কি বলবো জানি না । কিছু বলার ভাষা জানা নেই । কি বলা উচিৎ তা ও জানি না ।
বেঁচে থাকার যে খুব শখ, ঠিক তা নয় । কিন্তু আচমকা হঠাৎ যে কোন সময় চলে যেতে হবে, চলে যাবো ... ভাবতেই খুব ভয় হয় ।
স্বার্থপরের মত কেবল নিজের কথা ভাবি! মানুষ তো আসলে এমন নয় । এমন হতে পারে না ...
কিন্তু কে জানতো যে আজকেই আমাকে চলে যেতে হবে? এটাই আমার শেষ বিকাল বা শেষ সকাল?
নিমতলির ঐ শিশুটি ই কি জানতো! আর কখনো কোন বিকেলেই তার আর বেড়াতে যাওয়া হবে না । জানতো না ঐ মেয়েটি ও । বিয়ের পর যে ভেবেছিল তার জীবন নতুন অন্যরকম হয়ে যাবে । অন্যরকমই হলো, কিন্তু যেমনটি সে ভেবেছিলো তেমনটি তো নয় ।
কিংবা বেগুনবাড়ির ছোট্ট ঘরের ৩ বছরের আছিয়া নামের সেই মেয়েটি । সে ও তো জানতো না তাদের সংসার এখন আর বাবা, মা সহ তিন জনের নয় । শুধু তার একার । ঘর ছাড়া, আশ্রয় ছাড়া তার একার ।
যারা চলে গেলেন, তারা তো সব সম্পর্কের শেষ করে গেলেন । আর কোন দিন কেউ তাদের কে বাবা বলে ডাকবে না । মা ডাকের সাঁড়া দিতে হবে না কাউকেই আর । মায়ের কোলের শিশুটিকে আর খুঁজে পাবে না কেউ কখনো। এভাবেই কিছু বুঝার আগেই চলে যেতে হলো সবাইকে ।
কিন্তু যারা বেঁচে গেলেন একা, অসহায় । তাদের তো আকঁড়ে ধরার মত আর কিছুই রইলো না । কি নিয়ে তারা বেঁচে থাকবেন । কোন আশায়, কোন নতুন স্বপ্ন নিয়ে? মা, বাবা, ভাই, বোন, স্ত্রী, স্বামী, সন্তান ... সব কিছু হারিয়ে স্বপ্নের নতুন জাল বোনা কি এতই সহজ? মানুষ কি পারে এত সহজেই সব কিছু ভুলে যেতে?
না পারে না। মানুষ বলেই পারে না । আবেগ, বুকে জমে থাকা কষ্টের বাঁধ ভেঙ্গে যাবে তবু ও কিছুই ভুলতে পারবে না । কেউ কখনো ।
খুব কঠিন, অসম্ভব । কিন্তু তবু ও নতুন করে বাচাঁর জন্য সব কিছু কে মেনে নিতে হয়। জীবন কে সামনে নিয়ে যেতে হয়। আঁকড়ে ধরতে হবে একমুঠো মাটি কে । এটাই জীবন, এটাই জীবনের নিয়ম ।
মানুষের জীবন এতো অদ্ভূত কেন?
হৃদয়ের সবটুকু শ্রদ্ধা রইলো জীবন যুদ্ধে রত সেই সব মানুষের প্রতি । যারা সব হারিয়েও আবারো উঠে দাঁড়াবার স্বপ্ন দেখছেন । তোমার কাছে যারা চলে গেলেন, আল্লাহ্ তুমি তাদের সবাইকে আপন করে নিও । আমীন ।।