একটি গল্প শুনেন… গল্প না ঠিক, সত্য ঘটনা। আমি একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র … কিন্তু ডাইনিং এর খাবারে আমার এলার্জি আছে। প্রধান কারন এরা যেভাবে তরকারীতে হলুদ ব্যাবহার করে তাতে রান্নার পর বোঝা বড্ড দায় হয়ে যায় যে কোনটা মাছের আর কোনটা মাংসের ঝোল। আমি খাবার হোটেল থেকে এনে রুমে বসে দিব্যি আরামে খাই। অন্যদিনের মত একদিন হোটেলে গেছি, দুপুরের খাবার নিব। তো সারাদিন ক্লাস শেষে গিয়ে প্রচন্ড পানির পিপাসা লাগে, হোটেলে ঢুকেই খেয়াল করলাম একটা টেবিল ছাড়া সবগুলা টেবিলেই খাওয়া দাওয়া করছে। আমি আবার ক্লাস এইট থেকেই রাতে বাসার বাইরে থাকতাম তাই গ্লাসে পানি খাওয়ার অভ্যেস খুবইইই কম, জগ উচু করেই খায়। তো ওনাদের সামনে টেবিল থেকে জগ নিয়ে পানি খাওয়াটা অভদ্রতা দেখায় বলে আমি যেই টেবিলটা ফাকা আগে ঐ টেবিলটার জগের দিকে হাত বাড়ালাম। কিন্তু জগটা পুরোপুরি ভর্তি ছিল … জানতাম যদি তুলে পানি খেতে যাই, নিশ্চিত ভিজব। আবার গ্লাসে ঢেলে খেলাম না অলসতার জন্য । তো তার কিছুক্ষন পর দেখলাম তিন চারটা মেয়ে আসল হোটেলে… আমি ক্যাম্পাসে খুব কম মেয়েদেরই চিনি। এদের কাউকেও চিনিনা। তো তাদের ভিতরে একটা ছিল প্রচন্ড ছটফটে … ছোট্ট হোটেল ওর ভিত্রেও বাদরামী করছে। ইচ্ছে করছিল কি জানেন ?ঐটির কানের নিচে একটা যদি দিতে পারতাম ঐ সময়ে আমার থেকে সুখী কেউ হইত না। যাই হোক, হঠাৎ দেখলাম মেয়েটি প্রথম টেবিলের দিকে এগিয়ে আসছে, আই মিন যেটাতে কেউ খাচ্ছিলনা। জগটার দিকে হাত বাড়িয়ে দিল সে, গ্লাস নিলনা … আমি অলরেডি বুঝে গেছি কাহিনি একটা ঘটতে যাচ্ছে। পিচ্চি মেয়েটা ভারী জগটা কোনমতে তুলে খাওয়ার জন্য মুখে ঢাললো কেবল … তারপর যা হল তা আমি এখনো আমার চোখে ভাসছে। তার নাক, মুখ পুরো জিভে প্রায় অর্ধেক গোসল হয়ে গেল সাথে সাথে। আমি ঐদিন টের পাইলাম যে হাসি চেপে রাখা যে কতটা কষ্টের কাজ, কারন ওমন একটা সিচুয়েশানে হাসা উচিৎ না একদম । এদিকে ঐ মেয়ের বান্ধবীরা দিব্যি হাসছে… কিন্তু আমি পারছিনা, হাজার হলেও সিনিয়র আমি। শেষবারের মত দেখলাম … মেয়েটা কোমরে হাত দিয়ে আবুলের মত তাকিয়ে আছে জগটার দিকে, যেন ওটা তার সতীন। আর সে যতটুকু ভিজেছে তা ওড়না দিয়ে মুছে কাজ চালাবার মত সম্ভবনা। এর পর আমি একটা বারও ঐ মেয়ের দিকে তাকানোর সাহস পাই নাই, কারন হাসি চাপতে গিয়ে পেট ফেটে যাচ্ছিল। কোন মতে হোটেল থেকে বের হয়ে হাউ মাউ করে হাসছি সারা রাস্তা।
আমরা যা জগ তুলে পানি খায় তারা জানি ভর্তি জগ থেকে পানি খাওয়াটা বেশ ডিফিকাল্ট। এখন হয়ত অনেকেই আমাকে মনে মনে গালি দিতে পারেন। বিশ্বাস করেন, অন্য কেউ হলে আমি মোটেও হাসতাম না ঐ সিচুয়েশান দেখে, সেই মনুষত্য আমার আছে … কিন্তু ঐ মেয়েটা ছিল একটা মিনি সাইজের বাদর। ঐ ঘটনার পরেও মেয়েটার বাদরামীর নমুনা পেয়েছি ক্যাম্পাসে। দ্বিতীয়ত, ওভার স্মার্টনেস দেখাইতে গেছে ভর্তি জগ থেকে পানি খেয়ে … যেখানে আমার মত সুনিপুন খাদক ও হাল ছেড়ে দিছিল। তারপর আর কি … মনে মনে বিজয়ী হয়ে হলে ফিরে এলুম ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:৪১