অনেক দিন ব্লগে লিখি না, লেখার তেমন কোন ইচ্ছাও ছিলো না।কিন্তু প্রতিদিন ব্লগে আসতাম। কখনো কখনো কারো পোস্টে চোখ বুলিয়ে নিতাম, মাঝে মধ্যে হয়ত মন্তব্য।
কেউ কখনো হয়ত ভেবেছিলেন কোন কারণে হয়ত পোস্ট দেই না ব্লগের প্রতি রাগ কিংবা কোন সমস্যা।
কিন্তু আমি নিতান্তই একজন খুব সাধারণ ব্লগার।
এখানে প্রতিদিন যেমন ঘটেছে তর্ক-বির্তক, তবুও এসে গেছি দেখে গেছি। তবুও ব্লগটা বেচেঁ আছে।
সাধারণ মানুষের কিছু কথা ডায়েরির পাতা ওঠে আসে হয়তবা এই ব্লগে।
সব লেখাকেই গল্প কিংবা সাহিত্যের মানদন্ডে না ফেলে কিছু মানুষের জীবনের কথা হিসেবে দেখলেই ভালো লাগে, একটা সময় সেই সময়টুকুন ছিলো, আজ আর নেই তেমন অবসর।
নিজের কথা মনে হলে বড় মায়া হয়, কি ভালো লাগায় এখানে এসে বসতাম এখন কেন এতটা উদাসীন। আজ কেন নেই সেই সময়।
একটা সময় কেন জানিনা মনে হয়েছিলো ভার্চুয়াল এবং রিয়েল ভালো-মন্দের মাঝে অনেক তফাৎ। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে ভালো সে সব পাত্রেই ভালো একইরকম মন্দের বেলায়।
অনেক দিন আগের লেখা একটি অসমাপ্ত গল্পের সমাপ্তি লিখতেই বসা আজকে। গল্পটার শেষ লেখার জন্য আমাকে অনেক দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে বলাটা উচিত হবে না বোধ হয়। আসলে এতদিন এই গল্পের কোন প্রয়োজন ছিলো না। এখন বোধ শেষটা লেখা যেতে পারে।
আমি কিন্তু ভালোবাসি না শিরোনামে গল্পটা লেখা হয়।
গল্পটা খুব সাধারণ কিন্তু এখানের সব চরিত্র বেঁচে আছে এই যা বিশেষত্ব।
গল্পের শেষ কথা ছিলো ----চলিতে থাকিল তাহাদের...................কিন্তু কোন কিছুই অনন্তকাল হয়ত চলে না, সব চলার হয়ত একটা শেষ থাকে।
অনেক দিনের অনেক কথা ভালো-লাগা মন্দ লাগার পরেও হয়ত খুব গভীরে কিছু সত্যি লুকিয়ে থাকে যা আমরা নিজেরাই কখনো ধরতে পারিনা।
আনন্দ-অনুর জীবনেও তেমন কিছু ছিলো যেটা দুজনের কেউ কখনো বুঝতে পারেনি।
আনন্দ আর অনুর মাঝের দুরত্ব ছিলো কেবল সময়ের না দেখার। চোখের দেখা নেই তবে মনের দেখা হয়ত ছিলো। দুজনই দুজনকে ঠিক সেইভাবে অনুভব করত। সম্পর্কটা ছিলো তেমনই মধুর যতদিন পর্যন্ত আনন্দের মনে অনিশ্চয়তা ছিলো, যতদিন পর্যন্ত অনু ছিলো আনন্দের ধরা না ধরার ফাকেঁ। লুকোচুরির এই এক বিশাল মজা। কেউ জানে কেউ বুঝে না।
অনু একদিন ফোন করে বলেছিলো তুই আমাকে বিয়ে করবি। জবাবে
আনন্দের সেই চিরাচরিত কথা--হুম, তুই যা বলবি তাই করব।
তারপরেও অনেক দিন ওদের মধ্যে বলা না বলার মাঝের অনুভূতির বিনিময় হতে থাকে।
অনু একটা সময় বলে নাহ আমি এমনি বলেছিলাম-ফাযলামি! আনন্দ বলল হুম, আমি জানি।
তারপরেও অনেক পরেও আনন্দ অনুর কাছে অনুমতি চাইলো--আমি কি তোর ভালোবাসার তানপুরা বাজাঁতে পারি???
তুই কি আমার সাথে তোর ভালোবাসার তানপুরা তোর ফ্যামিলি
তোর সবসুর বাজাঁতে পারবি??
অনেক বছর পর আনন্দ জেনেছিলো সত্যিটা এবং অনুও। আনন্দ জেনে গেলো অনু তার তানপুরা বাজাঁতে রাজি আনন্দের সাথে সম্পর্কের সবসুরে।
এভাবে চলল কিছুদিন। গল্পটা হয়ত এভাবে শেষ হতে পারত। এভাবেই হয়ত সারাজীবন চলতে পারত।
কিন্তু এখানেই এভাবে শেষ হলো না।
কিছুদিন পর অনুও জেনে নিলো সত্যিটা। কথায় বলে ভালোবাসা মুখে বলার বিষয় নয় অনুভবের। অনুও অনুভব করলো তানপুরার সুর সত্যিই বাজেঁ না, তাল কেটে যায়নি আসলে। সে আসলে বাজাঁতেই জানে না। যে তাকে কখনোই ভালোবাসেনি সে কি করে পারবে এখন ভালোবাসতে??
আনন্দের বিরক্তিসূচক কথা এবং সময়ের বাধাঁ নিষেধই প্রমাণ করে দেয়--এতদিন যা পায়নি সে নিজের করে..একদিনের জন্যে হলেও সেটার অধিকার কেবল দরকার ছিলো।
মানুষ যখন তার কাঙ্খিত জিনিসটি পেয়ে যায় তখন এর চেয়ে অদরকারি জিনিস তার কাছে আর কিছুই হতে পারে না।
অনুর কেবল মনে পড়ে দিনরাত যে ছেলে তার পেছন পেছন বছরের পর বছর ঘুরে মরল এখন কি করে সে এত সময় সচেতন হয়ে যায় এবং নিজের করা কাজকে ভুলে অন্যকে আদেশ করা যায়--এমন করবি না।
আজ আর আনন্দের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই অনু কোথায় কেমন আছে। আনন্দকে ভুলে আছে না মনে নিয়ে আছে। আজ তার পালানোর দিন, সে পালাবেই।
যাকে নিয়ে কখনোই ভাবেনি অনু, যার কাছাকাছি থেকে এতদিন তাকে অনুভব করেনি, এখন তার উপেক্ষাই তার কথা মনে করিয়ে দেয়। ভালোবেসে নয় একজন বিশ্বাসঘাতক হিসেবে।
কেউ একজন বলেছিলো একদিন- আসলে ছেলেদের ভালোবাসার কোন যোগ্যতাই নেই, জানেই না কি করে ভালোবাসতে হয়। কেবল চর দখলের মত ভালোবাসার স্বীকৃতি চাওয়া।