somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যাদের কাছে সারা জীবন কৃতজ্ঞ হয়ে গেলাম

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১০:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত বছরের এই সময়ে ব্রেকাপের পর যখন আমি পুরোটাই ভেঙে পরতেছিলাম, তখন এই ব্লগেরই কয়েকজন আমাকে এমন সব কথা বল্লো, আমি কিভাবে কোথা থেকে যেনো ঘুরে দাড়াবার সবটুকু শক্তি পেয়ে গেলাম!! আশ্চর্য ব্যাপার বটে! চিনি না, জানি না, আসল নামটাও বলতে পারবো না - এই টাইপের কিছু লোক একেবারে ছোটো ভাই মনে করে সব কিছু বুঝায় দিয়া গেলো...।

অনেকদিন হয়ে গেছে, ১ বছরেরও বেশি। একসময় সব কিছুই ঠিক হয়ে যায় - কথাটা অবান্তর শুনালেও কথাটা আসলেই ঠিক। এখন এসব ব্যাপার একটা ভোতা অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না।


বলতে গেলে প্রথমেই বিবর্তনবাদীর কথা বলতে হয়। এই মানুষটা সবচেয়ে ট্যালেন্ট। সামান্য ২ লাইন বলবে, এই দুই লাইনই আমাকে সারাক্ষন ভাবাবে এবং লাইনে আসার জন্য এই দুই লাইনই যথেষ্ঠ।

রাতমজুর নানা প্রায়ই ঐ সময়টায় ইয়াহুতে বসে বসে আমাকে বুঝাইতেন কি করতে হবে, কি করতে হবে না। সাইফুর মামার সামান্য "মন খারাপ করে না ভাই" কথা শুনলে মন খারাপ করা হারামের পর্যায়ে চলে যেত!!

আরেক পাব্লিক ছিলো নাফিস ইফতেখার। ফোন দিয়া দুনিয়ার যাবতীয় টেকি ব্যাপারে আলাপ করতো, ইয়াহুতে সারাদিন-রাত কথা হইতো। প্রথম দিকে বিরক্ত লাগলেও আস্তে আস্তে নেশায় ধরে যায়। আমরা একসাথে বসে নতুন পোস্টের আইডিয়া বের করতাম, টেকি প্রবলেমের সলিউশন বের করতাম। কয়েক মাস পর টের পাই, নাফিস হয় ইচ্ছা করে, নাহয় নিজের অজান্তেই আমার মনটাকে অন্য দিকে ডাইভার্ট করে রাখতো সবসময়, এভাবেই।

ফারা তন্বী আপু আমাকে প্রথমে ব্লগে, এরপর ইয়াহুতে সব কিছু বুঝায় বলছিলেন। সাপোর্ট দিছিলেন। উনার নিজের রিলেশনশিপের অবস্থা ছিলো করুন, তাও কোনোদিন আমার প্রতি সামান্য বিরক্ত হন নাই।


মন খারাপ থাকলে যে বাবা-মার কথা ভাবতে হয় এই মেথডটা আমি জানতাম না। সুলতানা শিরীন সাজি সেটা জানায় দিয়ে গেছেন। এটা সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে, সবক্ষেত্রে। একরামুল হক শামীম ভাইয়ের উপলব্ধিগুলা মনে রাখার মত। ভেবে ভেবে বলি অবশ্য মুখের উপর সত্যি কথা বলে ফেলছিলেন। উনার কমেন্টের জবাব দেয়ার সাহস এখনও হয় নাই আমার। স্বপ্নকর বলছিলো, "প্রেম করলে এমন ভাবে করবা যেনো কখনও ব্রেকআপ করা না লাগে। সেটা না পারলে দরকার নাই এসবের"। কথাটা কানে বাজে সবসময়েই। নাহিন কিভাবে এই বাজে সময় কাটানো যায় তার হাজারটা উপায় বাতলে দিলেন!

আকাশ_পাগলার কথা আর কি বলবো! সমবয়সী এই ছেলেটা আমার সবকথা শুনে ব্লগেই আগাগোড়া বিশ্লেষন করে মেয়ের হাজারটা দোষের কথা বের করে ফেলছিলো!! প্রথমে তার কথা ভালো না লাগলেও, ঠান্ডা মাথায় যখন ভাবি, তখন মনে হইছে সে ভূল কিছু বলে নাই। আপনাকে অনেক সালাম বস।

উপরে যাদের কথা বল্লাম, তাদের সবার সাথেই ব্লগে কমবেশি খাতির ছিলো। ছন্নছাড়ার পেন্সিল এক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম। উনার ব্লগে জীবনেও যাই নাই অথচ উনি আইসা বল্লো, রাতমজুর/একরামুল হক শামীম ভাইয়ের কাছে নাকি আমার ব্যাপারে অনেক শুনছে। এরপর সে আমাকে বিভিন্ন এংগেল দিয়া দেখাইতে লাগলো এখানে কোথায় কার দোষ ছিলো আর আমাকেই বা এখন কি করা লাগবে!!

এর বাইরে আছেন আমি এক যাযাবর, আমি পৃথিবী রচে যায়, বিষণ্ণ দুপুরে নির্জন নিষাদ, রিসাত, শান্তির দেবদূত, ধ্রুবমেঘ, আকাশচুরি, এন এইচ আর , অজানা এক পথিক, নীল-দর্পণ - যাদের কথা কখনও ভুলার নয়।

ব্লগের বাইরেও কয়েকজন আছে। বৈশাখী আপু, রুশো ভাই, এ্যানি আপু, লাবন্য সুলতানা, হামজা ও অনন্যা। এদেরকে কখনও ধন্যবাদ দেয়া হয় নাই। যেইভাবে ভূমিকম্প হইতেছে, দেরী করা ঠিক হবে না।


পোস্টটা আমার ব্লগজীবনের সবচেয়ে প্রিয় পোস্ট। যখন মন খারাপ থাকে, যখন ভেঙে পড়ি, যখন একা লাগে; পুরো পোস্টটা একবার পড়ি। আপনাদের কথা গুলা আমাকে সামনে চলার প্রেরনা দেয়। কাপুরুষ কাঙালকে সাহসী করে তুলে।

সত্যি বলতে, মাঝে মাঝে পোস্টটা পড়লে নিজের অজান্তেই চোখ ঝাপসা হয়ে যায়। হয়তো আমার মনের মানুষ নাই, হয়তো জীবনের প্রথম সম্পর্কে কেউ আমার সাথে বিট্রে করছে। কিন্তু সামহোয়ারে আমার অনেক কাছের কয়েকজন মানুষ আছেন যাদের কথা শেষ নিঃশ্বাসেও মনে থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:০৪
৫৭টি মন্তব্য ৫৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও আমার ভাবনা

লিখেছেন মেহেদী তারেক, ১০ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:৪০

অবশেষে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হলো
আমি সবসময়ই প্রজ্ঞাপন দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে ছিলাম। কারণ, বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য জনগোষ্ঠী এখনো দলটিকে সমর্থন করে। এত বড় একটি জনগোষ্ঠীর মতামত কিংবা... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিষিদ্ধ নয়, শুধু নড়াচড়া বন্ধ: আওয়ামী লীগ, ‘কার্যক্রম’ ও বিরোধীদের বিভ্রান্তির রাজনীতি

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১১ ই মে, ২০২৫ রাত ১:৫২


“আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়ে গেছে”—এই লাইনটি ফেসবুকে ঝড় তুলেছে, চায়ের কাপে তুফান এনেছে, এবং কিছু বিরোধী রাজনীতিকের মুখে সাময়িক হাসি ফিরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু একটু থামুন ! খেয়াল করুন: বলা হয়েছে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আঁচলে বাঁধা সংসার

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১১ ই মে, ২০২৫ সকাল ১০:২০



আমি তখন কলেজে পড়ি। সবেমাত্র যৌথ পরিবার ভেঙে মায়ের সঙ্গে আমাদের ছোট্ট একটা সংসার হয়েছে। নতুন সংসার গুছিয়ে নিতে, মা দিনের প্রায় সবটা সময় ঘরকন্নার কাজে পার করে দিতেন। ঘরের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ডায়েরী- ১৫৩

লিখেছেন রাজীব নুর, ১১ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১:৪৫



কেন জানি মন মেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে।
কিছুই ভালো লাগছে না। ইচ্ছা করছে ঘোড়ায় চড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ি। হাতে থাকবে চাবুক। যেখানে অন্যায় দেখবো লাগাবো দুই ঘা চাবুক। সমস্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ঐতিহাসিক দিন: বাল সাম্রাজ্যের পতন

লিখেছেন নতুন নকিব, ১১ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৫

একটি ঐতিহাসিক দিন: বাল সাম্রাজ্যের পতন

ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

প্রিয় পাঠক, গতকাল ১০ মে ২০২৫। এই দিনটি কোনো সাধারণ দিন ছিল না। এটি ছিল ঐতিহাসিক এমন একটি দিন, যা বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×