somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘প্রকাশ্যে চুমু’ প্রসঙ্গে .........................

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৪:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পরিচয় পর্ব:


বাংলার স্মার্টফোনওয়ালা তরুন তরুনীরা তিনভাগে বিভক্ত। এক: প্রকাশ্যে চুমুর বিরুদ্ধে । দুই: তৃতীয় পক্ষ । তিন: দিন তারিখ ঠিকঠাক করে প্রকাশ্যে চুমুর পক্ষে। একটু এলোমেলো মনে হলো ? এর কারন আছে,একটি অনর্থক শব্দও বলিনি । অন্তত বাংলাদেশের হিসেবে (আমার অনুমান, বিশ্বেরও, সঠিক পরিসংখ্যান জানি না) সংখ্যাগোরিষ্ঠ মতামত প্রকাশ্যে চুমুর বিপক্ষে। যদি বিশ্বাস না হয় আপনার আশেপাশে এখন জিজ্ঞেস করা শুরু করুন । কী লজ্জায় জিজ্ঞেস করতে পারবেন না ? তাহলে প্রকাশে চুমু দেওয়ার সাহস কোথা থেকে পেলেন ? আশা করি , আপনি জিজ্ঞেস করতে পারবেন এবং আপনি যদি বারে বা পাগলাগারদে না থাকেন তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমার সংখ্যাতত্ত্ব সঠিক প্রমাণিত হবে। এবার দ্বিতীয়: তৃতীয় মতের লোক। এরা সংখ্যায় মাঝারি। এই বিশেষ ইস্যুতে আমি এদের একজন। বিশ্বাস করেন, এই চুমু জনিত ঘটনা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে আলোচনা হলেও আমি শুনবো না, প্রথম আলোর শিরোনামে এলেও আমি পড়বো না, কোন যবক যুবতীর জুতা স্যান্ডেল হারানোর সংবাদও আমাকে টানবে না। বলতে পারেন, তবে এই যে লিখছেন ! এটা লেখা না, বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দর্শকের আসন নেয়া। শুধু আমি না, বাংলাদেশের অনেক মানুষ নিয়েই আমাদের নীরব দর্শক পক্ষ্য। সংখ্যায় এরা দ্বিতীয় অবস্থানেই থাকবে (অনুমান)। শেষেক্তো সংখ্যালঘিষ্ঠরা আশা প্রকাশ করছে, তারা দিনক্ষণ ঠিক করে খোলা রাস্তায় চুমু খাবে এবং দেবে । যতদূর জানি, রাষ্ট্র এখনো জন্মনিবন্ধন জরুরী কি না বা বালক বালিকারা রাজপথে চুমুর মিছিল বের করার আগে পিতামাতাদের অনুমতি লাগবে কি না, কিছু বলেনি। আশা করা যায়, সে নীরবই থাকবে। তৃতীয় পক্ষের একজন হিসেবে সরকারকেও দর্শকের সারিতে আহ্বান জানাচ্ছি।


সহজ কথায়: চুমুর বিপক্ষে কেউ না.......কেউ কেউ চুমু আদান প্রদানকে হাত মেলানোর মত স্বাভাবিক মনে করে, সুখের অনুভবটা হয়তো বেশি। কেউ কেউ নৈতিকতার ভাঙন দেখে আতঙ্কিত হয় । এদের অনেকে নৈতিকতাকে বাস্তব জীবনে মান্যও করে। কেউ কেউ নিজে শতভাগ অনৈতিক কিন্তু অন্যের নৈতিকস্খলন একদম সহ্য করতে পারেন না, এরা ভণ্ড। আবার কেউ কেউ মনে করেন, চুমুর সৌন্দর্য খানিকটা গোপনীয়তার উপর নির্ভর করেন। এরা মনে করে চুমু দেওয়াটা অন্য রকম । ঠিক হাত মেলানোর মত বা ঘটা করে জানানোর মত ঘটনা না বরং চুমু ইস্যুটা গোপনে থাকাই ভাল:যত্নে থাকে। ক্ষানিকটা অপরাধবোধ একে মলিন করেনা, উজ্জ্বলই করে।..... ..... আরো একদল আছে। এরা বিকৃত। আবারও বলছি, এরা ভন্ড নয়...... বিকৃত। এদের মানসিক চিকিৎসা দরকার, উপযুক্ত শিক্ষা দরকার, বর্হিমুখী জানাশোনার দক্ষতা থাকা দরকার। এ নিয়ে কারো ভাবনা নেই, না সরকারের, না প্রকাশ্যে চুমু দেনে-লেনেওয়ালাদের । আমি এদের সাফাই গাইছি না ...... আমি শুধু বলতে চেয়েছি, এরাও চুমুর বিপক্ষে না। প্রকাশ্যে না হতে পারে, গোপনে নিশ্চয়ই, বিয়ের আগে না হতেই পারে, বিয়ের পরে নিশ্চয়ই।

আপাত অপ্রাসঙ্গিক পর্ব:


বাংলাদেশে সামাজিক রাজনৈতিক বা পারিবারিক ক্ষেত্রে পরমত সহিষ্ণুতার রীতি খুব একটা নেই। এটা আমাদের জাতিগত সমস্যা । কেউ কাউকে মানতে নারাজ। বিরোধী মতেরও যে নিজের মতের মতই হাত পা বা অনুভূতি আছে, এটা কেউ বিশ্বাস করে না বা বুঝে না। বিরোধী মতেরও যে ইচ্ছা শক্তিসমেত আলাদা অস্তিত্ব আছে, এটা অগোচরেই থেকে যায়। ফলে, বিরোধী মত দমানোর জন্য বরাবরই আমরা গালাগালিমূলক শব্দ প্রয়োগ করি। ভাবে না হোক, শব্দ বাছাইয়ে আমাদের কারোরই জুড়ি নেই। এমন লড়াইয়ে একটু মনোযোগ দিলেই বুঝা যায়, আমরা কতটা জ্ঞানী ! কতটা উদার ! আর কতটা মর্যাদা দেই অন্য মতের মানুষকে ! এখানকার রাজনৈতিক ধর্মবিশারদরা লোকচেতানোতে যতটা মনোযোগী, ধর্মে ততটা নয়। ছোট ছোট নাস্তিকগুলি বোধহয় পূর্ব জন্মে গালাগালি অণুষদের অধীনে অভিধান বিভাগের কেরানী ছিলো । নইলে একজন মানুষের ভাষা এত বাজে হবে কেনো ? তার প্রকাশ ভঙ্গি এত নোংরা হবে কেনো ? কোন মত, কোন মতকে সমীহ করবে না। কেউ কাউকে বুঝানোর দায়িত্ব নেবে না। একে অপরকে গালাগালি করে জীবন কাটাবে ....... স- তে ‘সত্য প্রকাশের জন্য গালি জানতে হয় না ।’, কেউ আমাদের শেখায় নাই। আমরাও শিখি নাই। কিন্তু মেরুদণ্ড ভাঙা সত্যের গোলা বিরুদ্ধ পক্ষ্যের দিকে ছুঁড়ে দিচ্ছি প্রতিনিয়ত। কেউ কারো ইচ্ছার খোঁজ করছি না, কেউ কারো অস্তিত্বকে স্বীকার করছি না। কেউ কারো মতকে শ্রদ্ধার সাথে মোকাবেলা করছি না, কেউ কা্রো অনুভূতিকে অনুভবের চেষ্টা করছি না। ফলাফল নৈরাজ্য নয়, অর্থহীন বিশৃঙ্খলা: একেবারে অনুর্বর, পুরোপুরি ক্ষতি .................... প্রসঙ্গ চুমু ইস্যুও তাই। হুবহু তাই। কেউ কেউ দেশে থেকে সুবিধা না করতে পেরে, বিশ্বায়নের বিষন্নতায় ভরা উস্কানিক্ষম মগজের জোরে বিদেশে গেছেন । বাঙালিয়ানা অভ্যাস যায়নি। ঠুনকো জনপ্রিয়তার নামে, টাইমলাইনে আসার তাগিদে যা ইচ্ছে তাই বলে বেড়াচ্ছে । অপর দলও শ্রদ্ধা বা যৌক্তিক অবস্থান বেমালুম ভুলে প্রাগৈতিহাসিক ধাঁচে প্রতিরোধ শুরু করেছে। কেউ কেউ আবার বলার চেষ্টা করেছেন, ভালবাসা দিবসে পুলিশি হয়রানির বিরুদ্ধে এ এক ধরনের প্রতিবাদ ! এটা স্পষ্ট ভণ্ডামী: মিথ্যাচার। দাবী আদায় যদি লক্ষ্য হতো তবে কর্মসূচীর রং অন্য রকম হতো। পোস্টারে ভালবাসা দিবস নয়, ‘স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’ লেখা থাকতো। আহূত কর্মসূচী বাস্তবায়ন হবে না, জানি। তারপরও এর পরিণতি কী হতে পারে তা বিদেশে বসে দাতারা বুঝতেই পারছেন না। বুঝবেন কী করে ! বারবার বলেছি, কারো মধ্যে অন্য মতের প্রতি কোন শ্রদ্ধা নেই।



একান্ত মতামত:

সন্ত্রাসী থেকে প্রেমিক বা ডান থেকে বাম শুধু নয়, সকল বুদ্ধিমান প্রাণী চুমুর মত সোহাগ বিনিময় পছন্দ করে। বিশ্বাস না হলে, চিড়িয়াখানার বানর, ক্লান্ত কাক, চড়ুই, পোষা কুকুর, পুকুরের হাঁস বা যেকোন পশুর দিকে নজড় দেবেন। চুমুর মাহাত্ম্য সারা প্রাণী জগতই বুঝে .................. কিন্তু মানুষ বোধহয় একটু আলাদা। কিছু ব্যাপার একটু আলাদাই থাক .................. তবে কেউ যদি ঢাক ঢোল পিটিয়ে চুমুর মিছিল করতে চান, আমি বাঁধা দেবো না................ অংশও নেবো না । আপাতত তৃতীয় পক্ষে ......................





সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৪:০৪
১৬টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×