somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"বিশ্ববেহায়া খেতাবটির উত্তরাধিকারী বর্তমানে কে হতে পারেন? " আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী

০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লন্ডনের এক তরুণ বাঙালী সাংবাদিকের বাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি জমজমাট আড্ডা। আমার বয়সী মানুষের সংখ্যা কম। চল্লিশের নিচের মানুষের সংখ্যাই বেশি। সকলকে যে চিনি এমনও নয়। জোর আড্ডা চলছে। তার মধ্যে তরুণ সাংবাদিক বন্ধুটি আমাকে বললেন, আমরা একটা বিষয় নিয়ে তর্ক করছি, এ সম্পর্কে আপনার মতামত জানতে চাই। জিজ্ঞাসা করলাম, বিষয়টা কি? বন্ধুটি বললেন, বেশ কয়েক বছর আগে শিল্পী কামরুল হাসান তাঁর আকস্মিক মৃত্যুর কয়েক মিনিট আগে তখনকার প্রেসিডেন্ট এরশাদ সাহেবের একটি কার্টুন এঁকে তাঁর নাম দিয়েছিলেন ‘বিশ্ববেহায়া।’ দেশে তা নিয়ে শোরগোল পড়েছিল।
বলেছি, বিষয়টা আমার মনে আছে। তা নিয়ে এতোদিন পর তর্কাতর্কি কেন? তরুণ সাংবাদিক বললেন, তর্কাতর্কি করছি না, বহু বছর আগে শিল্পী কামরুল হাসান একজনকে বিশ্ব বেহায়া খেতাব দিয়েছিলেন। আমাদের মনে হয়, এখন তার চাইতেও বড় বিশ্ব বেহায়া বাংলাদেশে আছে। আমরা তর্ক করছি, এই খেতাবটি নতুন করে পেতে পারেন, বাংলাদেশে এমন ব্যক্তিটি এখন কে? শিল্পী কামরুল হাসানতো বেঁচে নেই। থাকলে তাঁকে জিজ্ঞাসা করতাম। বলতাম, আপনি আরেকটি কার্টুন আঁকুন।
বলেছি, এই নতুন বিশ্ববেহায়াটি কে, তা তোমরা আমার কাছে জানতে চাও? আমার পক্ষে তা বলা সম্ভব নয়। শিল্পী কামরুল হাসানের মতো অন্তর্দৃষ্টি আমার নেই। তরুণ সাংবাদিক বললেন, না, না, আপনার কাছে নাম জানতে চাই না। আমরা বন্ধুরা মিলে একটা নামের তালিকা করেছি। এই নামগুলোর মধ্যে কাকে এই শিরোপা দিলে সবচাইতে ভাল মানায়, তা আপনার কাছে জানতে চাইছি।
বলেই একটি কাগজে লেখা নামের তালিকা তরুণ সাংবাদিক আমার চোখের সামনে তুলে ধরলেন। দেখি, তাতে নয় দশটি নাম। বিস্মিত হলাম, তাতে রয়েছে সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ইয়াজউদ্দীন আহমদ থেকে শুরু করে ড. কামাল হোসেন, কর্নেল (অব) অলি, সা.কা. চৌধুরী, এমন কি মতিউর রহমান, শফিক রেহমানের মতো খ্যাতনামা সম্পাদক সাংবাদিকদের নাম। একজন সাবেক বিচারপতিরও নাম রয়েছে। এককালে প্রগতিশীল মহলে যার নাম ডাক ছিল।
তরুণ সাংবাদিককে বললাম, এরা সকলেই দেশের নামী-দামী লোক। এদের বিশ্ব বেহায়া খেতাব দিলে তা কি মানাবে?
তরুণ সাংবাদিক বললেন, মানাবে কি মানাবে না তা আমরা জানি না। তবে তাদের কথাবার্তা, কার্যকলাপের একটি তালিকা আমরা করেছি। সংক্ষিপ্ত তালিকা। সেটি আপনি পড়ে দেখুন, এদের যেকোন একজনকে কিংবা সকলকেই এই বিশ্ববেহায়া খেতাবটি মানায় কিনা। বলেই আরও কয়েক পাতা কাগজ আমার দিকে ঠেলে দিলেন।
বেশ বড় তালিকা। আমি বেছে বেছে কয়েকটি নামের সামনে লেখা তরুণ সাংবাদিক ও তার বন্ধুদের মন্তব্যগুলো পড়লাম। ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী। নামকরা চিকিৎসক এবং আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত কফিলউদ্দীন চৌধুরীর পুত্র। কিন্তু সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখলের সহযোগী। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। অভব্য ‘গীতা, না কোরান’ শীর্ষক নির্বাচনী প্রচারণার স্ক্রিপ্ট রাইটার (কো-রাইটার শফিক রেহমান)। রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার পর তারেক রহমানের বিরাগভাজন অত্যন্ত অশোভনভাবে তাকে প্রায় চ্যাংদোলা করে বঙ্গভবন থেকে বিতাড়ন করা হয়। রাষ্ট্রপতি পদে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়। বিকল্প ধারা দল গঠন করে ঢাকার রাজপথে মিছিল নামালে মহাখালীর কাছে তারেক বাহিনী তাকে ধাওয়া করে। তিনি রেলপথ ধরে দৌড়ে পলায়ন করেন। ঢাকার বাইরে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে মিলে জনসভা করতে গেলে আবার তারেক বাহিনী হামলা চালায়। দুই বরেণ্য নেতা টেবিলের তলায় আশ্রয় নেন। সংবাদপত্রে ছবি প্রকাশিত হয়েছে। এই ড. বদরুদ্দোজা চৌধুরী এখন তারেক রহমানকে নেতা (এমনকি তার স্ত্রীকেও) মেনে বিএনপিতে ফিরে যাওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার কাছে ঘুরঘুর করছেন।
ড. কামাল হোসেনের নামের সামনে লেখা রয়েছে, খ্যাতিমান আইনজীবী। বাংলা বলতে পারতেন না। এখনও উর্দু টানে বাংলা বলেন। মেধাবী ছাত্র ছিলেন। নীতিবান রাজনীতিক নন। বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত কাছের লোক ছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর ধীরে ধীরে দূরে সরতে থাকেন। কেউ কেউ বলেন, তিনি আমেরিকার সুনজরের লোক। গণফোরাম নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করার পর ব্যর্থ হন এবং এখন অনেকেই তাকে পলিটিক্যাল অরফান বা রাজনৈতিক এতিম বলেন। বর্তমানে তাঁর কথাবার্তা ও আচরণে আর শালীনতা ও লজ্জাবোধ নেই। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য একবার কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে গিয়ে জুটেছিলেন। তারপর গিয়ে জোটেন ডা. বদরুদ্দোজার সঙ্গে। দু’জনেই ভাঙা নৌকার মাঝি বলে পরিচিত হন। একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, কিন্তু একপাশে খালেদা জিয়া এবং অন্যপাশে মতিউর রহমান নিজামীকে নিয়ে ইফতার পার্টিতে বসতে তার আপত্তি নেই। অর্থাৎ একপাশে নব্য স্বৈরাচার আরেক পাশে রাজাকার। মধ্যখানে মধ্যমণি ড. কামাল হোসেন। লজ্জা ও আত্মমর্যাদার কোন বালাই আছে কি?
এক সময় ড. কামাল হোসেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার সেক্যুলার রাজনীতির অনুসারী ছিলেন। বর্তমানে তিনি খালেদা জিয়া ও তাঁর জামায়াত ঘেঁষা রাজনীতির অঘোষিত অনুরাগী, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এক এগারো ও মাইনাস টু থিরোরির অন্যতম আর্কিটেক্ট। হাসিনা কারাবন্দী থাকাকালে তিনি তার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে কাজ করতেও নাকি অনাগ্রহ দেখান। রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করে এখনও তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়। শেখ হাসিনাকে জব্দ করার জন্য তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যাপারেও ড. ইউনূসের পেছনে গিয়ে দাঁড়াতে লজ্জা ও বিবেক পীড়া বোধ করছেন না। তার কার্যকলাপে গণফোরামে ভাঙ্গন ধরেছে এবং রাজনীতিতে তার অবস্থা এখন হারাধনের একটি ছেলের।
শফিক রেহমানের নামের সামনে লেখা হয়েছে, বাম প্লেবয় থেকে ডান, প্রতিক্রিয়াশীল সুবিধাবাদী চার্টার্ড এ্যাকাউন্টেন্ট হিসেবে পেশায় সুবিধা করতে না পেরে বাম সাংবাদিকতায় আসেন এবং এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় তার সাপ্তাহিক ‘যায় যায় দিন’ পত্রিকা প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এরশাদের শাসনামলে তিনি নির্যাতিত হন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে তার চরিত্রচ্যুতি ঘটে। তিনি খালেদা-তারেকের অনুগ্রহভোগী হয়ে ওঠেন। তার পত্রিকার ভূমিকা রাতারাতি পাল্টে যায়। অনেকের অভিযোগ, তিনি হাওয়া ভবন ও ডিজিএফআইয়ের অর্থানুকূল্যে নামমাত্র মূল্যে জায়গা জমি কিনে অভিজাত অফিস, ঘর তৈরি করে দৈনিক যায় যায় দিন প্রকাশের ব্যবস্থা করেন। পত্রিকায় অসংখ্য স্টাফ তিনি নিয়োগ করে প্রায় দুই বছরের মতো বসিয়ে রেখে বেতন দেন। তারেক রহমানের রাজত্বকালে এই বিপুল অর্থ কোথা থেকে আসত তা কেউ জানেন না, তবে অনুমান করেন।
এরশাদের শাসনামলে শফিক রেহমান লন্ডনে থাকাকালে স্পেক্ট্রাম নামে একটি রেডিও কেন্দ্র স্থাপন করেন এবং বাংলাদেশের এক ভয়াবহ ঝড় বন্যার সময়ে চাঁদা তোলার আহ্বান জানিয়ে বিপুল অর্থ সংগ্রহ করেন। এই অর্থ তিনি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দেননি। দীর্ঘদিনেও এ অর্থ বন্যার্তদের পুনর্বাসনে ব্যয়িত না হওয়ায় জনমনে সন্দেহ দেখা দেয় এবং এ সময় বিসিসিআই ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেলে শফিক রেহমান জানান, এই টাকা ব্যাংকে গচ্ছিত ছিল, তা আটকে গেছে। তিনি তখন স্পেক্ট্র্রাম থেকে বহিষ্কৃত হয়ে ঢাকায় চলে গেছেন। বিলেতের বাংলাদেশী ডোনারদের মধ্যে প্রচ- ক্ষোভ দেখা যায়। তাদের কেউ কেউ শফিক রহমানকে লন্ডনে পেলে দৈহিক হামলাও চালাবে বলে জানায়। শফিক রেহমান গোপনে লন্ডনে এসে কিছু টাকা ব্যাংক থেকে উদ্ধার করা গেছে এই ঘোষণা দিয়ে তা বাংলাদেশের হাইকমিশনের কাছে তুলে দিয়ে আত্মরক্ষা করেন। এই টাকা ছিল সংগৃহীত অর্থের সামান্য অংশ মাত্র। তিনি এই বিপুল অর্থ এতদিন বন্যার্তদের জন্য খরচ না করে কেন ব্যাংকে রেখে দিয়েছিলেন, তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এরপর দেশে ফিরে তার ভাগ্যে আবার চন্দ্রোদয়। তিনি কোটিপতির মতো দু’হাতে অর্থ ব্যয় করে এবং অন্যান্য কাগজ থেকে সাংবাদিকদের দ্বিগুণ-ত্রিগুণ বর্ধিত বেতন দিয়ে নিজের কাগজে নিয়ে আসেন এবং বসিয়ে বসিয়ে দীর্ঘকাল বেতন দেয়ার পর পর্বতের মূষিক প্রসবের মতো একটি দৈনিক বের করেন, যেটি পাঠক প্রিয়তা অর্জনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়। বিএনপি-জামায়াত সরকারের পতন এবং শফিকুর রেহমানের পতন যেন এক সূত্রে বাঁধা ছিল। তিনি পত্রিকা বন্ধ করে, সাংবাদিকদের বেতন পরিশোধ না করে লন্ডনে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সাংবাদিকরা জানতে পেরে তাকে বিমানবন্দরে গিয়ে বিমান থেকে টেনে নামায়।
এক মনীষী দার্শনিকের পুত্র এবং বাম ঘেঁষা প্লেবয় সাংবাদিক হওয়ার পর শফিক রেহমান কিভাবে বিএনপি-জামায়াত জোট এবং স্বাধীনতার শত্রুপক্ষের প্রকাশ্য মুখপাত্রের ভূমিকা গ্রহণের নির্লজ্জতা দেখাতে পারেন, তা অনেকের কাছে এক পরম বিস্ময়। অপসাংবাদিকতার চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটতে দেখা গেছে তার লেখায়। রাজাকার রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাসের চক্রান্তে অনুষ্ঠিত ব্যর্থ সামরিক ক্যু ঘটনার সময় তিনি এ চক্রান্তের সাফাই গেয়ে কলম ধরেছিলেন। হাসিনার সভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার সময় লিখেছেন, হাসিনাই তার লুপ্ত জনপ্রিয়তা উদ্ধারের জন্য নিজে তার সভায় এ গ্রেনেড হামলার ব্যবস্থা করেছিলেন। নির্লজ্জ মিথ্যাচারে তার কোন জুড়ি নেই।
সম্প্রতি তিনি তার ম্যাডাম ও ম্যাডামের স্বামীর প্রশস্তি গেয়ে চারটি বই লিখেছেন। এই বই চারটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বাধা দিয়ে সরকার অবশ্যই অন্যায় করেছেন। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ জানানোর নামে শফিক রেহমান সম্প্রতি ঢাকার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। কিন্তু এই সংবাদ সম্মেলনে লাল কুর্তা গায়ে দিয়ে তিনি যেভাবে অশোভন নর্তন-কুর্দন করেছেন, তা অনেকের কাছে স্পেনের ষাঁড়ের লড়াইয়ের দৃশ্য মনে হয়েছে।
এরপর ‘নিরপেক্ষ’ দৈনিকের সম্পাদক মতিউর রহমানের নাম। এই নামের সামনে লেখা হয়েছে: শফিক রেহমানের শোভন সংস্করণ, তবে অধিক চতুর। শফিক রেহমান মুখোশ এঁটে চাতুরি করতে জানেন না। মতিউর রহমান জানেন। ছিলেন কট্টর বামপন্থী, এখন কট্টর রামপন্থী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি চিরকালই ছিলেন সুযোগ সন্ধানী। এখনও তাই আছেন এবং আখের গুছিয়েছেন। বাম শিবিরে থাকাকালেও তিনি চাতুর্য্যে ছিলেন অসাধারণ। তার বিরুদ্ধে পার্টি ফান্ড এবং ডিজিআইএসেফর সঙ্গে যোগাযোগ সংক্রান্ত অভিযোগ ছিল। বাকশাল জমানায় যখন জাতীয় যুবলীগ গঠিত হয়, তখন তোফায়েল আহমেদের কাছে ধরনা দিয়ে অত্যন্ত কৌশলে পঙ্কজ ভট্টাচার্র্যকে (বর্তমানে গণফোরাম নেতা) কনুইয়ের গুঁতা মেরে সরিয়ে দিয়ে যুব লীগের কার্য নির্বাহী পরিষদে নিজের নামটি ঢুকিয়েছিলেন। কম্যুনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সেক্রেটারি জেনারেলের পদ থেকে প্রয়াত ফরহাদ আহমদকেও অপসারণের চক্রান্তে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন বলে পার্টি মহলেই গুজব শোনা যায়।
কম্যুনিস্ট পার্টির মুখপাত্র ‘একতার’ সম্পাদক থাকাকালেই তিনি সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের অনুরাগী হয়ে ওঠেন। কী রহস্যজনক কারণে তা হন, জানা যায়নি। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে ল-নে গেলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিক্ষোভে তার জনসভা প- হয়ে যায়। কিন্তু ‘একতা’ পত্রিকায় মতিউর রহমান ব্যানার হেডিংয়ে খবর ছাপেন, ‘লন্ডনে জিয়াউর রহমানের প্রাণঢালা সংবর্ধনা।’
তার নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা আসলে নির্লজ্জ অসাধু সাংবাদিকতা। মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে মুখে যুদ্ধের কথা বলেন, কিন্তু মতিউর রহমান নিজামিকে ডাকেন মিতা। তার কাগজে একটি কার্টুন ছাপা হওয়ায় শুধু সাংবাদিককে বরখাস্ত করে পুলিশের নির্যাতনের মুখে ঠেলে দেননি, তার পত্রিকার অন্তর্ভুক্ত (সাপ্লিমেন্ট) ওই ম্যাগাজিনটির প্রকাশ বন্ধ করে দেন। শুধু তাই, বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিবের কাছে গিয়ে তওবা করেন এবং নতুন করে কলেমা পড়ে নতুন করে মুসলমান হন।
তার পত্রিকা মাঝে মাঝে বিএনপি-জামায়াতের মৃদু সমালোচনা করে তথাকথিত নিরপেক্ষতা জাহির করে। কিন্তু আসল টার্গেট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ। এক এগারো এবং মাইনাস টু থিরোরির বাস্তবায়নের চক্রান্তেও এই সম্পাদক ও তার পত্রিকাটির ছিল একটি বড় ভূমিকা। এখন গ্রামীণ ব্যাংক বিতর্কে ড. ইউনূসের তল্পিবাহক। নির্লজ্জাতা ও চাতুরি মিলিয়ে প্রথম আলো ও তার সম্পাদক বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় আকাশে দুই অশুভ নক্ষত্র।
সবগুলো নামের সামনে লেখা তথ্যগুলো পাঠ করলাম। তরুণ সাংবাদিককে বললাম, আমি এদের সম্পর্কে দীর্ঘকাল ধরে যা লিখে আসছি, আপনাদের লেখায় তারই প্রতিফলন ঘটেছে বলে মনে হয়। তবে এদের মধ্যে সেরা বিশ্ব বেহায়াকে, সে সম্পর্কে আমার পক্ষে মন্তব্য করা অসম্ভব। এরা কেউ কারও চাইতে কম নন। এদের সকলকেই খেতাবটি কেউ দিতে চাইলে আমার আপত্তি নেই। আজ শিল্পী কামরুল হাসানের বেঁচে থাকা উচিত ছিল। সম্ভবত তিনিই একটি কার্টুন এঁকে বলে দিতে পারতেন, এদের মধ্যে খেতাবটি পাওয়ার সবচাইতে উপযুক্ত ব্যক্তি কে?
১৪টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রে মুসলিম চরিত্রের অনুপস্থিতি: এক অনালোচিত প্রশ্ন?

লিখেছেন মুনতাসির, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:০৫

সত্যজিৎ রায়, যিনি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে পরিচিত, তাঁর চলচ্চিত্র, গল্প এবং গোয়েন্দা সিরিজ ফেলুদা বাস্তববাদী চরিত্র, সমাজচিত্র, এবং গভীর দার্শনিকতা নিয়ে আলোচিত। তবে তাঁর কাজের মধ্যে একটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সুরের জাদু: গিটার বাজালে কি ঘটবে?

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৪১



গাজীপুরের পুবাইলের পুরনো গির্জাটি রাতের আঁধারে যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। এই গির্জার নির্মাণকালে কিছু না জানা কুসংস্কারের অনুসরণ করা হয়েছিল। গাজীপুরের লোককথায় বলা হয়, এই গির্জার নিচে আটটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শুধু হিংস্র, আগ্রাসী নয় ভারত লুটেরা, লোভী এবং সাম্রাজ্যবাদীও বটে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:১৪

শুধু হিংস্র, আগ্রাসী নয় ভারত লুটেরা এবং লোভীও....

জন্মলগ্ন থেকেই ভারতের হিংস্র ও আগ্রাসী। পাকিস্তানের সাথে যোগ দিতে চাওয়া এবং স্বাধীন থাকতে চাওয়া কিছু অঞ্চল যেমন হায়দ্রাবাদ, ত্রিবাংকুর, ভূপাল, যোধপুর, জুম্ম-কাশ্মীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০০৮- ২০২৪, হাসিনা ভারতের জনম জনমের ঋণের কিছুটা শোধ করেছেন মাত্র

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১০

২০০৮- ২০২৪, হাসিনা ভারতের জনম জনমের ঋণের কিছুটা শোধ করেছেন মাত্র

এআই দ্বারা তৈরিকৃত রাজনৈতিক কার্টুন—যেখানে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অসাম্যতা ও রাজনৈতিক নির্ভরতার প্রতীকী উপস্থাপন করা হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিক্ষকদের দ্বৈত চরিত্র এবং বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:১৬


বাংলাদেশে শিক্ষার মান নিয়ে সবার মুখে নানা রকম কথা শোনা যায় । কেউ কেউ বলছেন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নতি হচ্ছে , কেউ বলে দিন দিন তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×