"ভাই, আপনি কি আমার সাথে এক প্যকেট বিরিয়ানি খেতে রাজি আছেন ?"
- কথাটা শুনে রিক্সাওয়ালা আমার দিকে ভ্রকুচকে এমন ভাবে তাকালো, যেন আমি তার পিঠে বন্দুক ঠেকিয়েছি তার রিক্সা ছিনতাই করবো বলে, " নো হাংকি পাংকি.... সোজা তাকিয়ে রিক্সা চালা, পেছনে তাকালেই গুলি" । রিক্সাওয়ালার চাহুনি দেখে আমি নিজেই বোকা হয়ে গেলাম । বোঝা গেল, জীবনে সে অনেক সুন্দরী মেয়ের কাছ থেকে প্রেমের প্রস্তাব পেয়েও এতোটা ভরকায়নি ।
যাই হোক, সে ঘটনা বুঝে ওঠার পর পিচ করে একদলা থু থু ফেললো- যার মানে হল, "এই গরমে ইয়ার্কি মারার জায়গা পান না মিঞা" !!! উল্লেখ্য, কিছুক্ষন আগেই তার রিকসা থামিয়ে আমি তিন প্যকেট বিরিয়ানি কিনেছি ।
বাড়ি পৌছে গেছি গেছি এমন অবস্থা, ভদ্র লোক কথা বলে উঠলেন- তার চোখের চাহুনি এখন স্বাভাবিক । আমি একটু ভরসা পেলাম ....
-ভাইজান কি চাকরি করেন?
-হ্যা
-সরকারী.....?
-না ভাই, একটা টিভি চ্যনেল-এ
- কোন চ্যনেল ?
- একাত্তর ।
-আওয়ামীলীগের চ্যনেল, তাই না?
- না ভাই, আওয়ামীলীগের চ্যনেল হতে যাবে কেন?
- না ভাই আপনে জানেন না । এডাও সরকারী চ্যনেল । মাঝে মাঝে বিটিভিতে "একাত্তর" চ্যনেল দেখা যায় ।
আমি রীতিমতো হতবাক । আমি পরিমরি করে নেমে যাবার জোগাড় করলাম, বললাম - "ভাই থামেন,নামায়ে দেন" । সে তার চৈত্রদুপুরের কড়া দৃষ্টি দিল । সে আমার সবিনয় নিবেদন শুনে তার রিক্সা থামালো । নিদিষ্ট দুরত্বের আগেই নেমে গেলাম ।
আমি ভাড়া দেবার জন্য ৩০ দিলাম টাকা , বললাম "ভাই,৫ টাকা ফেরত দেন" । সে বলল, ভাই বিরিয়ানী খাওয়াতে চাইলেন একটু আগে এক প্যকেট দাম ১১০টাকা , আর ১০টা টাকা বেশি দিবেন না !!! উল্লেখ্য, ভাড়া ২০ টাকা ঠিক করেছিলাম । আমি আর কোন কথা বলার সাহস পেলাম না । "গুম" হয়ে যাওয়ার কি একটা আশংকা আমার মনে উকি দিল । তিন প্যকেট বিরিয়ানি আর ১০ টাকা বেশি দেবার বেদনা নিয়ে খুড়াতে খুড়াতে বাড়ি ফিরলাম । সম্ভবত রিকসাওয়ালা আমি "একাত্তর এর কর্মী" শুনে মাইন্ড করেছেন । অবশেষে বাসায় ফিরে পরলাম "আলহামদুল্লিলাহ্" ।