সকালে ঘুম থেকেই উঠেই বিথিকে ফোন
-হ্যলো বিথি
-বলো
-আমি জীবনের অতিব গুরুত্বপুন্য ও জরুরী একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি
-কি সিদ্ধান্ত
-আমি আমার জীবনের সমস্ত আরাম-আয়েস পরিত্যগ করবো,প্রয়োজন হলে ঘর সংসার ত্যাগ করে কামাক্ষাতে গিয়ে ধ্যন সাধনায় বসবো । আরাম ত্যাগ করার প্রথম নিদর্শন সরুপ বিছানার জাজিম তুলে ফেলে দিয়েছি,বুয়া খালাকে বলেছি নিয়ে যেতে, খালা আমার এহেনো সিদ্ধান্তে যার পরনাই খুশি হয়েছেন । খালা জাজিম পাওয়ার খুশিতে আমাকে নাস্তার সাথে একটা অতিরিক্ত ডিম পোচ করে দিয়েছেন । খালা তার ছেলে আর রিকসা আনতে গেছেন জাজিম নিয়ে যাবে বলে । হ্যালো... শুনতে পাচ্ছো.... হ্যালো....
আমি হরবর করে আরো দু-একটা কথা বলতে যাচ্ছিলাম আবিস্কার করলাম ফোনে টুট-টুট শব্দ হচ্ছে । আমার বাকোয়াস শোনার সময়ে এখন বিথির নেই । উদ্দেশ্য শোনার আগেই ফোন কেটে দিয়েছে ।
গতকালে বাস স্ট্যান্ডে বাসের অপেক্ষায় বসে আছি,মেজাজ চরম খারাপ,বাস আসতে দেরি হচ্ছে । হঠাত ভাঙ্গা গলার গান শুনলাম " আন্ধারে দান করিলে যাইবোনা বিফলে..." তাকিয়ে দেখি ১০-১২ বছরের একটা ছেলে,গায়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জার্সি পরা । বুকের উপর বড়বড় করে ইংরেজিতে লেখা "সাকিব আল হাসান" । দেখেই চমকে উঠলাম,তার হাতে অন্য একটা হাত ধরা, লোকটার বয়স আনুমানি ৬৫ । বৃদ্ধ মানুষ খকখক করে কাশছেন আর ভাঙ্গা গলায় গান গাইছেন । তার গায়েও বাংলাদেশ ক্রিকেটের জার্সি বড় বড় করে ইংরেজিতে লেখা 'তাসকন আহমেদ' । ছোট ছেলেটাকে জিজ্ঞাস করলাম
-কিরে বেটা তোর নাম কি?
-কিরন
-বলিশ কি । সাকিব আল হাসানকে চিনিস !
-কি যে কন না সার সাকিবরে চিনুম না । আমার পিরিয়ো খেলোয়ার....
-তোর দাদার নাম কি তাসকিন ?
-না,হের নাম সোলেমান, দাদারে ভিক্ষার টেকা দিয়ে জার্সিডা কিন্না দিসি.... তাসকিন প্রিরিয় বলার তো তাই..... জানেন তাসকিনরে নিষেধ করছে.... হেয় আর বল করতে পারবোনা ....আংকেল দুইডা টেকা দেন...
আমার চোখে পানি এসে গেল । আমি ওকে দশটাকা দিলাম । আমাদের দেশের ক্রিকেট যখন এই লেভেলের জনপ্রিয় তখন আইসিসির চুলকানি উঠেছে । অস্ট্রেলিয়া ভয়ে নিরাপত্তার কারন দেখিয়ে খেলতে আসছে না ।
আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি সকল আরাম আয়েস ত্যাগ করে ভোরে উঠে নিয়ম করে ইন্ডিয়া অধ্যুষিত আইসিসির জন্য গায়েবানা জানাজা নামাজ পরবো । লাগলে ঘর সংসার ত্যাগ করে কামরুকামাক্ষায় গিয়ে উপস্থিত হব । তন্ত্র মন্ত্র সাধনা শিখবো । তন্ত্র মন্ত্র সাধনা করে যদি অবাধ্য সন্তানকে বাধ্য করা যায়, মনের মানুষকে বসে আনা যায়, স্বামিকে বস মানানো যায়,সংসারে শান্তি আনা যায় তাহলে আইসিসির শর্ষের ভুত শয়তানদেরও সায়েস্তা করা যাবে । যা হয় পরে দেখা যাবে । শোভন ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:২৫