-মা আমরা এখানে এসেছি কেন ? এখানে কি করছে ?
মা হাই তুলতে তুলতে বললেন,
-তুমি ভাত খাওনা তো,দাত রেখে আর কি হবে, শুধু শুধু জায়গা দখল । তাই তোমার সব দাত আজ ডাক্তার তুলে নেবে ।
৫ বছরের বাচ্চা মেয়েটা ভয়ে সিটিয়ে গেল । ভয়ে মুখ চেপে ধরলো । পারলে উপর নিচের দুই পাটি দাঁত-ই খুলে পুতুল বাক্সের মধ্যে লুুকিয়ে রেখে আসতো । বিরাট ভুল করে ফেলেছে । মাকে বিশ্বাষ করে হুট করে তার চলে আসা তার ঠিক হয়নি । মা মেয়েকে আরো একটা সুজোগ দিলেন
-এখন থেকে ঠিক মতো ভাত খাবে তো ?
বাচ্চা মেয়েটা হা সুচক মাথা নেড়ে মায়ের কোলের মধ্যে মাথাটা লুকিয়ে ফেললো । এখন যেন মা না ডাক্তার ই বড় শত্রু । মায়ের কোল থেকে মুখ বের করলেই সর্বনাশ হয়ে যাবে ।
পায়ে প্রচন্ড ব্যথা নিয়ে গেছি দাঁতের ডাক্তারের কাছে । উদ্দেষ্য পেইনকিলার যখন খেতেই হবে, দাঁত তুলেই একবারে খাই । ওয়ান স্টোন টু বার্ডস্ থিয়োরি । কিন্তু এক ঢিলে দুই পাখির পরিবর্তে এক ঢিলে তিন পাখি পরলো । ডাক্তার সাহেব বললেন মামা ( উনি সম্পর্কে আমার মামা হন । মামা ও মামী দুজনেই দাতের ডাক্তার। দুজনেই খুব চমতকার মানুষ,চমতকার করে হাসেন । আরো চমতকার করে তারা হাসতে হাসতে মানুষের দাত তুলে দেন । আমাদের পারিবারিক ক্লিনিক বললে ভুল হবে না ।) আপনার আক্কেল দাতের যে অবস্থা দেখছি তাতে রুট ক্যনেল করে খুব বেশি লাভ হবে না । দাঁত তুলে দেই এটাই ভাল । আমি বললাম 'ব্যথা লাগবেনা তো ?' মামা হাসলেন । মুহুর্তের মধ্যে আমার আক্কেল দাত তুলে আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন ।
মামাকে বললাম 'মামা এখন বিপদে পরলাম তো । এখন ইদুরের খাল কই পাই । ঢাকা শহরে তো ইদুরের খাল নাই যে সেখানে দাতটা ফেলে নতুন দাত চাইবো । মামা আবার হাসতে লাগলেন । মামার হাসা মানেই দাত হারানোর সম্ভাবনা । আমি আক্কেল দাত পরেটে পুরে নিয়ে হাটা দিলাম ।
এক ঢিলের তিন নাম্বার পাখিটা হল, কেউ আর একচড়ে ৩২ দাত ফেলে দেবার হুমকি দিতে পারবে না । দিলে, অতি বিনয়ের সাথে বলবো । বড় ভাই আমার দাত ৩১ টা । একটা অক্কেল দাত কম আছে । শোভন।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৩৯