দারিয়ুসের সময়ে পার্সিয়ান সাম্রাজ্যের ম্যাপ
পারস্য তথা আধুনা ইরানে অনেক আগে দারিয়ুস নামক একজন রাজা ছিল। প্রচন্ড প্রতাপশালী রাজা। এবং সে সময় বর্তমান পৃথিবীতে সব থেকে প্রভাবশালী সুপার পাওয়ার হিসাবেই পারস্য কে তথা রাজা দারিয়ুস কে সমীহ করা হত। বর্তমানে যেমন আমেরিকা। এশিয়া মাইনর থেকে সিন্ধু নদ পর্যন্ত রাজা দারিয়ুসের সাম্রাজ্য ছিল। মিশর থেকে কিছু গ্রীক নগর রাষ্ট্রও এই পারস্য রাজ্যের অধীনে ছিল। রাজা দারিয়ুস একজন প্রাতাপশালী রাজা হিসাবেই ইতিহাসে প্রসিদ্ধ। তিনি তার রাজ্যর এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত বিরাট এক রাজপথ তৈরী করছিলেন যার সাহায্যে নিয়মিত খবর আদান প্রদান করে পারস্য কে এক শক্তিশালী ভীতের ওপর দাড় করায়। এই পারস্যের সাথে ছোট ছোট গ্রীক নগর রাষ্ট্রগুলোর এক ঐতিহাসিক যুদ্ধ সংগঠিত হয় যা দিয়ে অনেক কিছু শিক্ষনীয় বিষয় বের হয়ে আসে। গ্রীক ইতিহাসবিদ হিরডটাস এর লেখায় এর বিবরন আছে।
ইরানরাজ রাজা দারিয়ুস
দারিয়ুস কি কারনে জানি মনস্থির করেন যে সামান্য কয়েকটি গ্রীক নগর রাষ্ট্র তখনো তাদের বশ্যতা মেনে নেয়নি তাদের রাজ্য দখল করে নেবে। এখানে নগর রাষ্ট্র বলতে কি বোজায় এক লাইনে তার সংজ্ঞা দেই, সেকালে মানে খ্রীষ্টের জন্মের পাচ/ ছয়শত বছর পূর্বে গ্রীসে নগর কেন্দ্রিক ছোট ছোট রাজ্য গড়ে উঠছিলো যেমন, গ্রীস, স্পার্টা, লিডিয়া। এর প্রত্যেকেই স্বাধীন ছিল। এক একজন রাজার অধীনে এই সব ছোট ছোট রাজ্য শাষিত হত, একেই নগর রাষ্ট্র বলে।
ম্যারাথনের যুদ্ধ
দারিয়ুসের প্রথম অভিযান সফল হয়নি কারন দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে গিয়ে তার বহু সৈন্য মারা যায় আবার অনেক রোগে আক্রান্ত হয়। তারা গ্রীস পর্যন্ত পৌছাতেই পারেনি, অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তারা আবার পারস্য ফেরত যায়। পরে আবার খ্রিষ্টপূর্ব ৪৯০ অব্দে দারিয়ুস দ্বিতীয় অভিযানে নামে। এইবার তারা স্থলপথে না গিয়ে সমুদ্র পথে গ্রীস অভিযান চালায়। গ্রীসের রাজধানী এথেন্সের কাছাকাছি ম্যারাথন নামক স্থানে পারস্য সৈন্যরা অবতরন করে।
ফেইডিপ্পিডেস কোথাও না থেমে এক দৌড়ে এথেন্সে এসে “নিকোমেন” শব্দটা উচ্চারন করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
প্রতাপশালী পারস্যরাজের ম্যারাথন অবতরনে গ্রীস বাসীর কাপাকাপি শুরু হল বাধ্যহয়ে তারা তাদের পুরানো শত্রু স্পার্টার সাহায্য কামনা করে। স্পার্টান সৈন্য এসে পৌছানোর আগেই ছোট গ্রীক রাজ্য প্রতাপশালী ইরানরাজ কে হারিয়ে দেয়। ইতিহাসে এই যুদ্ধ ম্যারাথন যুদ্ধ নামে পরিচিত যা খ্রিষ্টপূর্ব ৪৯০ সালে সংগঠিত হয়। গ্রীক রাজা যুদ্ধে জয়ের পর ফেইডিপ্পিডেস নামক একজন সৈন্যকে সে যুদ্ধ জয়ের খবর এথেন্সে পৌছানোর জন্য পাঠালে, ফেইডিপ্পিডেস কোথাও না থেমে এক দৌড়ে এথেন্সে এসে “নিকোমেন” শব্দটা উচ্চারন করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। গ্রীক নিকোমেন মানে হল “আমরা জয়ী হয়েছি।” অবশ্য হেরোডেটাস ভিন্ন বর্ননা দিয়েছেন তার মতে ফেইডিপ্পিডিস গ্রীক থেকে স্পার্টায় যায় সাহায্যলাভের জন্য যেখানে দুরত্ব বর্ননা আছে ১৫০ মাইল। ঘটনা যাই হোক ফেইডিপ্পিডিসের এই দৌড় ইতিহাসে অমর হয়ে আছে “ম্যারাথন” নামক দৌড়ের মাধ্যমে যার দূরত্ব ২৬ মাইল ৩৮৫ গজ।
যাই হোক এখানে একটা প্রশ্ন আসে এত ক্ষমতাশালী ইরানরাজ কে কিভাবে সামান্য একটা নগররাষ্ট্র গ্রীস পরাজিত করে? গ্রীসরা লড়াই করছিলো নিজ দেশ রক্ষায় আপন দেশের পাশে, আর ইরানী বাহিনী এসেছিল অনেক দূর থেকে। তার ওপর তারা এসেছিল সাম্রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়ো করা পাচমিশালী বাহিনী নিয়ে। তারা ছিল মাইনে করা সৈন্য দল, লড়াই করছে পয়সার জন্য। অপরপক্ষে গ্রীস বাসী লড়াই করছিলো নিজেদের স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য। স্বাধীনতা হারানোর থেকে মরনপন লড়াইকেই তারা শ্রেয় মনে করছিলো। যারা কোন মহৎ উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে তখন তাদের পরাজিত করা যায় না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সাথে কি কিছু মিল পাচ্ছেন?
পারস্যরাজ জেরোক্সেস
ম্যারাথন থেকে পারস্যরাজ দারিয়ুস ভগ্ন মনোরথে নিজ দেশে ফেরত যান। তার মৃত্যুর পর তার ছেলে জেরেক্সিস রাজা হন, বাবার অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য তিনি মনোস্থির করেন। হিরোডেটাস এখানে কিছু চমৎকার বর্ননা দিয়েছেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন সে বর্ননা হিরোডেটাসের ভাষায় তুলে দিচ্ছি। আর্তাবানাস ছিল জেরোক্সিসের চাচা। আর্তাবানাস তার ভাইর ছেলে জেরোক্সিস কে না করলেন বিপদ সঙ্কুল গ্রীস আক্রমন না করার জন্য, তখন জেরোক্সিস তার জবাবে তার চাচাকে যা বলছিলেন, তা নিম্নরূপঃ
“আপনি যা বলছেন তাতে যুক্তি আছে বটে, কিন্তু চারিদিকে কেবল বিপদ দেখে যদি আতকে উঠি তাহলে কিভাবে চলবে? সব বিপদ কে গ্রাহ্য করলে চলে না। সংসারে সকল বিপদকে যদি একই মাপ কাঠিতে বিচার করি তবে কোন কাজ করাই সম্ভব হবে না, ভবিষ্যত জুজুর ভয় সারাক্ষন সিটকে থাকলে লাভ কি? না হয় খানিকটা দুঃখবোধ এড়ানো গেল। এর থেকে আমি বলি আশাবাদী হয়ে ভবিষ্যতের সন্মুখীন হওয়াই শ্রেয়, তাতে যদি দুঃখভোগ করতে হয় তাও শ্রেয়। সঠিকপন্থা নির্দেশ না করে যদি সকল কাজের বিরোধিতা করেন তবে আপনিও দুঃখ পাবেন, অপরপক্ষও দুঃখ পাবে। প্রত্যেক কাজেই সফলতা বিফলতার সম্ভাবনা সমান সমান থাকে। ভবিষ্যতের দাড়িপাল্লাটা কোন দিকে ঝুকবে তা মানুষ কিভাবে জানবে? তার পক্ষে সেটা জানা সম্ভব না। কিন্তু সফলতা তারাই অর্জন করে যারা এগিয়ে গিয়ে কাজে হাত দেয়। আর যারা ভীরু তারা কেবল চুল ছেড়া বিশ্লেষান করে, তাদের পক্ষে সফলতার আশা সুদুঢ় পরাহত। ইরানরাজ আজকে যে বিশাল শক্তি অর্জন করছে তা একবার ভেবে দেখুন। আমার যে সব পূর্ব পুরুষ এই সিংহাসনে বসেছেন তারা যদি আপনার অনুরূপ চিন্তা পোষন করত অথবা আপনার মত পরামর্শদাতা পেত তবে কি আজকের এই পারস্য সাম্রাজ্য হত? তারা বিপদ কে বরন করত বলেই আজ আমাদের এত উন্নত অবস্থা। বৃহৎ জিনিস লাভ করতে গেলে বড় বিপদ মেনে নিয়েই করতে হয়।”
কার্যক্ষেত্রে জেরেক্সিস পরাজিত হল। আর্তাবনাসের পরামর্শই ঠিক ছিল। কিন্তু জেরোক্সিস তার চাচা আর্তাবানাস কে যে কথাগুলো বলছিলো তার মাঝে কিন্তু অনেক শিক্ষনীয় বিষয় আছে, যে কোন মহৎ বা বৃহৎ উদ্দেশ্য সাধন করতে গেলে অনেক বিপদের মাঝ দিয়েই যেতে হয়। যে উপলদ্ধিটুকু সেই সময়ের পারস্যরাজের ছিল আজকে যদি আমাদেরো কোন উদ্দেশ্য সাধন করতে হয় তবে একই মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
হেলেসপন্ট প্রনালী পার হবার জন্য জেরোক্সিস বিরাট এক সেতু নির্মান করেন।
জেরোক্সিস তার বিরাট সৈন্যদল নিয়ে এশিয়া মাইনরের ভেতর দিয়ে দার্দানেলিস প্রনালী অতিক্রম করে ইউরোপে পা দেয়। পথে জেরোক্সিস ট্রয় নগরী দেখেন যেখানে হেলেনকে উদ্ধার করার জন্য গ্রীক বীরেরা লড়াই করেছিলেন। হেলেসপন্ট প্রনালী পার হবার জন্য জেরোক্সিস বিরাট এক সেতু নির্মান করেন। পারস্য সৈন্যরা যখন সেই সেতু অতিক্রম করছিলো জেরোক্সিস তখন নিকটবর্তী এক পাহাড়ের চুড়ায় বসে দেখছিলেন। এখানেও হেরোডেটাসের বর্ননা তুলে দিলাম, কারন এই বর্ননার মাঝেও অনেক নিগুঢ় সত্য লুকিয়ে আছেঃ
সমস্ত হেলেসপন্ট জাহাজে পরিপূর্ন এবং এবিডিসের তীরভুমি এবং আশেপাশ লোকে লোকারন্য। সেই দৃশ্য দেখে জেরোক্সিস বললেন, “আমি আজকে সত্যিই সুখী” এরপরই সে কেদে দিল। চাচা আর্তাবানাস পাশেই ছিল, সে জেরোক্সিস কে জিজ্ঞাস করল “মহারাজ, অল্প সময়ের ভেতর কি এমন ঘটল যে আপনি চোখের পানি ফেলছেন? যে তুমি দেশে বসে আমাকে বিজয়ের উপদেশ দিয়ে যুদ্ধে রওনা দিয়েছেন সেখানে কেন এখন চোখের পানি?” জেরোক্সিস বললেন, “এই দৃশ্য হঠাৎ আমার মনে হল মানুষের জীবন কত ক্ষন স্থায়ী, এই চর্তুদিকে অগুনিত মানুষ দেখা যাচ্ছে একশত বছর পর এর একজনও থাকবে না।” জেরোক্সিসের এই উপলদ্ধি যেন আমাদের প্রতিটা মানুষের হৃদয়ের হাজার বছর ধরে উপলদ্ধির কি নিদারুন বহিঃপ্রকাশ।
যাই হোক এই বিরাট সৈন্যদল স্থলপথ এবং নৌপথে গ্রীস অভিমুখে এগিয়ে চলল। কিন্তু ভাগ্যও বোধ হয় এক সময় অত্যচারীর বিপক্ষে চলে যায়, সমুদ্রে মারাত্মক ঝড় ওঠে, সে ঝড়ে অনেক পারসিয়ান জাহাজ ধ্বংস হয়ে যায়। তারপরো যা অবশিষ্ট ছিল তাও অনেক ছোট ছোট নগর রাষ্ট্রগুলোর বিপক্ষে। জেরোক্সিসের এই বিরাট সৈন্যদল দেখে গ্রীকরা ভয় পেয়ে গেল। আত্ম কলহ ভুলে সব গ্রীক রাষ্ট্র গুলো সম্মিলিতভাবে ইরানরাজকে বাধা দিতে আসল, থার্মোপলিস নামক স্থানে তারা ইরান কে বাধা দিতে চায়, সে স্থানটি ছিল এক গিরিপথ, তার এক দিকে পাহাড় অন্য দিকে সমুদ্র। কাজেই বিশাল সৈন্যদল এই জায়গা একত্রে পার হতে পারছিলো না।
থার্মোপলিস নামক স্থানে তারা ইরান কে বাধা দিতে চায়
অবস্থান গত ভাবে সামরিক দিক দিয়ে অল্প সংখ্যক সৈন্যও বিরাট সেনাদল কে বাধা দিতে পারে। ম্যারাথন যুদ্ধের ঠিক দশ বছর পর ৪৮০ খ্রিষ্টপূর্বে তিনশত স্পার্টান সৈন্য পশ্চাদ অপসরনকারী গ্রীক সৈন্যদলকে নিরাপদে যেতে দেবার জন্য থার্মোপলিসের সেই গিরিখাতে অবস্থান নেয়। (এ ব্যাপারে হলিউডের বিখ্যাত মুভি থ্রি হান্ডেড দেখতে পারেন, যদিও সিনেমার খাতিরে কিছু অতিরঞ্জিত হয়েছে কিন্তু মুল কাহিনী ঠিকই আছে)। তিনশত স্পার্টান সহ গ্রীক বীর লিওনিডাস সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন বৃষ্টির মত পারশিয়ান আক্রমনের মুখে একের পর এক স্পার্টান শহীদ হতে থাকে একজন মারা গেলে তার জায়গায় এসে আর একজন স্পার্টান জায়গা নিচ্ছিল এবং হাসতে হাসতে প্রান দিচ্ছিল। (বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামাল ও কিন্তু এভাবে পাক বাহিনীকে আটকে দিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করে নিজের সহযোদ্ধাদের নিরাপদে ফিরে যেতে সহায়তা করে হাসিমুখে প্রান দেন)।
হে পথিক যাও, স্পার্টায় গিয়ে বল তাদের আজ্ঞা পালনে আমরা অবহেলে প্রান বিসর্জন করছি।
লিওনিডাস এবং তার তিনশত সঙ্গী একে একে নিহত হন। কিন্তু ততক্ষনে গ্রীক বাহিনী নিরাপদ স্থানে পৌছে যায়। থার্মোপলিসে এখনো গেলে আপনি দেখতে পাবেন সেই তিনশত অজেয় বীরদের স্মরনে লিখিত প্রস্তর ফলকে লেখা আছেঃ হে পথিক যাও, স্পার্টায় গিয়ে বল তাদের আজ্ঞা পালনে আমরা অবহেলে প্রান বিসর্জন করছি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এর থেকেও অনেক রোমাঞ্চকর জীবন বিসর্জনের ইতিহাস আছে কিন্তু আমরা কতজনকে স্বরন রাখছি সে প্রশ্ন আপনাদের কাছে রেখে গেলাম।
সালামিসের নৌযুদ্ধ রাজা জেরোক্সিস দেখছে এই যুদ্ধে তার পরাজয় ঘটে।
থার্মোপলিসে যে উদ্দেশ্যে লিওনিডাস এবং তিনশত স্পার্টান প্রান বিসর্জন দিয়েছিল সে উদ্দেশ্য সফল হয়েছিল, মানে সহযোদ্ধাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন কিন্তু তাতে বিশাল পারস্যরাজ জেরোক্সিসের অগ্রগতি থামানো গেল না, থার্মোপলিস জয় করে পারস্য বাহিনী গ্রীসের ভেতর দিকে ঢুকে গেল, কোন কোন গ্রীক রাষ্ট্র তাদের বশ্যতা স্বীকার করে নিলেও এথেন্সবাসী আত্ম সমর্পন করার থেকে নগর ত্যাগ করার ডিসিশান নিল। নিজেদের নগর নিজেরাই পুড়িয়ে দিয়ে সমুদ্রপথে তারা পালাল। বিজয়ী জেরোক্সিস এথেন্সে প্রবেশ করে অবশিষ্ট এথেন্সকে পুড়িয়ে ছাড়খার করে দিল। স্থলপথে পরাজিত হলেও গ্রীকদের নৌবাহিনী তখনো অক্ষত। সেই সামান্য নৌবাহিনীকে দেশরক্ষার প্রেমে বলীয়ান করে বিশাল পারস্য নৌবাহিনীকে সালামিস নামক স্থানে আক্রমন করে আর পুরো পারস্য নৌবাহিনীকে ধ্বংস করে দেয়। সম্রাট জেরোক্সিস পরাজয়ের এই আঘাত সহ্য করতে না পেরে ভগ্নমনে পারস্য ফিরে যায়।
মুলতঃ এখান থেকেই বিশাল পারস্য সাম্রাজ্য ধ্বংসের সূচনা হয় যদিও আরো কিছু কাল পারস্য সাম্রাজ্যের গৌরব ছিল। সামান্য কিছু নগর রাষ্ট্রের কাছে এই সুবিশাল ইরানরাজের পরাজয় সেকালে সবাইকে বিস্মিত করেছিলো। হেরোডেটাস ও এই পরাজয় নিয়ে চিন্তা করেছিলো এবং এর একটি কারন ও বের করেছিলো যা আজো একইভাবে আছে। তিনি বলেন, প্রতিটা বড় জাতির ইতিহাসে তিনটি পর্যায় আছে, প্রথম পর্যায়ে সাফল্য, দ্বিতীয় পর্যায়ে সাফল্যজনিত অহমিকা এবং অন্যায়ের প্রশ্রয় এবং সব শেষে এর ফলে অধঃপতন।
ইতিহাসের কি নিদারুন পরিনতি কালের পরিক্রমায় আজকে যেন, গ্রীসের সেই ছোট নগর রাষ্ট্রের ভুমিকায় প্রবল প্রতাপশালী পারস্যরাজ অভিনয় করছে, আর ক্ষমতাশালী পারস্যরাজের ভুমিকায় ৫০০ বছর আগের কলম্বাস কর্তৃক আবিস্কৃত নিউ ওয়ার্ল্ড আমেরিকা অভিনয় করছে। জেরোক্সিসের মত বলতে হয় ভবিষ্যতে কি হবে তা মানুষ কিভাবে জানবে? তবে যাই হোক, হিষ্টোরী রিপিটস ইটসেলফ। আর ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না।
সংশ্লিষ্ট পোষ্টঃ প্রাচীন পারস্যে থেকে আধুনিক ইরান পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত যাত্রা
সূত্রঃ পোষ্টে প্রয়োজন মত নেটের লিঙ্ক সংযোগ করা হয়েছে এবং Glimpses of World History
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০৯