অগুনিত মেহেরের দিন শুরু হয় এভাবে
বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমীর কঠোর কিন্তু অত্যন্ত আনন্দের দিন গুলো নিয়ে মাসখানেক আগে চির উন্নত মম শীর (মিলিটারী একাডেমীর স্লোগান) সিরিজ করে ব্লগে লিখতে শুরু করেছিলাম। শেষে কিছু ব্যাক্তিগত কারনে প্ল্যানটা ছাড়তে হয়েছিল। সম্পুর্ন অন্য কারনে এই লিখা। এটা ঐ সিরিজের সাথে সম্পর্কিত নয়, আজকে একজনের কথা বলবো, তার নাম মেহের।
মিলিটারী একাডেমীর প্রথম রাতের কথা। ভয়ানক স্বাগতম ডলা চলছে। একাডেমীর গেট দিয়ে ঢোকা মাত্রই সিনিয়রেরা ক্ষুধার্ত নেকড়ের মতো ঝাপিয়ে পড়লো। আমি আর জনৈক কোর্সমেট ফাঁকি দিয়ে মুল দল থেকে আলাদা হতে গিয়ে ব্যাপক ডলার সম্মুখিন হলাম। জনৈক মহিলা সিনিয়র আলাদা করে পাঙ্গালো। কিছুক্ষনের মধ্যেই আমরা বার পাচেক বমি করলাম, উলটা হয়ে ঝুলে থাকতে থাকতে অবস্থা শেষ। বর্ষার দিন, পিটি গ্রাউন্ডে লজ্বাবতীর কাঁটা ভালোই ছিল। সারা শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। আমার কর্পোরালে স্যাডিস্টিক মানসিকতার জন্যে ব্যাটালিয়ন খ্যাত ছিল। প্রায় অর্ধমাইল ফ্রগ জাম্প দিতে দিতে অবস্থা শেষ। এমন সময় অনেকক্ষন পর উঠে দাড়ানোর অনুমতি মিললো। সাহস করে উঠে দাঁড়িয়ে সিনিয়রের মুখের দিকে তাকিয়ে একটূ ভ্যাবাচেকা খেলাম। একজন সাদা চামড়ার বিদেশী ক্যাডেট। বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমীতে প্রচুর বিদেশী ক্যাডেট আসে জানতাম। এর সাথে আমার প্রথম পরিচয়। তালগাছের মতো লম্বা।শুকনা, চামড়া অনেক বেশী ফ্যাকাশে দেখে মনে হয় রক্ত শুন্যতায় ভুগছে বাদামী চুল, বাদামী পিঙ্গল চোখ। ভু-মধ্যসাগরীয় চেহারা। পরে জানলাম দুর্দান্ত রকমের বেয়াড়া একজন কিন্তু অসম্ভব রকম ফিজিক্যালী টাফ একজন। নাম মেহের। দেশ প্যালেস্টাইন।
একাডেমীতে ফার্স্ট টার্ম আর ফাইন্যাল টার্মের মধ্যে অন্যরকমের খাতির। থার্ড টার্ম মুলত পাঙ্গা পালিশ চালায়, সেকেন্ড টার্মারেরা নিজেরাই থাকে দৌড়ের উপরে। তবে অবসরে তারাও সিনিয়রশীপের প্রাকটিস চালিয়ে নেয়। ফাইন্যাল টার্মের অন্যতম কাজ হচ্ছে এদের হাত থেকে ফার্স্ট টার্মারদের রক্ষা করা। যেমন ধরা গেছে, ডাইনিং রুমে সবাই ক্ষুধার্তের মতো গোগ্রাসে খাচ্ছি, এমন সময় কারো হাত থেকে চামচ খসে পড়ে গেল। কর্পোরাল (একজন থার্ড টার্মার ক্যাডেট) লাফ দিয়ে উঠে সবাইকে তাড়িয়ে নিয়ে আসবে। পুট অন ডাংরি লং বুট, মেক ফল ইন। এমন সময় ফাইন্যাল টার্মার কেউ এসে কর্পোরালকে আলাদা করে নিয়ে কিছু বলে সব ফার্স্ট টার্মারদের সাথে পিলি পিলি গল্প শুরু করে দেবে, কার কার গার্ল ফ্রেন্ড আছে, এই সব। আজকের পাঙ্গা বাদ। মেহের স্যার প্রথমদিকে মোটেও এমন ছিলেন না।
সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পরে সোমালিয়ান রেফুইজিদের মত ডাইনিং রুমে বসেছি, হঠাত করে মেহেরের বিচিত্র আরবিংলিশ (বাংলিশ হলে আরবিংলিশ হবে না কেন?) সেই উচ্চারন বোঝাও দুরহ, ইয়েত ফার্স্ত তার্মারস আই’ভ লস্ট তেন তাকা নিয়ার হোয়াইত ওয়াল। গো এন্দ ফাইন্দ ইত। আমাদের খাওয়া ফেলে ছুটতে হতো কোম্পানী লাইনের পিছে সাদা দেয়ালের দিকে। পাশের পাহাড় থেকে পাহাড় ধ্বসের কাদায় ভর্তি থাকতো। গায়ে কাদা মেখে না ফিরলে আরো ক্যাচাল। বিরক্ত হয়ে একদিন আলী দাঁড়িয়ে বললো, স্যার ফরগেট টেন টাকা, ইটস টু চিপ, উই ক্যান গিভ ফিউ থাউজ্যান্ড বাকস। পুরো ডাইনিং হল পিনপতন নিঃস্তব্ধ। থার্ড টার্মাররাও হচকে গেছে। আমরা ভয়ে শেষ আজকে রাতে ভিগোরাস পাঙ্গা থেকে বাঁচার বুদ্ধি খুজতেছি সবাই। সবাইকে অবাক করে মেহের ঘর ফাটিয়ে হাসতে লাগলো। এরপর থেকে সে আমাদের খুব কাছের জন।
মেহের একাডেমীর টাফেস্ট একজন। সাড়ে ছয়ফিটের মতো উচ্চতা, যেকোন ক্যাডেটের তিনপা দৌড় তার এক পা দৌড়ের মতো। মাইল টেস্ট পয়েন্টে বিশাল একটা বোর্ড আছে, ওয়ান মাইল আর টু মাইলের রেকর্ড হোল্ডারদের নাম সেখানে লিখা থাকে। তুমি কি চ্যালেঞ্জ নিতে পারবে? জিসি মেহের জিসি নাম্বার ব্লা ব্লা, ৪মিনিট ৪৫সেকেন্ডে একমাইল দৌড়ে আসতে পারে। তুমি তাকে হারাতে পারবে? অবশ্য মেহের থাকতে থাকতেই সিলেট ক্যডেটের আরেকজন এই রেকর্ড ফেঙ্গে নিজের নাম বসিয়ে দিল, সেও আমাদের জাহাঙ্গির কোম্পানীর। কিন্তু মেহেরের দুই মাইলের রেকর্ড বহাল ছিল। এখন কি অবস্থা জানি না। এসল্ট কোর্সের রেকর্ডও হঠাত সেই একই ছেলে ভেঙ্গে বসলো। ব্রায়ান লারা কিভাবে হেইডেনের কাছ থেকে রাজকীয় ভাবে নিজের রেকর্ড পুনরুদ্ধার করে ঠিক সেরকম ভাবেই মেহের তার রেকর্ড উদ্ধার করলো ট্রেনিংএর একদম শেষ মুহুর্তে। এসল্ট হচ্ছে বাধা ডিঙ্গানী দৌড়, ঘাড়ে রাইফেল নিয়ে অনেকগুলো বাধা ডিঙ্গিয়ে পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে শেষে ফায়ারিং রেঞ্জে গিয়ে দশ রাউন্ড গ্রুপিং ফায়ার করা লাগে। যদিও পুরাটাই টিম ভিত্তিক আয়োজন কোন দল আগে যায়, তারপরেও ব্যাক্তিগত রেকর্ড করা সম্ভব। মেহেরের শেষ এসল্টের দিন জাহাঙ্গির কোম্পানীর একই দলে মেহের এবং সীলেট ক্যাডেট কলেজের সেই রেকর্ড ব্রেকার পড়লো। মেহের শুরু করলো অদ্ভুত স্লোলী ভাবে।নাইন ফিট ওয়ালের উপরে অনেকক্ষন বসে থাকলো খামোখা। দলের শেষ ক্যডেটটাকে পার করে দিয়ে হঠাত কি মনে করে শুট লাগালো, পাহাড়ের ওপারে যখন ফায়ার শেষ করলো, ততক্ষনে নিজের রেকর্ড পুনরুদ্ধার করে ফেলেছে।
মেহেরের সাথে অজ্ঞাত কারনে আমার খুব খাতির হলো। আমি দৌড়ে বেশ দুর্বল ছিলাম। রাতে ডিনারের পর কর্পোরালের কাছ থেকে আমাকে ছুটিয়ে এনে ব্যাটালিয়ন চক্করে পাঠাতো। দৌড়ানোর সময় কিভাবে শরীর সামনে ঝুকে রাখতে হয়, হাতের পজিশন, ফুট মুভমেন্ট ছোট ছোট ব্যাপার গুলো কিভাবে শক্তি সংরক্ষন এবং দ্রুত বাতাস কেটে সামনে এগোতে সাহায্য করে খুটি নাটি অনেক হেল্প করতো।
ফিলিস্তিনে বোধহয় বৃষ্টিপাত খুব কম হয়, বর্ষাকাল, আমাদের কাদা আর জঙ্গলে থাকতে থাকতে শরীর চুলকানী শুরু হয়ে যায় দেখে আমরা এই ঋতুটাকে দু-চোখে দেখতে পারতাম না। তাকে দেখতাম বর্ষা আসলেই মহানন্দে কোম্পানী লাইনের সামনে জোর করে দু-চারজনকে নিয়ে ভিজতো। ইয়াসির আরাফাত বাংলাদেশ সফরে এসে সরকারের সাথে একটা চুক্তি করে। এই চুক্তি অনুযায়ী প্রায় ৩০/৩৫ জন প্যালেস্টাইনিকে সামরিক প্রশিক্ষনের জন্যে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। কিন্তু প্যালেস্টাইনের রাস্তায় রাস্তায় গেরিলা যুদ্ধ করা এই ছেলেগুলো আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেনা। জন্মের পর থেকেই তারা রক্ত দেখছে। প্রতিদিন ঘুম ভেঙ্গে পাখির ডাক নয় শুনে ইজরায়েলের দৈত্যাকার আব্রাহাম ট্যাঙ্ক গুলো তাদের উপত্যকার বসতবাড়ির উপর দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে। বয়স দশ হবার আগেই একে৪৭এর সাথে তাদের পরিচয় হয়।একাডেমীতে একটা গান শুনতাম, আই ডোন্ট ওয়ান্ট মাই টিনেজ কুইন, আই জাস্ট ওয়ান্ট মাই টি-৫৬। টিনেজ কুইনের সাথে পরিচয় হবার সুযোগ পাবার অনেক আগেই বেশিরভাগ কিশোর পঙ্গু হয়ে যায় কিংবা ইজরায়েলী হেলিকপ্টার গান শিপ গুলো ধুলোর সাথে মিশিয়ে দিয়ে যায়। স্বাভাবিক ভাবে কনভেনশনাল মিলিটারী ট্রেনিং গ্রহন করার উপযোগী তারা ছিল না। বিশৃংখলা, চেইন অফ কমান্ড ভঙ্গ ইত্যাদি কারনে পররাষ্ট্রনীতির চাপকে অস্বীকার করে মিলিটারী একাডেমী ওদেরকে ছাটাই করতে থাকে। কারন অতিরিক্ত বেয়াড়া আর বিশৃংখল হবার কারনে ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটার কাছে এরা মোটেও গ্রহনযোগ্য ছিল না। শেষ পর্যন্ত ৩০জনের মধ্যে মাত্র ৭জন টিকে ছিল। ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির থেকে ইয়াসির আরাফাত হয়তো স্বপ্ন দেখেছিলেন একদিন স্বাধীন প্যালেস্টাইন গঠন হবে এবং বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমী থেকে প্রশিক্ষিত এরাই প্রথম প্যালেস্টাইন আর্মির পায়োনিয়ার হবে। বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমী এদের নিয়ে বেশ ঝামেলা পোহাতো। ওদের বেয়ারাপনা আর উচ্ছৃংখলতাই একমাত্র কারন নয়। ভাষা সমস্যাও একটা কারন। এরা ইংরেজীতে অসম্ভব দুর্বল। পড়াশুনার অবস্থা আরো ভয়ঙ্কর। আমাদের পড়াশুনার মাধ্যম ইংরেজী। আর কমিশনের শর্ত হচ্ছে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আন্ডারে গ্রাজুয়েশন করতে হবে। ট্রেনিং অফিসার এবং সিনয়রেরাও কথা বার্তার জন্যে ইংরেজী ব্যাবহার করেন। যুদ্ধ বিদ্ধস্ত ফিলিস্তিনি গেরিলাদের কাছ থেকে আশা করা যায় না তারা ইংরেজীতে ক্যালকুলাস কিংবা পলিটিক্যাল সায়েন্স পড়বে। ট্রেনিং দেবার জন্যে যেই সৈনিক ইন্সট্রাক্টরেরা ছিল তারা এদের পানিশমেন্ট দিতে পারতো না। ধরলেই স্তাফ হামি বঙ্গলা বুঝি না। মহাজ্বালাতন। আরবীজানা সৈনিক পাওয়া অসম্ভব। আমরা বিএসসিতে ম্যান্ডেটরি হিসাবে বাংলা প্রথম এবং দ্বীতিয় পত্র নিতাম। এরা ইংরেজীর পাশে আরবী নিত। সৌভাগ্যবশত একজন এডুকেশন কোরের মেজর বের হলেন যিনি ইসলামিক স্টাডীজএ ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেছেন। কিন্তু বেচারা ছাত্র হিসাবে এমন কজনকে পেলেন যাদের মাতৃভাষা আরবী।
ফার্স্ট মিডটার্মের পর ফাইন্যাল টার্ম বাদে সবাই এক সপ্তাহের ছুটিতে বাড়ী যায়। ফাইন্যাল টার্মারদের জন্যে অনেক গিফট নিয়ে আসা দস্তুর। মেহের আমাকে দায়িত্ব দিল তার জন্যে চটি বই নিয়ে আসতে হবে নীলক্ষেত থেকে। কিভাবে কিভাবে জানি সে রসময় গুপ্তের বিশাল ফ্যান হয়ে গেছে (বাংলা বুঝলেও পড়তে পারে না)। ঘটনাটা অদ্ভুত, এক ছেলে যে এক বর্ন বাংলা পড়তে পারে না সে রসময় গুপ্তের ফ্যান। গালা নাইটের দিন ফাইনাল টার্মারেরা জুনিয়র সাজে আর ফার্স্ট টার্মারেরা সিনিয়র সেজে ওদের পানিশমেন্ট দেয়। ফাইন্যাল টার্মারেরা অবশ্য তাদের গায়ে পানির বালতি শেভিং ফোম ইত্যাদি ঢেলে দিতে পারে। গালা নাইট কনসার্টে আইউব বাচ্চুর গানের তালে মেহের, নেমের, আব্দুল্লাহ সাত প্যালেস্টাইনী দেখি গলা ফাটিয়ে গান গাচ্ছিলো, আর বেশী কাতালে উতাল তেব আকাতে। পথে নেমের এবং আব্দুল্লাহ যার যার কোম্পানীর ছেলেদের গায়ে কাস্টার্ড ঢেলে দিছে দেখে সাবধান ছিলাম। রুমে ঢোকার আগে ভালো করে তালা টা পরীক্ষা করে দেখলাম, না সব ঠিকাছে। তালা খুলে ঢুকতে যাবার মুহুর্তে দেখি আমার ড্রেসিং রুমের জানালাটা খোলা। দেরি হয়ে গেল, পালাতে পারলাম না, আমার শেভিং ফোমের ক্যানের পুরোটা আমার মাথায় শেষ করলো মেহের।
মেহের তার পরিবারের সম্পর্কে কিছুই বলতো না। এটুকু জানতাম তার বাড়ি গাজা স্ট্রিপে ছিল এখন কিছু নেই। তার বাবা ছিলেন একজন ডাক্তার। ইমেইল এড্রেস লিখে রেখেছিল। ই-মেইলের জবাবে অনেক কিছু লিখলেও প্যলেস্টাইন সম্পর্কে একটা কথাও ছিল না। ওনার রুমে বিশাল একটা প্যালেস্টাইনী পতাকা ছিল। ইজরায়েলী আর্মির প্রতি তীব্র ঘৃনা লুকাতে পারে নি। পাসিং আউট প্যারেড শেষে সদ্য সেকেন্ড লেফট্যান্টে পরিবর্তিত ক্যাডেটরা যার যার ইউনিফর্ম লাগিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলো প্যারেন্টসদের সাথে। প্যালেস্টাইনীদের ট্রেনিং শেষ। এরা ইউনিটে যাবে না, এরা যাবে সরাসরি ব্যাটেল ফিল্ডে। একাডেমী খালি হলেও এদের কয়েকদিন থাকা লাগবে। দুপুরে মেহেরকে দেখলাম আয়োজন করে খাচ্ছে, বাইরের আনন্দ উচ্ছাসে কিছুই এসে যায় না। নিয়ম অনুযায়ী ক্যাডেট ইউনিফর্ম খুলে সেকেন্ড লেফটেন্যান্টের পিপস লাগানো ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ইউনিফর্ম পড়েছে। জানতাম সেটাই তার সাথে শেষ দেখা। বাইরের উতসব ফেলে তার সাথে বেশিক্ষন থাকার ইচ্ছে ছিল না।
ইজরায়েলের মোসাড খুব নামকড়া ইন্টালিজেন্স। বাংলাদেশে সাতজন ছেলে ট্রেনিং শেষ করছে ব্যাপারটা তারা ভালো ভাবেই জানতো। ওদেরকে দু বছরের মধ্যে একাডেমীর বাইরে খুব সাবধানে যাতায়াত করতে হতো। ছুটিতে ঢাকায় এলে এম্বেসীতে থাকতো। মিলিটারী একাডেমীর মতো সুরক্ষিত জায়গায় মোসাডের কিছু করার সম্ভবনা ছিল না। ট্রেনিং শেষে শুনেছি ওরা প্রথমে লেবানন যায়। কিন্তু প্যালেস্টাইনে নামার সাথে সাথে ছয়জন মোসাদের হাতে ধরা পড়ে। প্রচন্ড টর্চার করে ৬জনকেই মেরে ফেলে। আরেকজন পালিয়ে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করে। ৬ মাস পরে সেও ধরা পরে এবং ইজরায়েলীরা গুলি করে ফেলে। সপ্তম জনের নাম মেহের। বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমীর সবকজন প্যালেস্টাইনি ক্যাডেটের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হলে মিলিটারী একাডেমীতে একদিনের শোকদিবস পালিত হয়েছিল।