মানুষের জঙ্গলে গাছে গাছে ঝুলে আছে টেলিফোন, দঙ্গলে দঙ্গলে। চমকে যেওনা ওগো! এই প্রথম, প্রথমইতো(!), বনের ভেতর থেকে, মনের ভেতর থেকে, তোমার সঙ্গে সঙ্গোপনে সেরে নিচ্ছি কথা। ত্বকরঙ দুধালো দয়ালু রিসিভার, তুমি জানো আমি আর কখনও-ই ভুল করবো না। যত দূরেই যাই জানাতে পারবো রাস্তার বিবরণ, আঁকাবাঁকা পথরেখা, সমীরণ সমীকরণ; তোমার পোষা বনরীদের গণসঙ্গীতের সুর...
হয়তো এই শীতে তুমি লেপের তলায় ওমে বসে ধরছো ফোন, কিংবা কোন কৃত্রিম উষ্ণ প্রস্রবনের ধারাস্নানে মেলে দিয়েছো আদুল গা। দুটি একটি রাত্রির তারা জানালা-ওপারে ভারহীন ঝুলন্ত, ভেজাগায়ে লেগে থাকা জলবিন্দু যেনো। তোমার কালো বুনো-ঝাউঝোপ এর জঙ্গল তীব্র জ্বলেপুড়ে মাঝে মাঝে ভষ্ম হয়ে যাচ্ছে-- কথা টের পাও? হু! উমম...
সেই উমম্ ওমে ভোরের শালবন দেখো রোদের বার্ণিশ ছড়াচ্ছে সারাবেলা। বুঝতে পারো! আমি একা আসিনি জঙ্গলে। হাতের পাঁচ পলাতক সৈনিকেরা আছে, যুদ্ধে ভাঙা অনাহারী তনু, আছে! তুমি কিছু বলো, খুলে দাও ভেতরের লালিমা তোমার... মন আর বন থেকে কথা বলো, কথা বলো রক্তচন্দ্রাঘাত... আহা! কেনো এই গহনবনে শিউলিগন্ধ এমন!
শুনতে পাচ্ছি, পাতাপড়া পৌষের রাত শুনতে পাচ্ছি, হু, হু, হু শুনতে পাচ্ছি ছন্দিত ঘর্ষণ, হু হু রসপাত, উমম রেতঃপাত। আহা! কথাগুলি জড়িয়ে বলোনা, যত সুক্ষ্ম টেলিফোন হোক, সুক্ষ্ম হোক কুসুমের অভ্যন্তরে মধু-র ইঙ্গিত, স্তন নয়-- শীতরাতের সমস্ত কথা, সকল শীৎকার বোঝাতে পারে না...
বোঝাতে পারে না রয়েছি রক্তের নিচে সহসা কুয়াশা ছিঁড়ে...