ভার্সিটিতে ভর্তি হবার পর থেকে বাসার দিকে আমার একটু কালেভদ্রেই যাওয়া হয় … একে তো দূর … দ্বিতীয়ত ক্লাস মিস দেওয়া পসিবল না। কিন্তু কিছুদিন আগে একটা এক্সিডেন্ট এর জন্য আমাকে প্রায় ১৫ দিনের মত বাসায় থাকতে হয়। খেয়াল করলাম আমাদের পাড়ায় একটা অদ্ভুত পরিবর্তন হয়েছে … সেটা হল মেয়েদের মেসের পরিমান বেড়ে গেছে। গেট থেকে বের হলেই চোখে পড়ে একটা ছেলে একটা মেয়ে হেটে যাচ্ছে … ছেলেটার হাতে সাইকেল, মোটামুটি আন্দাজ করা যায় ওরা কলেজ স্টুডেন্ট। খুব পোলাইটলি হেটে যায় … রাস্তার দিকে তাকিয়ে, পাড়ার বড়দের নিজেরা সাইড হয়ে জায়গা করে দেয়। মানে ওরা কি বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড না শুধু বন্ধু এটা বোঝাও বড্ড শক্ত। খুব স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতে বলতে ওরা হেটে যায়, মাঝে কেউ একজন দুম করে হেসে দেয়। আমার একটা সমস্যা হল ওদের দেখে আমি হাসিটা কন্ট্রোল করতে পারিনা … এই রকম কাপল দেখলেই আমার নচিকেতার #নীলাঞ্জনা গানটার কথা মনে পড়ে যায়। বয়েসের কারনে আমি যে জিনিস গুলো ছাপিয়ে এসেছি তার ভিতরে এটাকে অস্বাভাবিক ভাবে মিস করি। মিথ্যা বলবনা … একটু হিংসাই হয় ওদের দেখে। না … হিংসাটা এমন না যে আমার গার্লফ্রেন্ড নাই কিংবা এই সুন্দর রোমান্টিক হাটাটা আমি মিস করছি … এমন মোটেই না। আমার হিংসা লাগে এজন্য যে আমি বয়েসটা পেরিয়ে এসেছি। বয়েসের একটা পর্যায়ে নচিকেতা কিংবা অঞ্জন দত্তদের থেকে অনেক প্রভাবিত হয়েছি সেটা অকপটেই স্বীকার করব… পারহ্যাপস গিটার টা হয়ত ঐজন্যই হাতে উঠেছে। হ্যা ইচ্ছেও হত একটা নীলাঞ্জনা থাকবে … সাইকেল নিয়ে মাঝে মাঝে নীলাঞ্জনার পিছনে ঘুরব। কিন্তু ঐ পার্সোনালিটিটা তৈরীই করতে পারলাম না মাইরি … শুধু মনে হতো “শালা একটা মেয়ের পিছনে ঘুরব” ?? তাও সাইকেল নিয়ে ?? না ভাই … ঐ ছ্যাচড়ামিটা আমার দিয়ে হবে না। আর হলোও না। এসব ভাবতে ভাবতে ঐ কাপলকে দেখে আমি আবার হেসে ফেলি। ঐ পিচ্চি পাচ্চা গুলো কি ভাবে আমাকে আল্লাহই জানেন, তবে ঐ হাসিটা আমার দ্বারা ঠেকানো হয়না। না … ক্যাম্পাস লাইফে এগুলো খুব স্বাভাবিক। আমি ও কিছু নিরীহ জীব বাদের সবাই গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরে বেড়ায় … কেউ কেউ তো কুয়াকাটাতেও রাত্রি যাপন করে শুনেছি। কিন্তু স্কুল লাইফে দুজন পাশাপাশি হাটার ঐ ফ্লেভারটা আর কখনোই পাওয়া সম্ভব নয়। কারন ঐ বয়সটার ভিতরে একটা পবিত্রতা ছিল, ভয় ছিল, এক ধরনের একটা আড়ষ্টতা ছিল … পরিবার জেনে ফেললে কি হবে, পাড়ার সিনিয়ররা দেখে ফেললে কি হবে !!!! কিন্তু এই বয়েসে , ধরুন ২২ … ঐ সাইকেল নিয়ে হাটাটা আর চাইলেও হবেনা। যদি একান্ত কথা বলবার দরকার হয় তবে হয়ত একটা রেষ্টুরেন্ট কিংবা কোন কফিশপ বেছে নেওয়া হবে ।
প্রেম করতে হলে নাকি খানিকটা ছ্যাচড়া হতে হয়- কথাটা বেশ শুনেছি। না এটা এডমিট করছিনা, প্রেমিক সম্প্রদায় আমার উপরে ক্ষিপ্ত হতে পারে আবার

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৪১