somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডাঃ সাজিয়া আফরিন ,ধর্ষণ, কতিপয় বাঙ্গালি চিন্তাভাবনা

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মনে হয় অনেক পুরনো ব্যাপার নিয়ে লিখছি।কয়েকদিন আগে ফেবূ তে একটা পোস্ট দেখলাম।রিসেন্টলি আমি ফেবুতে মন জানালা নামে একটা একাউন্ট খুলছি।খোলার পর দেখি দুনিয়া ভেল্কি লাগাল।
বাপ রে বাপ।বাঙ্গালি ধর্ষণ কে কিভাবে সামাজিক করা যায় তার জন্য উঠে পড়ে লাগছে।

স্বাধীনতা আমরা অনেক কষ্ট করে পেয়েছি। ভারত মুক্তিযুদ্ধে আমাদের মিত্রপক্ষ ছিল।পাকিস্তান ছিল শত্রু পক্ষ।ব্যাপার এখানেই শেষ।পাকিস্তান কে আমি কখন ক্ষমা করব না।তাই বলে ভারত কে আমি মাথার উপর তুলে রাখব না।সবার আগে বাংলাদেশ।
কিন্তু দিল্লির ঘটনা এবং কিছু বাঙ্গালির কথাবার্তা দেখে খুব অবাক হলাম।কেউ লিখেছেন ভারত এর মতো দেশে এরকম এই হওয়া উচিত প্রভৃতি। একটা পেইজ এর লেখা তুলে দিলামঃ

ভারতে গনধর্ষণের শিকার মেডিকেল শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে সারা বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়েছে। হিন্দুরা পর্যন্ত এখন দাবী করছে ধর্ষকদের পাথর মেরে অথবা শিরচ্চেদ করে হত্যা করা হউক। আমি তাঁদের দাবীর সাথে পুরুপুরি একমত কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মুসলমানরা যখন ঠিক এই ধরনের অপরাধের জন্যে একই কাজটি বাস্তবায়ন করে থাকে তখন তারা বলতে থাকে—ইসলাম সেকেলে, ইসলাম বর্বর, ইসলাম অমানবিক এবং আরও কত কি??? Why the double standard?????

এখানেই শেষ নয়। অনেকেই আবার নারীদের সুরক্ষার জন্যে কঠোর আইন প্রণয়ন করার প্রস্তাব দিচ্ছে। “কঠোর আইন প্রণয়ন” কথাটা আমার কাছে হাস্যকর মনে হয়। আইন প্রণয়ন করে কখনোই অপরাধ দমন করা যায় না। আগে অপরাধী তৈরির কারখানা বন্ধ করতে হয়। যত কঠোর আইন (এমনকি একজনকে দশবার করে ফাসি দিলেও) করুক না কেন এইসব ঘটনা কখনোই ভারতে বা আমাদের সমাজে বন্ধ হবে না কেননা ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় ধর্ষক তৈরির সবচেয়ে বড় কারখানা। তারা মেয়েদের শেখায় কিভাবে যৌন উত্তেকজক শরীর তৈরি করতে হয়, এই শরীর দিয়ে কিভাবে ছেলেদের আকৃষ্ট করতে হয়। তারা শিলা মুন্নিদের দেখিয়ে তাঁদের মেয়েদের বলে দেখ, দেখ শেখ কিভাবে বুক খোলা রাখতে হয়, পাচা দুলাইতে হয়, উলঙ্গ হতে হয়। আর ছেলেরা এইসব শিলা, মুন্নি ও চামাক চাল্লুদের দেখে দেখে ক্ষুধার্ত হয়, একসময় সহ্য করতে না পেরে শিলা মুন্নি ও চামাক চাল্লুদের অনুসারী রাস্তার পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া শিলা মুন্নি ও চামাক চাল্লুদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। সুতরাং ধর্ষকের শাস্তির বিষয়টা মাথায় নেওয়ার সাথে সাথে কিন্তু ধর্ষক তৈরির কারিগরদের বিষয়টাও মাথায় নিতে হবে।

-এবার আসি আমাদের দেশের কথায়। ভারতের ধর্ষক তৈরির কারকাখার আমাদের দেশে প্রধান দুই এজেন্ট হচ্ছে প্রথম আলো ও চ্যানেল আই। এরা হচ্ছে আমাদের দেশে ভারতীয় নগ্ন সংস্কৃতির দুই বড় পরিবেশক। এরা আমাদের তরুণীদের শেখাচ্ছে বুক খোলে রাখো কারণ বুক হচ্ছে সাহসিকতার প্রতীক!!! সেই বুক যদি তুমি ঢেকে রাখো তাহলে তো তুমি আর সাহসী না। লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টার, ভিট চ্যানেল আই টপ মডেল ইত্যাদি পতিতা তৈরির প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বুক কিভাবে খোলা রাখতে হয়, পাছা কিভাবে আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে দুলাইতে হয় তা খুব সুন্দরভাবে শিখিয়ে দিচ্ছে।

-শেষ কথা। যারা সত্যিই চান আমাদের দেশে যেন ভারতের ঐ মেডিকেল ছাত্রীর মতো কোন মা, বোন বা কন্যাকে প্রাণ দিতে না হয় তাঁদেরকে বলবো এইসব এজেন্টদের বিরুদ্ধে, অশ্লীলতার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলুন। ছেলেমেয়ে সবাইকে ইসলামের নৈতিক শিক্ষাগুলো শিক্ষা দেন। তাঁদেরকে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার জন্যে উৎসাহিত ও সহযোগিতা করুন। না হলে আপনাকেও একদিন প্রেস ক্লাবের সামনে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ধর্ষকের শাস্তি চেয়ে দাড়িয়ে থাকতে হবে!!!!

__তানভীর আহমেদ আজরেল

পেইজ টাBangladesh
এখন একটু অশ্লিল কথা লিখব।একটা মেয়ে কি পোশাক পরবে বা না পরবে তা তে কি তার স্বাধীনতা নাই?বাইরের দেশের কথা খালি।আরে বাবা আমি আমার সংস্কৃতি নিয়ে চলি সে তার তা নিয়ে চলে।ওই দেশে গেলে তো আপনাদের উত্তেজনা হয় নাকি?তখন তো মুখ দিয়ে কথা বের হয় না।

আর একটা কথা?ধর্ষণ কি খুব ভাল জিনিশ নাকি?নাকি ছেলেদের শিক্ষা দেন ধর্ষণ করার জন্য? এই কথার মানে কি-"ছেলেরা এইসব শিলা, মুন্নি ও চামাক চাল্লুদের দেখে দেখে ক্ষুধার্ত হয়, একসময় সহ্য করতে না পেরে শিলা মুন্নি ও চামাক চাল্লুদের অনুসারী রাস্তার পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া শিলা মুন্নি ও চামাক চাল্লুদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে-""

মেয়েরা কি ভোগের বস্তু?যেরকম ইচ্ছা হল ঝাপিয়ে পড়লেন?মেয়েদের উত্তেজনা নাই নাকি?কই ওরা দেখি ছেলেদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে না?ইসলাম বলেছে উত্তেজনা হলে ঝাপিয়ে পড়তে?
এই সব টাঊট পেজের জন্য আজ ইসলামের এই অবস্থা।

একটা মেয়ে রাতে বাইরে থাকতে পারে না,কাজ করতে পারে না,ভিড়ে হাটতে পারে না কেন?তার কি এই স্বাধীনতা টা ও নেই ইচ্ছে মত পোশাক পড়ার?মেয়েদের জন্ম কি ঘরে থাকার জন্য?এক কোনায় পরে থাকবে যাতে তাকে দেখে কেউ ""উত্তেজিত"" না হ্য়?আমি আগে মনে করতাম বাইরের দেশে গেলে মেয়েরা ফিরতে চায় না কেন?এইসব দেখে বুঝি কেন আসতে চায় না।যে স্বাধীনতা সে পায় ,যে মর্যাদা সে পায় তা আমরা দিতে পারি না। আমরা বাংলাদেশ এর নামে পেজ খুলে মেয়েদের অপমান করি,দেশের মর্যাদা নষ্ট করি।এর বেশি কিছু আমাদের দারা সম্ভব হয় না।

এখন কেউ কেউ আসবেন জ্ঞান দেওয়ার জন্য।""বিদেশে দেখ কত ধর্ষণ।আমাদের দেশে তো কম।"
ওদের দেশ আর আমার দেশ এক না।আমাদের এখানে মেয়েরা লজ্জায় কথা বলতে পারে না। বীরপুরুষরা দোষ খালি মেয়েদের দেন,হেয় করেন তাদের।যে ধর্ষণ করে সে তো ""উত্তেজনায়"" করেছে।তার আর দোষ কি?তাই মামলা হয় না।নিরবে আত্মহত্যা করা ছাড়া সে পথ খুঁজে পায় না।
বিদেশে অনুমতি ছাড়া কেউ তার বউ কে হাত দিলে ও মামলা হয়।
আর এই বাপারে সব কথার শেষ কথা একটা ধর্ষণ ও আমি কেন মানব?ধর্ষণ কম হয় বেশি হয় ব্যাপার না।কথা হচ্ছে ধর্ষণ হয়।
কেন হবে?কেন?তুলনা,যুক্তি কেন দরকার?একটা রেপ ও কেন হবে?

শারিরিক শক্তি নেই তাই কি বীর পুরুষরা ধর্ষণ করেন?আজ কাল এই দিন নাই রে বাপ।আগে কিছু মেয়ে শিখত।এখন প্রতি মেয়ে শিখবে জুডো,কারাতে।আর বেশি দেরি ও নাই যেদিন ওরা থাকবে ,হাঁটবে ছুরি নিয়ে।

আসি নতুন একটা ঘটনায়।ডাঃ সাজিয়ার কথা।একজন যোগ্য নাগরিকের কথায়।একজন ডাক্তার কত কষ্ট করেন এটা ওদের পরিবার ছাড়া কেউ বোঝে না। দুই তিন জনের জন্য সবাই ডাক্তার কে খারাপ বলে।সবাই খারাপ হলে বাংলাদেশের কেউ বাচত না।এই মানুষটি কষ্ট করে পরেছেন,ডাক্তার হয়েছেন।

একজন ফাস্ট ক্লাস নাগরিক কেন এই অবস্থার শিকার হবেন?
উনার কি ভুল ছিল?
নাইট ডিউটি করা?
ডাক্তার হওয়া?
মেয়ে হওয়া?
মানুষ হয়ে জন্ম নেওয়া?
নাকি বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া?

জানি না আসলে।সব দেখলে শুনলে মনে হয় মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়া টা পাপ।কখন ধর্মের অজুহাত,কখন পোশাকের আবার কখন বা সংস্কৃতির অজুহাত।

ডাঃ সাজিয়ার জন্য একটা মানবব্ন্ধন হবে ১৮ তারিখ,৩ টায়।একটু যাবেন।রক্ষা তো করতে পারি নাই,প্রতিবাদ তো করতে পারি।বিশ্তারিত জানতে ঃJUSTICE FOR DR.SAJIA AFRIN EVA

আর একটা লিংক। এটা পেয়েছি দূর্বা জাহান এর প্রোফাইল থেকে। দেখে নিবেন মানুষের চিন্তা ভাবনা এখানে


এই সব নিয়ে আমি লিখি না।মানুষ কে বোঝাতে আর ভাল লাগে না।বিশেষ করে তাদের যারা বুঝেও বুঝে না। আশা করব সবাই সোচ্চার হবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫০
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×