এক
আদম কা জিসম যব কি আনসার সে মিল বনা
কুছ আগ বাচ রহী থী সো আশিককা দিল বনা
--সৌদা
মানুষের শরীর ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন পঞ্চভুত দিয়ে। কিন্তু কিছুটা আগুন তার থেকে বেচে গিয়েছিল, সে আগুনটা কোথায় গেল? সেই আগুন দিয়েই তৈরী হয়েছে প্রেমিকের হৃদয়। সে জন্যই প্রেমিকের হৃদয় সব সময় ধিকি ধিকি জ্বলে।
দুই
দুশমনি জমকর করো এ গুঞ্জাইশ রহে
যব কভি হাম দোস্ত হো যায়েঁ তো শরমিন্দা না হো
--অজ্ঞাত
শত্রুতা করার সময় হে বন্ধু একটু ভেবেচিন্তে কর। দেখো এত নিষ্ঠুর শত্রুতা কোরনা যে পরে যদি আমরা বন্ধু হয়ে যাই তখন লজ্জিত হতে হয়।
তিন
দিলে বরবাদ কী ভী কহনেওয়ালা দিল হী কহতে হ্যায়
খিজা দীদা চমন কী ভী চমন কহনা হী পড়তা হ্যায়
--নজম নদভী
যে হৃদয় থেকে প্রেম বিদায় নিয়েছে সে হৃদয় শুন্য হয়ে গেছে, সে হৃদয়কেও হৃদয়ই বলতে হয়, যেন যে বাগান পুস্পশুন্য হয়ে গেছে তাকেই বাগান বলতে হয়, প্রেমহীন হৃদয় কি হৃদয় পদবাচ্য? মরুভুমিকে কি নন্দনকানন বলা উচিত?
চার
দিল হী কি বদৌলত রঞ্জ ভী হ্যায়, দিল হি কি বদৌলত রাহত ভী
এহ দুনিয়া যিসকো কহতে হ্যায়, দোযখ ভী হ্যায় ঔর জন্নত ভী
--চকবন্ত লক্ষ্মৌবা
হৃদয়ের জন্য বেদনা রয়েছে হৃদয়ের জন্য আনন্দও। এই যে পৃথিবী, এখানেই নরক এখানেই স্বর্গ। সফল প্রেমই স্বর্গ, বিফল প্রেমই নরক।
পাঁচ
প্যায়ার করনে কা যে খুবা রখতে হ্যায় হাম পর গুনাহ
উনছে ভি তো পুছিয়ে, তুম ইৎনে পেয়ারে কিউ হুয়ে
--মীর
আমি যে এত ভালোবেসে ফেলেছি বলে তোমরা আমাকে অপরাধী ভাবছ; একবার ওকে জিজ্ঞাস করে দেখ তো, হে নারী তুমি এত রূপসী, এত সুন্দরী, এত ল্যাবন্যময়ী কেন হয়েছ? একই অঙ্গে এত রূপ কি এটা কি কোন অপরাধ না? অপরাধ কি রূপের পুজারীর? রূপের নয়?
ছয়
হম ইশক কে মরোঁকা ইৎনা হী ফসানা হ্যায়
রোনেকি নেহি কোই, হঁসনে কো জমানা হ্যায়।
--জিগর মুরদাবাদী
প্রত্যেক প্রেমিকের জীবনে একটাই সত্য আছে – প্রেমিকের দুঃখে কাদবার কেউ নেই; কিন্তু প্রেমিকের কীর্তিকথায় বিদ্রুপের হাসি হাসতে সারা দুনিয়া প্রস্তুত।
সাত
ম্যায় অওর বযমে ম্যায় সে য়ুঁ তশনাকাম আউঁ
গর ম্যায় নে কি থি তওবা সাকি কেয়া হুয়া থা
--গালিব
সাকির আসর থেকে আমি না হয় তওবা করে ভালো মানুষ হয়ে ফিরে আসলাম, কিন্তু যে সাকির জন্য আমি তওবা করলাম সেই সাকির কি হবে?
আট
আভি কামসিন হো, কাঁহি খো দেওগী দিল মেরা,
তুমহারি লিয়েই রাখ্যা হ্যায়, লে লেনা জোয়া হোকর।
--অজ্ঞাত
এখনো তুমি অপ্রাপ্তবয়স্কা কিশোরী, এখন যদি হৃদয় দেই কোথাও হয়ত হারিয়ে বসবে। তোমার জন্যই রাখা রইল, যখন বড় হয়ে উঠবে, কিশোরী থেকে সদ্য যৌবনা তখন না হয় নিয়ে নিও।
নয়
ও ঔর হোঙ্গে যো পীতে হ্যায় বেখুদিকে লিয়ে
মুজেসে চাহিয়ে থোরিসে জ়িন্দেগীকে লিয়ে
--জিগর মুরদাবাদী
ওরা আলাদা জাতের লোক যারা সুরা পান করে জীবন কে ভূলে যাবার জন্য, আমার তো সুরার প্রয়োজন হয় জীবনকে ফিরে পাবার জন্য।
দশ
গুস্তাখি ম্যায় সির্ফ করুঙ্গা একবার,
যব সব প্যায়দল চলেঙ্গে, ম্যায় কান্ধে পর সওয়ার।
--অজ্ঞাত
অপরাধ তো আমি একবারই করব যখন বন্ধুরা পায়ে হেটে যাবে আর আমি তাদের কাধে সওয়ার হয়ে অনন্ত যাত্রায় রওনা হব।
বলতে পারেন আমি একজন মারাত্মক শায়রী ভক্ত। শায়রীর যথার্থ অনুবাদ আমার পক্ষে সম্ভব না কারন আমি কবি না, তাই ভাবানুবাদ দিলাম। বিভিন্ন জায়গা থেকে টুকে রাখি, আর শায়রীর বই পেলেই কিনে রাখি। শায়রীর মাষ্টার বলা হয় মির্জা গালিবকে। তবে উর্দু আর হিন্দী কবিদের দুই লাইনের এই সব শায়রী পড়ে আমি বুঁদ হয়ে থাকি। মৃত্যু যুদ্ধ আর হতাশার মাঝে এই সব শায়রী আমার ভালো লাগা। কোন কোন কবির নাম পাইনি তাই অজ্ঞাত লিখে রেখেছি।
অনেক আগে শায়রী নিয়ে একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম ভালো লাগলে দেখে আসার আমন্ত্রন রইল শের শায়রী
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:০৭