শখ পূরণ করতে গিয়ে জীবন বাজি রেখেছে চীনা কিশোর জিয়াও ঝেং (১৭)। বাজারে আইপ্যাড-২ আসার পর থেকেই তার স্বপ্ন, এই ট্যাবলেট পিসি তার যে করে হোক চাই-ই চাই। কিন্তু সাধ পূরণ করা যে তার সাধ্যের বাইরে! কিন্তু এই অসাধ্য তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। জীবনকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে পূরণ করে ছাড়ল নিজের স্বপ্ন।
চীনের আনহুই প্রদেশের এই কিশোরের মুখেই শোনা যাক আসল ঘটনা, ‘একটি আইপ্যাড-২ কিনতে চেয়েছিলাম আমি। কিন্তু এটি কিনতে যে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা আমার ছিল না।’
অবশেষে কি আর করা! মাথায় এল এক বুদ্ধি। নিজের কিডনি বিক্রি করে আইপ্যাড কেনার সিদ্ধান্ত নেয় জিয়াও। যে পরিকল্পনা, সেই কাজ। অনলাইনের মাধ্যমে খোঁজ পেল কিডনি সংগ্রহকারী একটি এজেন্টের। এজেন্টটি তার কিডনি কিনতে রাজি হয়। দুই পক্ষের মধ্যে দফারফা হয় তিন হাজার ৯০০ মার্কিন ডলারে।
চুক্তি অনুযায়ী, চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুনান প্রদেশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় জিয়াওকে। সেখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার একটি কিডনি বের করে নেওয়া হয়। পরে কিডনি বিক্রির অর্থ দিয়ে একটি নতুন ল্যাপটপ ও একটি আইফোন কিনে বাড়ি ফেরে জিয়াও।
ছেলের এই কাণ্ড সম্পর্কে জানতেন না জিয়াওয়ের মা লি। চীনের দক্ষিণাঞ্চীয় প্রদেশ গুয়াংদং-ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল শেনঝেন টিভিকে লি বলেন, ‘জিয়াও বাড়ি ফেরার পর আইপ্যাড-২ কেনার মতো এত অর্থ সে কোথায় পেল, তা জানতে চাই। কেননা, এটা কেনার মতো অর্থ আমাদের নেই। পরে অনেক জোরাজুরির পর সে স্বীকার করে যে সে তার একটি কিডনি বিক্রি করে এটি কিনেছে।’
এরপর লি ছেলেকে নিয়ে পুলিশের কাছে যান এবং এ অপরাধের কথা জানান। কিন্তু পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপরাধীদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ঘটনার পর থেকে তারা মুঠোফোন বন্ধ রেখেছে।
লি জানান, তাঁর ছেলের স্বাস্থ্যের অবস্থা দিনে দিনে খারাপের দিকে যাচ্ছে। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, যারা তাঁর ছেলের অঙ্গহানি করেছে, তারা একদিন গ্রেপ্তার হবেই।
সূত্র: প্রথম আলো - তারিখ: ০৫-০৬-২০১১