়ে, সে এক বিষ্ময়।এই জ্যান্ত মানুষ গুলোর মুখে ঢেঁকি শাক আর ভাতের ফ্যান আর কত দেয়া যায়? কাবিখা (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) কর্মসূচীতে রাস্তার জন্য সারাদিন মাটি কেটে দশটাকা আর আধাসের গমেতো ভাতের পেট ভরেনা।রহমানদা তাই সন্ধার পরে ওপার থেকে জিনিস এনে এপারে বিক্রি করে।শহুরে বেগম সাহেবাদের কাছে ভারতীয় শাড়ী আর চাদরের বড় কদর।সুশীলদার সাথে বিএসএফ এর যোগসাজ ভালো।মধ্যবর্তী ব্যবস্থাটা সেই করে দেয়।তারও তো চলতে হয়।
সারাদিন মাটি কেটে হাড়-ভাঙ্গা পরিশ্রম করে সন্ধ্যার পর চুরি করতে বের হতে রহমানদা’র শরীরে সইতো? কোন দিন জিমনেসিয়ামে না যাওয়া শরীরটা তাই বুঝি অমন লিকলিকে? আর সুশীলদা? সারাদিন পরিশ্রমের পর এই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে কতদূর হেঁটে বন-বাদাড় পেরিয়ে সেই বিএসএফ এর ক্যাম্পে গিযে তাদের সাথে দর কষাকষি? দেয়ালে পিঠ কতটা ঠেকলে পরে একটা মানুষ দিনের পর দিন এরকম অমানুষের মতো পরিশ্রম করতে পারে? পেটের যন্ত্রণা কতটা হলে পরে একজন বাবা তার মেয়ের লাশ কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকতে দেখার শক্তি সঞ্চয় করতে পারে?
হাহ্ । আমি অধম এতো কিছু জানিনা।জানি শুধু এতো প্রশ্ন করতে নেই।সুমন চট্টপাধ্যায়ের সেই তিন বাঁদরের মতো।যারা খারাপ কথা বলেনা, খারাপ কথা শোনেনা এবং খারাপ জিনিস দেখেনা।এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চাইতে আমি বরং বর্ণিল আম্রিকায় বসে সুদৃশ্য কোমড় চিকন গ্লাসে হুইস্কি অন রক এ একটি সুদৃশ্য পিংক অর্কিড চুবিয়ে চুমুক দেব আর ফেলানী হত্যা জায়েজ করার তড়িকা বাতলাবো। ভুলে যাবো জীবনকে জানার জন্য বলা রবার্ট পার্কের বলা ওই কথাটি "Go and sit in the lounges of luxury hotels and on the doorsteps of the flophouses; sit on the Gold Coast settees and on the slum shakedowns; sit in the Orchestra Hall and in the Star and Garter Burlesque. In short go and get the seat of your pants dirty in real research ." (Robert Park, 1927)’……………….
১৭" স্ক্রীনের সামনে বসে ফেলানীদের জীবন বোঝা যাবেনা।